গত দুই বছর ধরে অপেক্ষায় ছিল জাপানের কামো। কিন্তু সব হিসেব লন্ডভন্ড করে দিল করোনা ভাইরাস। রাশিয়ান জিমন্যাস্টদের অনুশীলন কাছ থেকে দেখার সুযোগ পুরোপুরিই হারাল জাপানের ওই ছোট শহর। মানসিক হতাশার দোসর বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি। স্বভাবতই প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
২০২০ সালের ২৪ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল টোকিও অলিম্পিক্স। সে উপলক্ষ্যে ২০১৯ সাল থেকেই কামোতে শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। ঠিক হয়েছিল ৪২ জন রাশিয়ান জিমন্যাস্ট ও তাঁদের কোচ অনুশীলন করবেন জাপানের এই ক্ষুদ্র শহরে। সেই মতো ঢেলে পরিকাঠামো সাজিয়েছিল প্রশাসন। ৬ লক্ষ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করে হরিজন্টাল বার, জিমন্যাস্টিক ম্যাটস তৈরি করার পাশাপাশি অনুশীলন সংক্রান্ত অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছিল।
করোনা ভাইরাসের জেরে এক বছরের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল টোকিও অলিম্পিক্স। ফলে রাশিয়ায় আন্তর্জাতিক স্তরের জিমন্যাস্টদের মুখোমুখি হতে ২৫ হাজার জনসংখ্যা বিশিষ্ট কামো শহরের অপেক্ষা সুদীর্ঘ হয়েছিল। তবে আশায় ছিলেন সে শহরের মানুষ। সেই সম্বলটুকুও শেষ করে দিল করোনা ভাইরাস। সম্প্রতি অতিমারী পরিস্থিতি গম্ভীর হওয়ায় টোকিও সহ জাপানের বিভিন্ন শহরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তা জানার পরেই কামোতে অনুশীলনে আসার পরিকল্পনা বাতিল করে দিয়েছেন রাশিয়ান জিমন্যাস্ট ও তাঁদের কোচরা।
এই খবর জানার পরেই মন ভেঙে কামো শহরের বাসিন্দাদের। বিশেষ করে এলাকার কচিকাচারা, যারা ভবিষ্যতে জিমন্যাস্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখে, তারা যারপরনাই হতাশ। রাশিয়ার আন্তর্জাতিক স্তরের জিমন্যাস্টদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় মন ভেঙে গিয়েছে বড়দেরও। দোসর হিসেবে যে মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখ দেখতে হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনকে, তা বেশ পীড়াদায়ক বলে জানানো হয়েছে।
আগামী ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা টোকিও অলিম্পিক্স। প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় এবং চতুর্থ ঢেউ জাপানে যেভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে, তাতে সেখানে গেমস আয়োজন করা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নাগরিকরা। অলিম্পিক্স বন্ধের দাবি নিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন ডাক্তাররাও। করোনার আবহে গেমস আয়োজনের বিপক্ষে মত দিয়েছেন বিনিয়োগকারী সংস্থা। তা সত্ত্বেও নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে জাপান সরকার ও ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি। বক্তব্য, অলিম্পিক্স বাতিল হলে যে আর্থিক ক্ষতি হবে, তা অতিমারী পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড়সড় প্রভাব ফেলবে।