মুকুলকে পিএসি চেয়ারম্যান করা নিয়ে আপত্তি দিলীপ-ঘনিষ্ঠদের
মুকুল রায় ও দিলীপের ঘোষের ঠান্ডা লড়াই বিজেপিতে প্রথম থেকেই রয়েছে। তবু দলের স্বার্থে এতদিন তাঁরা চুপচাপ ছিলেন। কিন্তু একুশের ভোট-যুদ্ধ হেরে যাওয়ার পর তাঁদের ঠান্ডা লড়াই প্রকাশ্যে চলে এল। বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে মুকুল রায়কে বসানো নিয়ে জোর আপত্তি তুললেন দিলীপ-ঘনিষ্ঠ নেতারা।
বাংলার মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে মুকুলের পদপ্রাপ্তিতে?
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যখন চাইছেন মুকুল রায়ের মতো অভিজ্ঞ নেতার হাতে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির ভার ন্যস্ত করতে, তখন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব তার বিরোধিতা করছে। দিলীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ নেতারা একেবারেই চাইছেন না মুকুল রায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হোন। তা হলে দলের কাছে এবং বাংলার মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে বলে তাঁদের অভিমত।
শুভেন্দুর পর মুকুল, বিজেপির আদি নেতারা কি যোগ্য নন
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বঙ্গ বিজেপি সুপারিশ করেছে, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর বিধানসভায় বিরোধী দলের কাছে সবথেকে বড় পদ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান যদি মুকুল রায়কে করা হয়, তাহলে দলের কাছে ভুল বার্তা যাবে। দুজনেই হবেন তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতা, বিজেপির আদি নেতারা কি যোগ্য নন, সেই প্রশ্ন উঠবে।
মুকুল রায়ের নাম সারদা ও নারদ মামলায়, যদি গ্রেফতার হন!
মুকুল রায়কে ওই পদ প্রাপ্তি থেকে দূরে রাখতে দিলীপ ঘনিষ্ঠ নেতৃত্বের আরও যুক্তি, মুকুল রায়ের নাম জড়িয়েছে সারদা ও নারদ মামলায়। এখন যদি মুকুল রায় গ্রেফতার হন, তখন কী হবে? তারপর মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। বাংলার মানুষ ভাববে বিজেপিও দুর্নীতির সঙ্গে আপোশ করছে!
তৃণমূলের সঙ্গে রায় পরিবারের যোগাযোগ ভালোভাবে নিচ্ছে না বিজেপি
আর তৃণমূলের সঙ্গে রায় পরিবারের যোগাযোগ ভালোভাবে নিচ্ছে না বিজেপি। সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি মুকুল-জায়া কৃষ্ণা রায়কে দেখতে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে কথাও হয় মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুর। শুভ্রাংশু অভিভূত হন অভিষেক তাঁর মাকে দেখতে আসায়। এরপর দিলীপ ঘোষও দেখতে যান। কিন্তু তখন মুকুল বা শুভ্রাংশু কেউ ছিলেন না। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
মুকুল-দিলীপ কাজিয়ার প্রভাব পড়ছে পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটিতে!
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মুকুল রায়ের সঙ্গে তৃণমূলের সাম্প্রতিকর যোগাযোগের প্রভাব পড়তে চলেছে পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটিতে। দিলীপ ঘোষের হাসপাতালে তাঁর স্ত্রীকে দেখতে আসা নিয়ে মুকুল রায় তির্যক মন্তব্য করেন। তাঁকে বা শুভ্রাংশুকে না জানিয়েই আসেন দিলীপ ঘোষ। তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। এরপর মুকুল রায়ের স্ত্রীকে দেখতে যাওয়া নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, হাসপাতালে কাউকে দেখতে গেলে জানিয়ে যেতে হয় নাকি!
মুকুলকে রুখতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সুপারিশ দিলীপ-গোষ্ঠীর
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব মুকুল রায়কে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গ বিজেপির আপত্তিতে তা আপাতত কেঁচে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চেয়েছিল এমন একজনকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করতে, যাঁর সঙ্গে শাসক-বিরোধী দুই দলের নেতাদের সঙ্গেই ভালো যোগাযোগ রয়েছে। সেই হিসেবেই মুকুল রায়কে বেছে নিয়েছিল তারা। কিন্তু ঘোর আপত্তি বঙ্গ বিজেপির।