নগ্ন হয়ে মেঝেতে শুয়ে করোনা রোগী, ওড়িশা হাসপাতালের ভিডিও ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়

করোনা কালে দেশজুড়ে বিভিন্ন ধরনের চিত্র এখন নজরে আসছে। কোনটা মানবিক আবার কোনটা অমানবিক। তবে বেশিরভাগ ঘটনাই অমানবিকতার নজির সৃষ্টি করছে দেশে। যেমনটা দেখা গেল ওড়িশায়। এ রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত ময়ূরভঞ্জ জেলার এক কোভিড–১৯ হাসপাতালের কিছু ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। যেখানে এক কোভিড–১৯ রোগীকে শৌচালয়ের কাছে হাত ধোওয়ার বেসিনের নীচে এবং এক করোনায় আক্রান্ত মহিলাকে মেঝেতে নগ্ন অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হতেই উচ্চ–পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। বারিপদের জেলা সদরের কাছে বাঁকিসোলে অবস্থিত এই কোভিড–১৯ হাসপাতালটি। গত ২৩ মে এই হাসপাতালে মৃত্যু হয় এক কোভিড রোগীর তারই পরিবারের সদস্য এই ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেন।

Covid 19 Update : দক্ষিণ ২৪ পরগনা : গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ৮৭০

কমছে অক্সিজেনে সঙ্কট, নির্দিষ্ট শিল্পক্ষেত্রে সাময়িক ভাবে অক্সিজেন সরবরাহের অনুমতি কেন্দ্রের কমছে অক্সিজেনে সঙ্কট, নির্দিষ্ট শিল্পক্ষেত্রে সাময়িক ভাবে অক্সিজেন সরবরাহের অনুমতি কেন্দ্রের

ভিডিও ক্লিপ ভাইরাস সোশ্যাল মিডিয়ায়

ময়ূরভঞ্জের বারিপদ শহরের বাসিন্দা বিভূদত্ত দাস জানিয়েছেন যে তিনি তাঁর আত্মীয়কে গত ২২ মে বারিপদের এই কোভিড-১৯ হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। দাস বলেন, ‘‌তাঁর অবস্থার অবনতি দেখে তাঁকে বাঁকিশোলের কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যা বারিপদ থেকে ১০ কিমি দূরে। ২৩ মে দুপুরে, আমাকে আমার আত্মীয়ের মৃত্যুর বিষয়ে অবহিত করা হয়।'‌ দাসের হাতে শনিবার হাসপাতালের এই ভিডিও ক্লিপটি আসে।

শৌচালয়ের সামনে ঘুমোচ্ছেন করোনা রোগী

দাস বলেন, ‘‌ভিডিওতে আমি আমার আত্মীয়কে চাদর ও বালিশ ছাড়া খালি বেডে বসে থাকতে দেখি। তাঁর পরনে শুধু তোওয়ালে ছিল। অনেক রোগীকে শৌচালয়ের সামনে ঘুমোতে দেখা যায়। ওয়ার্ডে কিছু অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। কিন্তু সেগুলিকে কেউ পরিচালনা করছেন না। রোগীদের দেখভাল করার জন্য কোনও চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী কেউ নেই। সরকার করোনা ভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করছে, কিন্তু সেই অর্থ কোথায় গেল এবং কার কাছে গেল।'‌

এই ঘটনার নিন্দায় বিজেপি

বাঁকিসোলের কোভিড হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন বারিপদর বিজেপি বিধায়ক প্রকাশ সোরেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‌অক্সিজেন সাপোর্টের অভাবে বহু রোগী করোনা হাসপাতালে মারা যাচ্ছেন। রোগীরা কি চাইছেন তা চিকিৎসকরা বুঝে উঠতে পারছেন না এবং সংক্রমণের ভয়ে রোগীদের কাছে যাচ্ছেন না নার্সরা। এমনকী পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছে যে রোগীরা সময়মতো খাবারও পাচ্ছেন না।'‌ ময়ূরভঞ্জের জেলা কালেক্টর বিনীত ভরদ্বাজ জানিয়েছেন যে হাসপাতালের কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখতে সিসিটিভি বসানো হবে এবং এই শূণ্যস্থান পূরণ করা হবে।

মার্চ মাসে বন্ধ হয়ে যা হাসপাতাল

গত বছর ময়ূরভঞ্জ প্রশাসনের সঙ্গে কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যা সায়েন্সের মউ চুক্তি সাক্ষরিত হওয়ার পর এই হাসপাতালটি গঠিত হয়। ওই জেলায় করোনা কেস বৃদ্ধির কারণে মার্চ মাসে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখানে উল্লেখ্য, এই মাসে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মেডিক্যাল কর্মীদের অবহেলার কারণে ধেনকানালের জেলা সদর হাসপাতালের বারান্দায় কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়ার পর ৩০ জুন ওড়িশার স্বাস্থ্য সচিবকে তলব করেছে। গত ১ এপ্রিল থেকে এ রাজ্যে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৮৩০ জন রোগীর।

More ODISHA News  

Read more about:
English summary
covid 19 patients lying naked on hospital floor in odisha probe ordered