টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম
এই সমীক্ষায় গবেষকরা পুরুষদের মধ্যে কোভিড-১৯ রোগের তীব্রতা ও টেস্টোস্টরনের মাত্রা কমের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিনের অধ্যাপক অভিনব দিওয়ান বলেন, ‘এই মহামারির সময়, একটি প্রচলিত ধারণা পাওয়া গেছে যে টেস্টোস্টেরন খারাপ।' তিনি এও বলেন, ‘কিন্তু আমরা পুরুষদের মধ্যে তার বিপরীত দেখেছি। যদি কোনও পুরুষের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম থাকে, যখন সে প্রথম হাসপাতালে আসে, তবে কোভিড-১৯ হওয়ার ঝুঁকি তার মধ্যে বেশি ছিল, যার অর্থ আইসিইউতে বা মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। যে সব পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেশি তাদের চেয়ে অনেক উচ্চ ঝুঁকি থাকে যাদের এই টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কম থাকে। আর যদি হাসপাতালে ভর্তির পরও এই টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যায় তবে ঝুঁকি আরও বাড়তে থাকে।'
কীভাবে এই সমীক্ষা করা হল
১৫২ জনের মধ্যে ৯০ জন পুরুষ ও ৬২ জন মহিলার রক্তের নমুনায় বেশ কিছু হরমোন নিয়ে পরীক্ষা করেছেন। এই ১৫২ জন কোভিড-উপসর্গ বা নিশ্চিত করোনার কেস নিয়ে সেন্ট লুইসের এক হাসপাতাল থেকে এসেছেন। এঁদের মধ্যে ১৪৩ জন হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন। গবেষকরা হরমোনের মাত্রা (টেস্টোস্টেরন, এস্ট্রাডিওল ও আইজিএফ-১) পরিমাপ করেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ৩,৭,১৪ ও ২৮ দিন পরও তা মেপে দেখেন। এই গবেষণা চলাকালীন ২৫ জন পুরুষ সহ ৩৭ জন রোগী মারা গিয়েছিলেন।
কি উঠে এল গবেষণায়
এই গবেষণায় উঠে এসেছে যে কেবলমাত্র টেস্টোস্টেরনের মাত্রা পুরুষদের মধ্যে কোভিড-১৯-এর তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়। ৯০ জনের মধ্যে ৮৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৬ জনের অবস্থা ছিল গুরুতর। ৬৬ জনের মধ্যে ৩৩ জনই হাসপাতালে মারা মায়। হাসপাতালে থাকার সময় ৩৫ জন পুরুষের শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়। মৃতদের শরীর পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে প্রত্যেকের শরীরে টেস্টোস্টেরনের ঘনত্ব অনেকটাই কম ছিল। তাতেই গবেষকরা মনে করছেন যে টেস্টোস্টেরেনের ঘনত্বই পুরুষদের কোভিড ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। আগামী দিনে এই বিষয়টি করোনা চিকিৎসায় গুরুত্ব পাবে বলেও দাবি করা হয়েছে।
অন্যান্য কারণ
চিকিৎসকরা জানিয়েছে স্থুলতা, বিপাক সিনড্রম টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও দীর্ঘকালীন অসুস্থতাই পুরুষদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার অন্যান্য কারণ। গবেষণায় দাবি করা হয়েছে মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন সম্ভবত তাদের করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। তাই ইস্ট্রোজেন থেরাপি কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।