ফের একবার বিক্ষোভের মুখে দিলীপ ঘোষ। বিধানসভা ভোটে শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। বাংলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে দিলীপ ঘোষ-শুভেন্দুরা। খাটেনি বিজেপির কোনও স্ট্র্যাটেজি। এই অবস্থায় বিভিন্ন জায়গাতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছড়িয়েছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
উল্লেখ্য, ভোটের প্রার্থী অসন্তোষ নিয়ে বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়ে বিজেপি দফতরে। আর ভোট মিটে যেতেই বিজেপির নেতৃত্বের পরিবর্তন চেয়ে জেলায় জেলায় ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভ বিক্ষোভ। যা টের পাচ্ছে খোদ দিল্লির নেতারাও। জেলায় জেলায় সাংগঠনিক বৈঠক করছেণ দিলীপ ঘোষ।
কেন হার তা বোঝার চেষ্টা করছেন। জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে হারার কারণ বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন দিলীপ ঘোষ। আর তা করতে গিয়ে বারবার ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে পড়তে হচ্ছে দিলীপ ঘোষকে। আসানসোলে আজ সোমবার বৈঠক করতে চান বিজেপি রাজ্য সভাপতি। বৈঠক চলাকালীন একদল বিজেপি কর্মী বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
তাদের দাবি, দিলীপ ঘোষকে তাঁদের কথাও শুনতে হবে। ভোটের কাজ করতে গিয়ে বারবার মার খেতে হয়েছে। কেন তাঁদের কথা শোনা হবে না তা নিয়ে ক্ষোভ ছড়ায়। বাইরে থেকে বিজেপির পার্টি অফিসের শার্টার বন্ধ করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
শেষমেশ দিলীপ ঘোষ বিক্ষোভকারীদের কথা শুনতে চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। অন্যদিকে, হুগলি জেলার সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায়কে পদ থেকে অপসারিত করার দাবিতেই গত কয়েকদিন আগেই বিক্ষোভ দেখান কর্মীরা।
চুঁচুড়ায় দলীয় কার্যালয়ে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে তাঁকে ঘেরাও করেন দলীয় কর্মীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, গৌতম চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর কমিটির জন্যই বিধানসভায় হুগলিতে খারাপ ফল হয়েছে বিজেপির। সেই কমিটিকে অপসারিত করার দাবি জানায় বিজেপি।
এই পরিস্থিতিতে দলীয় কর্মীদের কথা মন দিয়ে শোনেন দিলীপ ঘোষ। প্রত্যেককে আশ্বাস দেন তিনি। সাংগঠনিক পরিবর্তন নিয়ে যে ভাবনা-চিন্তা চলছে সে কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে রাজ্য সভাপতির আশ্বাসে মন গলেনি দলীয় কর্মীদের।
অন্যদিকে সূত্রের খবর অনুযায়ী, এবার সেই সব সাংগঠনিক জেলা সভাপতি -সহ বেশ কিছু পদে পরিবর্তন করতে চলেছে গেরুয়া শিবিরের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক।খারাপ ফলে দায় প্রথমেই গিয়ে পড়েছে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতিদের কাঁধে।
এথনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৩৩ টি সাংগঠনিক সভাপতিদের মধ্যে থেকে ৯ জনকে সরানোর সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সবই রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে।উত্তরবঙ্গের তুলনায় দক্ষিণবঙ্গেই বিজেপির ফল খারাপ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা।
যার জেরে দলের ভিতরেই এই দুই সাংগঠনিক জেলার সভাপতিদের সরানোর দাবি উঠেছে। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছে হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা উত্তর শহরতলী এবং বারাসতের মতো সাংগঠনিক জেলাও।
খারাপ ফলে কারণে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের নিশানায় রয়েছেন জেলার পর্যবেক্ষকরাও। মূলত বিজেপির সাংগঠনিক জেলাগুলিতে আলাদা করে জেলা পর্যবেক্ষকের পদও রয়েছে। ফলে যেসব জেলায় সভাপতিদের সরানো হচ্ছে, সেইসব জেলাগুলিতে জেলার পর্যবেক্ষকদেরও সরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।