অ্যাস্পারগিলাস আসলে কি
অ্যাস্পারগিলাসের কারণে এই অ্যাস্পারগিলাস সংক্রমণ হয়, এটি অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া বা ঘরের এবং বাইরে বাস করে এমন একটি সাধারণ ছাঁচের ছত্রাকের বৃদ্ধি দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমণ। এই ফাঙ্গাস মরা পাতা ও পচে যাওয়া সবজির মধ্যে সাধারণত পাওয়া যায় এবং আমাদের মধ্যে অধিকাংশই কোনও অসুস্থতা ছাড়াই অ্যাস্পারগিলাসের মধ্যেই শ্বাস-প্রশ্বাস নিই। তবে যাঁদের দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ফুসফুসের রোগ রয়েছে, উভয় দেখা যায় কোভিড-১৯ রোগীর মধ্যে, তাঁদের এই সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে।
অ্যাস্পারগিলাস কি সংক্রমক? এটার ধরন কেমন?
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)-এর মতে বিভিন্ন ধরনের অ্যাস্পারগিলাস দেখা যায়। কিছু সংক্রমণ হাল্কা, কিন্তু কিছু আবার বেশ গুরুতর। তবে এই সংক্রমণ ফুসফুসের মাধ্যমে দু'জন মানুষের মধ্যে বা মানুষ ও পশুর মধ্যে ছড়াতে পারে না।
অ্যালার্জিক ব্রোনকোপুলমোনারি অ্যাস্পারগিলাস (এবিপিএ)
এটা যখন হয় তখন অ্যাস্পারগিলাস ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং অ্যালার্জির লক্ষণগুলি যেমন কাশি এবং ঘা হয়ে যাওয়া দেখা যায়, তবে সংক্রমণ ঘটায় না।
অ্যালার্জিক অ্যাস্পারগিলাস সাইনাস
এটা যখন হয় তখন অ্যাস্পাগিলাসিসের কারণে সাইনাসে প্রদাহ হয় এবং সাইনাস সংক্রমণের লক্ষণ (অসাড়, মাথা ব্যাথা) দেখা দেয় তবে তা সংক্রমিত নয়।
অ্যাজোল–রেজিজস্ট্যান্ট অ্যাস্পারগিলাসিস ফিউমিগেটাস
এটা তখন ঘটে যখন একটি প্রজাতির অষাস্পারগিলাসিস এ ফিউমিগেটাস এর চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত নির্দিষ্ট ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়ে ওঠা। প্রতিরোধী সংক্রমণের রোগীরা চিকৎসায় সুস্থ নাও হতে পারে।
অ্যাস্পারগিলোমা
ফুসফুস বা সাইনাসে যখন অ্যাস্পারগিলাসের বল বৃদ্ধি পায়, তবে তা দেহের অন্য অংশে সাধারণত ছড়িয়ে পড়ে না। এটাকে অনেকে ফাঙ্গাস বলও বলে।
ক্রনিক পালমোনারি অ্যাস্পারগিলাস
ফুসফুসে ক্যাভিটি হয়ে যাওয়ার ফলে অ্যাস্পারগিলাস হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী থাকে (তিন মাস বা তার বেশি)। এক বা একের অধিক ফাঙ্গাল বল ফুসফুসে দেখা দিতে পারে।
ইনভেসিস অ্যাস্পারগিলাস
অ্যাস্পারগিলায় যখন গুরুতর সংক্রমণে পরিণত হয় তখন এটা হয় এবং সাধারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাঁদের দুর্বল তাঁরাই আক্রান্ত হন।
কিউটেনিয়াস (ত্বক) অ্যাস্পারগিলাস: এটা ঘটে যখন অ্যাস্পারগিলাস ত্বকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে (উদাহরণস্বরূপ, শল্য চিকিত্সা বা জ্বলনের ক্ষতের মাধ্যমে) এবং সংক্রমণ ঘটায়, সাধারণত যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটা ঝুঁকিপূর্ণ। আক্রমণাত্মক অ্যাস্পারগিলাসিস শরীরের অন্য কোথাও যেমন ফুসফুস থেকে ত্বকে ছড়িয়ে পড়ে তবে কিউটেনিয়াস অ্যাস্পারগিলাসিসও হতে পারে।
কাদের ঝুঁকি বেশি
মার্কিন স্বাস্থ্য কমিটির মতে বিভিন্ন ধরনের অ্যাস্পারগিলাসিস ভিন্ন ধরনের মানুষকে প্রভাবিত করে।
*এবিপিএতে আক্রান্ত হন যাঁদের অধিকাংশের হাঁপানি রোগ রয়েছে।
*অ্যাস্পারগিসলোমাসে আক্রান্ত হন তাঁরা যাঁদের টিবি বা ফুসফুসের সংক্রমণ আছে।
*ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত, টিবি থাকলে ক্রনিক পালমোনারি অ্যাস্পারগিলাসে আক্রান্ত হবেন তাঁরা।
উপসর্গ কি
হাঁপানির মতোই কিছু কিছু উপসর্গ থাকে, এছাড়াও জ্বর, সর্দি-কাশিও দেখা দেয়। এর সঙ্গে নাক থেকে জল পড়া, মাথাব্যাথা, গন্ধ না পাওয়া, ফুসফুসে সংক্রমণ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।
কীভাবে বাঁচবেন
মাটি বা ধূলোবালির মতো পরিবেশ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন এবং এন-৯৫ মাস্ক পরুন। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন বাড়ি ও কর্মস্থলের আশেপাশে। তবে অ্যাস্পারগিলাসের উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান।