ফারাকের উল্লেখ নেই
ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতির বৈঠকের পর মঙ্গলবারই শ্রী সিমেন্টকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের তরফে। যদিও শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, টার্ম শিট ও চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে যে ফারাক রয়েছে বলে বারবার মুখে ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারা দাবি করলেও তা চিহ্নিত করে চিঠি পাঠানো হয়নি। শ্রী সিমেন্টের কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর আগেই জানিয়েছেন, ক্লাবের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খোলা। তবে সেই আলোচনা হবে ইস্টবেঙ্গল চুক্তিপত্রে সই করলেই।
তিক্ততা বাড়ছে
এরই মধ্যে ৯ জুন থেকে ভারতীয় ফুটবলারদের ট্রান্সফার উইন্ডো খুলে যাচ্ছে। ১২ জুন থেকে ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের ব্যাপারে এআইএফএফ ওয়ার্কশপ শুরু করছে। তবে তাতে এসসি ইস্টবেঙ্গল এখনই অংশ নিতে পারছে না ক্লাব ও লগ্নিকারীদের মধ্যে সংঘাত সপ্তমে থাকায়। স্পোর্টিং রাইটস ছাড়তেও রাজি নয় শ্রী সিমেন্ট। এমনকী এমন খবরও আসছে যে, চুক্তি ছিন্ন হলে ইস্টবেঙ্গলের ঘাড়ে ২২ কোটি টাকার আর্থিক বোঝা চাপানোর ভাবনা ছিল শ্রী সিমেন্টের। কিন্তু সম্প্রতি যে তিক্ততার পর্যায়ে গিয়েছে সম্পর্ক তাতে প্রথম বছরে টার্মশিটের ভিত্তিতে যে ৫০ কোটি টাকা শ্রী সিমেন্ট দলের পিছনে খরচ করেছে সেটাও চাওয়া হতে পারে।
নীরব নবান্ন
কোয়েস সরে দাঁড়ানোর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এবং নীতা আম্বানিদের সহযোগিতায় শ্রী সিমেন্টকে ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টর হিসেবে আনা হয়েছিল। গত বছর সেপ্টেম্বরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই মউ বা টার্ম শিট স্বাক্ষর হয়েছিল। শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন গড়ে এসসি ইস্টবেঙ্গল নামে আইএসএল খেলার সুযোগ আসে একেবারে শেষ লগ্নে। এতে মালিকানার ৭৬ শতাংশ ছিল শ্রী সিমেন্টের। ক্লাবের সম্পত্তির উপরও নিয়ন্ত্রণ থাকার কথা লগ্নিকারীর। যদিও তা হয়নি। অনেক সম্পত্তিই হস্তান্তর করা হয়নি বলে অভিযোগ। তা নিয়েই সংঘাত। লাল হলুদ কর্মকর্তাদের দাবি, চুক্তিপত্রে সই করলে ক্লাব বিক্রি হয়ে যাবে। যদিও তেমন সম্ভাবনা নেই বলে পাল্টা দাবিও উঠে আসছে। অভিযোগ, নিজেদের দাপট খর্ব হবে বলেই শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না ক্লাবকর্তারা। তবে সূত্রের খবর, ফের লগ্নিকারীদের সঙ্গে লাল হলুদের যে সংঘাত শুরু হয়েছে তাতে বিরক্ত নবান্ন। এমনকী এখনও অবধি সংঘাত মিটিয়ে মধুরেণ সমাপয়েৎ-এর কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।
অনিশ্চয়তায় ফুটবলাররা
৯ জুন থেকে ভারতীয় ফুটবলারদের ট্রান্সফার উইন্ডো খুলে যাচ্ছে। এসসি ইস্টবেঙ্গলের বেশিরভাগ ফুটবলারই চুক্তি শেষে এখন ফ্রি। এটিকে মোহনবাগান অমরিন্দর সিংয়ের মতো ফুটবলারদের তুলে নিয়ে ঘর গোছাতে শুরু করেছে। বসে নেই বাকি দলগুলিও। মহম্মদ রফিক, ওয়াহেংবাম, বলবন্ত সিং, লোকেন মিতেই, বিকাশ জাইরু, অনিল চ্যবন, গিরিক খোসলা, নবীন গুরুং, প্রীতম সিংদের সঙ্গে এসসি ইস্টবেঙ্গলের এখনও চুক্তি রয়েছে। এসসি ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে শেষ অবধি না খেলতে পারলে বিকল্প ভাবনাও তৈরি রাখছেন আইএসএল আয়োজকরা।
চাপ বাড়ছে
করোনা পরিস্থিতিতে আই লিগে কোনও দলের অবনমন না হওয়ায় ইস্টবেঙ্গল যে আইএসএল না খেলে আই লিগ খেলতে পারবে তেমন নিশ্চয়তাও নেই। এআইএফএফ, এফএসডিএলের কাছেও বিষয়টি পরিষ্কার নয় এখনও যে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াচ্ছে। জোর করে চুক্তিপত্রে সই করতে বাধ্য করা হলে কর্মসমিতির সদস্যরা গণপদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ায় সমর্থকরা লগ্নিকারীদের পক্ষ নিয়েই কর্মসমিতির পদত্যাগ চাইছেন। এমনকী পদত্যাগপত্র কেমন হবে তা-ও ছাপিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সবমিলিয়ে সঙ্কট বাড়ছেই ইস্টবেঙ্গলকে নিয়ে।