ভয়ঙ্কর বর্ষাকালকে চাক্ষুষ করা যাবে এবার
আবহবিদরা মনে করছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে বর্ষাকাল। বেশ কয়েকবছর ধরে যে ধারণা পোষণ করে আসছিলেন আবহবিদরা, তা-ই এবার ঘটতে চলেছে। এবার ভয়ঙ্কর বর্ষাকালকে চাক্ষুষ করা যাবে বলেই মনে করছেন ভূ-বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।
বর্ষাকাল ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে ভারতে
সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণামূলক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এ বছর বর্ষাকাল ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে ভারতে। বিগত ১০ লক্ষ বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের ধারা বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন ভু-বিজ্ঞানীরা। শুধু এ বছর নয়, এখন থেকে আগামী বছরগুলিতে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে বর্ষা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে।
১০ লক্ষ বছরের পুরনো মাটি পরীক্ষার ফল
এই গবেষণা পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতি বছর বর্ষায় বিপুল পরিমাণ পলি নিয়ে বৃষ্টির জল বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরে পড়ে। সাগরের ভূস্তর খনন করে বিজ্ঞানীরা ১০ লক্ষ বছর পর্যন্ত পুরনো মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এই নমুনা থেকে প্রতি বছরের বৃষ্টিপাত সম্পর্কে একটা ধারণায় উপনীত হয়েছে ভূ-বিজ্ঞানীরা।
দক্ষিণ এশিয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে
গবেষণায় যুক্ত ব্রাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তথা ভূ ও পরিবেশবিজ্ঞানী স্টিভেন ক্লেমেন্স জানিয়েছেন, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বহুল মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে। যে বছর বেশি বৃষ্টি হয়, সে বছর সমুদ্রের উপরিভাগে লবণাক্ত কমে আসে। মিষ্টি জলের পরিমাণ বেড়ে যায়। তা মাটি পরীক্ষা করেই জেনেছেন বিজ্ঞানীরা।
ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে, নিম্নচাপ হচ্ছে বেশিমাত্রায়
ভূ-বিজ্ঞানীরা বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য দুর্যোগ ডেকে আনছে আবহাওয়া ও জলবায়ুর এই পরিবর্তন। এমনই নানা কারণে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। নিম্নচাপ হচ্ছে বেশিমাত্রায়। জলবায়ু বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশকে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা দিন দিন বাড়বে বলেই আভাস বিজ্ঞানীদের।
জাহাজ জয়েডস থেকে সমুদ্রতলের মাটি সংগ্রহ বিজ্ঞানীদের
অধ্যাপক স্টিভেন ক্লেমেন্স ও তাঁর সহযোগী গবেষকরা তেলকূপ খননের কাজে ব্যবহৃত জাহাজ জয়েডস ব্যবহার করে সমুদ্রতলের মাটি সংগ্রহ করেছিলেন। ২০১৮ সালের নভেম্বরে ১০০ জন কর্মী ও ৩০ জন বিজ্ঞানীকে নিয়ে এই অভিযান শুরু করেছিল জাহাজটি। সেই থেকে ছ-বছরের বেশি সময় ধরে তথ্যভাণ্ডার সংগ্রহের কাজ চলছে।