ফের নারদ লড়াই কলকাতা হাইকোর্টে। ইতিমধ্যে নারদ-কাণ্ডে জামিন পেয়েছেন ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং মদণ মিত্র।
জামিন পেলেও মামলার শুনানি চলবে বলে আগেই জানিয়ে ছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
সেই মতো ফের শুনানি শুরু আদালতে।
শুরু থেকে একাধিক বিষয়ে আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। সিবাআই এবং অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল জবাব চলে। দীর্ঘ শুনানিতে একাধিক বিষয়কে সামনে আনেন বিচারপতিরা।
আজ মঙ্গলবার শুনানি শেষ হয়ে গেলেও বুধবার ফের মামলার শুনানি।
শুনানিতে একাধিক বিষয়কে সামনে আনেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। মেহতা বলেছেন, ''ওই দিনের (১৭ মে) ঘটনা আমাদের গণতন্ত্রের উপর আঘাত হানে। একাধিক মন্ত্রী আদালত ঘেরাও করে। তাঁদের উপস্থিতিতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।''
বৃহত্তর বেঞ্চে তিনি বলেন, ''ওই ঘটনা ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে আঘাত হানতে পারে।'' একই সঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী এদিন আরও জানানো যে বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি জামিনের বিরোধিতা করছি না। তবে বিচার ব্যবস্থায় যে প্রভাব পড়েছে, জামিনের প্রমাণ পাশাপাশি রাখলে তা বোঝা যাবে। জামিনকে পাশে সরিয়ে রেখে দেখুন জামিন দেওয়ার মূলে কোনও প্রভাব তৈরি করা হয়েছিল কি না।
অন্যদিকে, কলকাতা হাই কোর্টের পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ মেহতাকে বলেন, ''আমরা আপনার কোনও আবেদন পাইনি।'' সে সময় মেহতার উদ্দেশে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেণ, ''দয়া করে আপনি যদি এখন সেই আবেদনের কপি দেখান ভাল হয়।''
মূলত ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন নিয়ে এভাবে শুনানি হয়। শুনানিতে ফের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জিজ্ঞাসা করেন ''আপনি বলুন অভিযুক্তদের ঠিক কখন, কোথা থেকে, কোন পরিস্থিতিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ঘটনার হুবহু বর্ণনা দিন। এটা আমাদের জানা জরুরি। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।''
আর এরপরেই বিস্তারিত ১৭ মে'র ঘটনা তুলে ধরেন। শুনানিতে চার্জশিট কি ভার্চুয়ালি জমা দিয়েছিলেন বিশেষ আদালতে?'', সিবিআইয়ের আইনজীবীকে প্রশ্ন বিচারপতি সৌমেন সেনের।
জবাবে মেহতা বলেন, ''সিবিআই অফিসারদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। তাই তাঁরা ওই দিন সন্ধ্যায় সশরীরে জমা দিয়ে আসে।'' মেহতা আরও বলেন, ''ওই দিন সিবিআই অফিস এবং আদালতের বাইরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।
তা শুধু তদন্তকারী সংস্থাকে প্রভাবিত করেনি। বরং বিচার প্রক্রিয়ার উপরও প্রভাব ফেলেছিল।'' তবে এদিন শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সামনে আনেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেণ, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি কিন্তু এই প্রথম নয়। এবং বিচ্ছিন্ন নয়।
ওজনদার নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হলেই পশ্চিমবঙ্গে এ রকম পরিবেশ তৈরি করা হয়। এটাকে 'টেমপ্লেট আচরণ' বলা যায়। এর পর মেহতা বলেন, ''আমি আপনাদের কাছে জানতে চাইছি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিবিআই কোনও তদন্ত করলে সেটার বিচার প্রক্রিয়া কী হওয়া উচিত।
এই বিষয়টি আদালতের নজরে আনা উচিত।'' এদিন শুনানিতে রাজীব কুমারের বিষয়টি তুলে ধরে সিবিআই। কীভাবে সেই সময় ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই বিষয়টিকে তুলে ধরা হয় শুনানিতে। এদিন শুনানিতে তুষার মেহতা তাঁর সওয়ালে বলেন, 'গ্রেফতারির পর যা হয়েছে, দেশ তো বটেই বিশ্বের ইতিহাসে হয়েছে কিনা সন্দেহ। ক্যাবিনেটের সদস্যরা গিয়ে ধর্না দিচ্ছেন, বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
এটা অত্যন্ত লজ্জার ও দুর্ভাগ্যজনক। পরিকল্পিত, সংগঠিত ভাবে লোক এনে সিবিআই অফিস ঘেরাও, পাথর ছোড়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ও অন্য মন্ত্রীরা ধর্না দিয়েছেন।' এমন একাধিক বিষয় এদিন শুনানিতে তুলে ধরেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।