বিনামূল্যে মিলবে ভ্যাকসিন, জাতির উদ্দেশ্যে বড় ঘোষণা মোদীর

বড়সড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী ২১ জুন থেকে ১৮ ঊর্ধ্ব সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের হাতে থাকা ২৫ শতাংশ দায়িত্বও নেবে কেন্দ্র। আজ সোমবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেই এহেন বড় ঘোষণা করেন তিনি।

ঘোষণা অনুযায়ী ৪৫ ঊর্ধ্বদের মতোই ভ্যাকসিন কিনে রাজ্যকে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। মোট উৎপাদনের ২৫ শতাংশ ভ্যাকসিন কিনতে পারবে বেসরকারি হাসপাতাল।

উল্লেখ্য, ভ্যাকসিন পলিসি নিয়ে আগে থেকেই অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। দেশে টিকাকরণ সঠিক পথে হচ্ছে না বলে বারবার আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা।

সেই টিকাকরণ নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রকে। ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের কেন টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন নিতে হচ্ছে? তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতিরা। একের পর এক তোপের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকে।

এমনকি এই পন্থাকে 'অযৌক্তিক' বলে উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চ টিকাকরণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে উল্লেখ করে বলে, অতিমারির চেহারা পাল্টে যাওয়ায় ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে টিকাকরণের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে।

আদালতের তরফে বলা হয়, ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিয়েছে কেন্দ্র আর ১৮ থেকে ৪৪-এর ক্ষেত্রে টাকা দিতে বলা হয়, কেন্দ্রের এই পলিসি অমূলক।' আর এরপরেই বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন প্রধাণমন্ত্রী।

উল্লেখ্য এদিন করোনাকে আধুনিক বিশ্বের সবথেকে ভয়ঙ্কর মহামারী বলেম ব্যাখ্যা করেন। শুধু তাই নয়, ১০০ বছরে এমন মহামারী হয়নি বলেও দাবি প্রধানমন্ত্রীর। জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, করোনায় অনেকে নিজের পরিজনদের হারিয়েছেন। সেই পরিবারকে সমবেদনা জানাই। তবে ভ্যাকসিন নিয়ে, পথ দেখাচ্ছে ভারত। দাবি প্রধানমন্ত্রীর।

মোদী বলেছেন,'ভ্যাকসিন হল আমাদের সুরক্ষা কবচ। সারা বিশ্বে যতটা পরিমাণ ভ্যাকসিন দরকার, 'তুলনায় অনেক কম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা। আগে বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন বহু সময় লেগে যেত। আগে পোলিও, স্মল পক্স, হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন পেতে বহু দেরী হয়েছে। ভারতে আগে ভ্যাকসিনেশন হত মাত্র ৬০ শতাংশের। ১০০ শতাংশ টিকাকরণে ৪০ বছর লেগে যায়।

তিনি বলেছেন,'মিশন ইন্দ্রধনুষের মাধ্যমে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টিকাকরণ করা যাবে। আমরা মিশন নিয়ে কাজ করেছি। মাত্র ৫-৬ সালে টিকাকরণে ৬০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ করা হয়েছে। শিশু, দরিদ্রদের নিয়ে চিন্তা ছিল, যাঁদের টিকাকরণ হতই না। ঠিক এই সময়েই করোনা মহামারীর আকারে এল।

অন্যদিকে এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সদিচ্ছা সঠিক ছিল, তাই এক বছরের মধ্যে ভারতে দুটি ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে।

যদিও বিশ্বে অন্যান্য দেশের থেকে পিছিয়ে নেই। ভারতে ২৩ কোটির বেশি টিকাকরণ হয়েছে। আমাদের প্রয়াস সফল হয়েছে, কারণ আমাদের বিশ্বাস ছিল। টিকাকরণের জন্য টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে বলও এদিন জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেণ, ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থাকে সবরকম ভাবে সাহায্য করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সবসময় ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে ছিল। ৭টি সংস্থা বিভিন্ন ভ্যাকসিন তৈরি করছে। বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, 'তবে যে ব্যক্তি ফ্রি ভ্যাকসিন নিতে চান না, তাঁদের জন্য আলাদা ভাবনা। ভ্যাকসিনের ২৫ শতাংশ যাতে বেসরকারি হাসপাতাল পেতে পারে, 'সেই ব্যবস্থাও জারি থাকবে।এক ডোজের জন্য সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে বেসরকারি হাসপাতালগুলি।

More CORONAVIRUS News  

Read more about:
English summary
narendra-modi-addresses-nation