শ্রী সিমেন্টের পাঠানো চুক্তিপত্রে সই না করার সিদ্ধান্ত নিল ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতি। এমনকী চুক্তিপত্রে সই করাতে বাধ্য করা হলে কর্মসমিতির সদস্যরা গণপদত্যাগের পথে হাঁটবেন বলে জানিয়ে দিলেন ক্লাবের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার।
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শ্রী সিমেন্টের দ্বারা পরিচালিত এসসি ইস্টবেঙ্গলের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে জানানো হলো, পরবর্তী নোটিস না দেওয়া অবধি সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও কিছুই পোস্ট করা হবে না। সবমিলিয়ে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্টের চুক্তিপত্রে সই করা নিয়ে সংঘাত চরমে উঠতেই সঙ্কট বাড়ল লাল হলুদে। অনিশ্চিত হয়ে পড়ল আইএসএলে খেলার ভবিষ্যৎ।
টার্মশিট-সহ যে চুক্তিপত্র ইস্টবেঙ্গলের কাছে শ্রী সিমেন্ট পাঠিয়েছিল তাতে সই করার সময়সীমা শেষ হয়েছে গতকালই। এই বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের চিঠিচাপাটি থেকে শুরু করে বাকযুদ্ধ বেশ কয়েক মাস ধরেই চলছে। দেবব্রত (নীতু) সরকারের নেতৃত্বাধীন ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতির দাবি, টার্মশিট ও চূড়ান্ত চুক্তিপত্রের (binding agreement)মধ্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলি না মেটানো হলে এতে সই না করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্মসমিতির সদস্যরা। ফুটবল সচিব সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, সই করতে বাধ্য করানো হলে ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতির সদস্যরা গণপদত্যাগের জন্যও প্রস্তুত। ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদারও কর্মসমিতির সিদ্ধান্তে সহমত পোষণ করেছেন এবং সিদ্ধান্তের কথা ক্লাব সভাপতি ডা. প্রণব দাশগুপ্তকে জানিয়ে দিয়েছেন। উল্লেখ্য, প্রণব দাশগুপ্ত নিজে শ্রী সিমেন্টের কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুরের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দেখা করার সময় চেয়েছিলেন। সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সভাপতি তাঁর মতো চেষ্টা করছেন অচলাবস্থা কাটানোর জন্য। তবে তিনিও কর্মসমিতির সিদ্ধান্তকে সমর্থনই করছেন।
গত বছর সেপ্টেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ও এফএসডিএলের সহযোগিতায় শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আইএসএল খেলার ছাড়পত্র পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। যদিও সাফল্য পায়নি এসসি ইস্টবেঙ্গলের। ক্লাবের ৭৬ শতাংশ মালিকানার পাশাপাশি নবগঠিত কনসর্টিয়ামকে ক্লাবের স্পোর্টিং রাইটস, সম্পত্তি হস্তান্তরের উল্লেখ ছিল টার্মশিটে। যদিও সেই হস্তান্তর নিয়েই দুই পক্ষের চাপানউতোর শুরু হয়। তবে ইস্টবেঙ্গলের বেশিরভাগ সমর্থকই লাল হলুদ কর্তাদের পদক্ষেপে তিতিবিরক্ত। কেন না, আইএসএলে না খেললেও আই লিগে ইস্টবেঙ্গলের খেলারও নিশ্চয়তা নেই এই মুহূর্তে। কেন না, করোনা পরিস্থিতিতে আই লিগে অবনমন হয়নি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এটিকে মোহনবাগান যখন আগামী মরশুমের ঘর গোছানোর কাজ অনেকটাই সেরে ফেলেছে, লাল হলুদে তখন শুধুই অন্ধকার।