সুমন ভট্টাচার্য: আমেরিকা এবং চিন, আবার মুখোমুখি| এবার করোনার (Covid-19)উৎস নিয়ে তদন্তের কারণে| মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)যে করোনার উৎস খুঁজে বার করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে ওয়াশিংটন (Washington)এবং বেইজিং(Beijing) এর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার পারদ চড়াবে| ইতিমধ্যেই সেই ইঙ্গিত দিয়ে চিনের কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত গ্লোবাল টাইমস (Global Times) আমেরিকার শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তা এবং ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ফুচির বিরুদ্ধে নজিরবিহীন ভাবে আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে| ফুচিকে অশালীনভাবে আক্রমণের কারণ তিনি করোনাকালের মধ্যে এই প্রথমবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, যে করোনার ভাইরাস (Corona Virus) ল্যাবোরেটরি থেকেও বাইরে এসে থাকতে পারে|
করোনা যেহেতু আসলে একটা বিশ্বযুদ্ধই এবং যে যুদ্ধ বেইজিং(Beijing) আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে, সেহেতু এইরকম একটা টানাপোড়েন প্রত্যাশিতই ছিল| এই বিষয়ে তো কোনো সন্দেহ নেই যে করোনার উৎস চিনেই আর সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর সেই বিষয়টি বেইজিং গোটা বিশ্বকে জানাতে দেরি করেছিল, তাই প্রথম থেকেই কমিউনিস্ট চিনের আচরণ সন্দেহের ঘেরাটোপে| অস্ট্রেলিয়া বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ অনেকদিন ধরেই করোনার সংক্রমণ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পিছনে চিনের গোপনীয়তা এবং ধামাচাপা দেওয়ার প্রবণতার দিকে আঙুল তুলছিল| কিন্তু সেই ক্ষোভ ছিল শুধু তথ্য আদানপ্রদানে বিলম্বের কারণে, কারণ তখনও পর্যন্ত মনে করা হচ্ছিল উহানের পশুমাংসের বাজার থেকেই প্রথম ভাইরাস ছড়িয়েছিল|
কিন্তু যদি ভাইরাসের উৎস কোনো প্রাণীর শরীর না হয়ে উহানের ল্যাবরেটরি (Uhan lab) হয়, তাহলে গোটা প্রেক্ষিতটাই বদলে যায়| কারণ তখন গোটা বিশ্ব প্রশ্ন তুলবে, চিন তার ল্যাবোরেটরিতে কেন এই ভাইরাস রেখেছিল? বেইজিং কি তাহলে সত্যি সত্যিই বায়োলজিকাল ওয়েপন বা জৈব রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবে করোনার ভাইরাস কে বানিয়েছিল? এটা কি চিনের তরফে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি ছিল? কমিউনিস্ট শাসিত চিন গোটা বিশ্বে যে একাধিপত্য কায়েম করতে চায়, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভুত্বের জন্য উদগ্রীব, তার জন্যই করোনা নামক এই ভাইরাসকে এনেছে?
এতদিন এগুলো নিয়ে আলোচনা ছিল, ফিসফাস ছিল,ফরাসি নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী বলছিলেন, কিন্তু অতি সম্প্রতি আমেরিকার বিখ্যাত সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখায় যে ২০১৯ এর নভেম্বর মাসেই উহানের ল্যাবোরেটরির তিন গবেষক গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন| ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্ট সরাসরিই বলে, উহানের প্রাণী শরীর নয়, সরকারি ল্যাবোরেটরিই করোনা ভাইরাসের উৎস| এই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করোনার উৎস খুঁজে বের করে ৯০ দিনের মধ্যে জানাতে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে নির্দেশ|
হোয়াইট হাউস (White House)যাই বলুক, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি কতটা তদন্ত করতে পারবে, কতটা চিনের লৌহপ্রাচীরকে ভেদ করে সত্যের কাছাকাছি পৌছতে পারবে, তা বলা মুশকিল| কারণ চিন যে কঠোর গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনিতে নিজেদের ঘিরে রেখেছে,তাকে ভেদ করা মুশকিল| তাই আসলে কি হয়েছিল, তার পুরোটা হয়তো কখনওই জানা যাবে না| কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দাদের এই তদন্ত নিঃসন্দেহে বেইজিংয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ এবং রাজনৈতিক দিক থেকে অস্বস্তিকর| সেই কারণেই আমেরিকা আর চিনের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়ে গিয়েছে|
বাইডেন (Joe Biden)এর এই তদন্তের সিদ্ধান্ত ওয়াশিংটন এবং বেইজিংকে সংঘাতের পথে কতদূর নিয়ে যায়, ঠান্ডাযুদ্ধ কি চেহারা নেয়, সেটাই হয়তো বিশ্ব রাজনীতিতে আগামীদিনে অন্যতম আলোচ্য বিষয় হবে|
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.