দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার পর দুর্যোগ নিয়ে পূর্বাভাস ভূবিজ্ঞানীদের
সম্প্রতি সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণামূলক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতের বর্ষাকাল ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে আগের থেকে। বেশ কয়েকবছর ধরে যে ধারণা পোষণ করে আসছিলেন ভূ-বিজ্ঞানীরা, বিগত ১০ লক্ষ বছরের জলবায়ু পরিবর্তনের ধারা ও সমুদ্রতলের মাটি পরীক্ষা করে সেই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন ভু-বিজ্ঞানীরা।
ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে ভারতে
ভূ-বিজ্ঞানীরা কথায়, ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য খারাপ খবর বয়ে এনেছে এই গবেষণা। ভারতী উপমহাদেশে এখন থেকে দুর্যোগের পরিমাণ বাড়বে। আবহাওয়া ও জলবায়ুর এই পরিবর্তনের ফলে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। নিম্নচাপ হচ্ছে বেশিমাত্রায়। সেইসঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও দিন দিন বাড়বে বলেই আভাস ভূবিজ্ঞানীদের।
১০০ জন কর্মী ও ৩০ জন বিজ্ঞানীকে নিয়ে অভিযানের পর
কিন্তু কেন এমন কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা? অধ্যাপক স্টিভেন ক্লেমেন্স ও তাঁর সহযোগী গবেষকরা তেলকূপ খননের কাজে ব্যবহৃত জাহাজ জয়েডস ব্যবহার করে সমুদ্রতলের মাটি সংগ্রহ করেছিলেন ২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে। ১০০ জন কর্মী ও ৩০ জন বিজ্ঞানীকে নিয়ে এই অভিযান শুরু করে জাহাজটি। ছ-বছরের বেশি সময় ধরে যে তথ্যভাণ্ডার সংগ্রহ হয়েছে, তা থেকেই গবেষণালব্ধ ফল এটি।
১০ লক্ষ বছরের পুরনো মাটি পরীক্ষার পর দুর্যোগের পূর্বাভাস
এই গবেষণা পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতি বছর বর্ষায় বিপুল পরিমাণ পলি নিয়ে বৃষ্টির জল পড়ে বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরে। সাগরের ভূস্তর খনন করে বিজ্ঞানীরা ১০ লক্ষ বছর পর্যন্ত পুরনো মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। সেই নমুনা থেকে প্রতি বছরের বৃষ্টিপাত সম্পর্কে একটা ধারণায় উপনীত হয়েছে ভূ-বিজ্ঞানীরা। জলবায়ু পরিবর্তনের আভাসও পেয়েছেন।
আগামী বছরগুলিতে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে বর্ষা ভয়ঙ্কর
গবেষণায় যুক্ত ব্রাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তথা ভূ ও পরিবেশবিজ্ঞানী স্টিভেন ক্লেমেন্স জানিয়েছেন, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বহুল মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে। মাটি পরীক্ষা করেই তা জেনেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, শুধু এ বছর নয়, এখন থেকে আগামী বছরগুলিতে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে বর্ষা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে।