বালেশ্বর: বুধবার সাড়ে ১১টা নাগাদ ওডিশার পারাদ্বীপ (Paradeep) ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের (Sagar) মধ্য়ে আছড়ে পড়ার কথা ছিল ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের (Yaas)। কিন্তু সময়ের আগেই বালেশ্বরের কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে এই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় (Cyclone)। আর স্থলভাগে তাণ্ডব দেখাতে শুরু করে সে। ইয়াসের প্রভাবে ওডিশা (Odisha) ও পশ্চিমবঙ্গ (Wesy Bengal) ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ঝড় ভোররাতের দিকে ঝাড়খণ্ডের দিকে চলে যায়। আবহাওয়া দপ্তরের খবর, ক্রমশ শক্তি হারিয়ে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে ইয়াস।

বুধবার ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার বেগে দেশের পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়ে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তবে ইয়াস স্থলভাগ ছোঁয়ার আগে থেকেই ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি। দুই রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলি থেকে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও গতকাল মোট ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে ৩ জন ওডিশা ও ১ জন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। গতকাল সকাল ৯টা থেকে ওডিশা উপকূলে প্রবল জলচ্ছ্বাস শুরু হয়। ধামরা বন্দর এলাকায় জলের স্রোতে প্রচুর মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ে। ক্ষয়ক্ষতি হয় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতেও। দিঘায় সমুদ্রের জল ঢুকে পড়ে জনবসতিপূর্ণ এলাকায়।

একই অবস্থা ওডিশার উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতেও। ঝড়ের প্রভাবে বালেশ্বর, ভদ্রক ও ধমরা এলাকায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। উপড়ে যায় গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। গতকাল বিকেল থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জোর কদমে কাজ শুরু করেছে NDRF। সার্চ অপারেশন এখনও চলছে বলে জানিয়েছেন ওডিশার স্পেশ্যাল রিলিফ কমিশনার পি কে জেনা। সিমলিপাল জাতীয় উদ্যানে হয় প্রবল বৃষ্টিপাত। বিকেলের মধ্যে জলস্তর বেড়ে যায় ২৭ মিচার। কেওনঝড় থেকে একজন ও বালেশ্বর থেকে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। তাদের উপর গাছ ভেঙে পড়েছিল। তবে এ নিয়ে এখনও সরকারি কোনও বিবৃতি জারি হয়নি। বাডি় ভেঙে পড়ে কেওনঝড়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রপাড়া ও জয়পুরে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা।

এদিন ইয়াসের ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে কলকাতার ৮টি উড়ালপুলে যান চলাচল দিনভর বন্ধ ছিল। বিকেলের দিকে ফের পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। বুধবার সকালে সাইক্লোনের ক্লাউড ওয়াল ঢুকতে শুরু করার সময় থেকেই ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডব ক্রমেই বাড়তে শুরু করে। আর তার সঙ্গে চলে তুমুল বৃষ্টি ও সামুদ্রিক জলোচ্ছাস। আর এর ফলেই পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় থেকে ব্যাপক ভাবে ক্ষয় ক্ষতির খবর পাওয়া যায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যে মোট ১৭ কোম্পানি সেনা নামানো হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে দুযোগ মোকাবিলায় তৎপর ভারতীয় সেনা। বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয় ত্রাণের সামগ্রী। সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে প্লাবিত পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক এলাকা। ৩২ জন গ্রামবাসীকে উদ্ধার করে ভারতীয় সেনা। জানা গিয়েছে যে ব্যক্তির মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গিয়েছে তারকে উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তাঁর মৃত্যু হয়। রাজ্যের একাধিক এলাকায় এখনও চলছে সার্চ অপারেশন।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.