বামদেরে বেশিরভাগ ভোট তৃণমূলে
সিপিআইএম-এর তরফে বলা হয়েছে, ২০১৬-তে বামেরা যে ৩২ টি আসন পেয়েছিল, তার ২৩ টি পেয়েছে তৃণমূল আর ৯ টি বিজেপি। কংগ্রেসের ক্ষেত্রেই তাই। তাদের ৪৪ টি আসনের মধ্যে ২৯ টি পেয়েছে তৃণমূল আর ১৫ টি পেয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের সাফল্য এসেছে বামজোটের জেতা ৫২ টি আসনে জয়লাভ করায়।
জেতা আসন ধরে রাখতে পেরেছে তৃণমূল
বিজেপি যে ৭৭ টি আসন পেয়েছে, তার ৪৭ টি আগেরবার পেয়েছিল তৃণমূল। গতবারের জেতা ২০৯ টি আসনের মধ্যে ১৬০ টি তৃণমূল ধরে রাখতে পেরেছে। সিপিআইএম-এর তরফে ২০১৯-এর তুলনায় ৯৪ টি আসনে ভোট বৃদ্ধির পরিসংখ্যানও দেওয়া হয়েছে।
বোঝা যায়নি মানুষের মন
নির্বাচন ঘোষণার সময়ে রাজ্যে তৃণমূল বিরোধী অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান বিরোধী মানসিকতা ছিল সাধারণের মধ্যে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে সিপিএম-এর তরফে। কিন্তু বিজেপির আগ্রাসী প্রচারে সাধারণের মধ্যে ক্রমেই বিজেপি-বিরোধী মানসিকতা গড়ে ওঠে।
জনগণ তৃণমূলকেই বিজেপি বিরোধী বলে মনে করেছে
সিপিএম-এর তরফে বলা হয়েছে, বিজেপির আগ্রাসী আস্ফালনের জেরে তৃণমূলের ভোট লুঠ, দুর্নীতি, নৈরাজ্য, গণতন্ত্রহীনতা মানুষের মধ্যে নির্বাচনী বিষয় হয়ে উঠতে পারেনি। জনগণ তৃণমূলকেই বিজেপি বিরোধী প্রধান শক্তি হিসেবে বেছে নিয়েছে।
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধাতেও ভোট তৃণমূলমুখী
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পকে জনগণের সমর্থন পাওয়ার জন্য তৃণমূল ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে বলেও স্বীকার করে নিয়েছে সিপিআইএম। প্রসঙ্গত ডিসেম্বর ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে দুয়ারে সরকার প্রকল্প চালু করেছিল দ্বিতীয় তৃণমূল সরকার। অনেক অভিজ্ঞ ভোট বিশ্লেষক মনে করে, তৃণমূলের সেই অবস্থান প্রতিষ্ঠান বিরোধী সেই হাওয়া ঘোরাতে অনেকটাই সক্ষম হয়েছিল।
তীব্র মেরুকরণে ভোট
তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তীব্র মেরুকরণও ভোটে হারের অন্যতম কারণ। মেরুকরণের সামনে নীতি, আদর্শ, গণতন্ত্র, রুটিরুজির মতো বিষয়গুলি হার মেনেছে। যে পরিচিতিসত্তার রাজনীতি বিজেপি ও তৃণমূল করেছিল তার মোকাবিলা বামজোট করতে পারেনি। বিজেপির আগ্রাসী প্রচারে বাংলা ও বাঙালির স্বতন্ত্রবোধও উপাদান হিসেবে কাজ করেছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে পর্যালোচনা রিপোর্টে।
জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ সংযুক্ত মোর্চা
সংযুক্ত মোর্চা গড়ে তোলা হলেও, সেই সম্পর্কে জনগণের মধ্যে আস্থা গড়ে তোলা যায়নি। তাদের রাজনৈতিক প্রচার জনগণের মধ্যে দাগ কাটতে পারেনি। বিকল্প সরকার গঠনের স্লোগান প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণ। রাজনৈতিক বক্তব্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় ত্রুটির কথাও বলা হয়েছে।
বামশক্তি জনবিচ্ছিন্ন
প্রাথমিক পর্যালোচনায় সিপিআইএম জানিয়েছে বামফ্রন্টের বিপর্যয়ের মূল কারণ রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক। নিজেদের দলের বাইরে বড় জনসমষ্টির সঙ্গে বামশক্তির বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে বলেও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে শাখা ও জেলা কমিটিগুলিকে নতুন করে উদ্বুগ্ধ করার পাশাপাশি গণসংগঠনগুলিকেও নতুন উদ্যোমে পরিচালিক করার কথা বলা হয়েছে।