‘ভ্যাকসিন তৈরিতে সময়ের দরকার’! দেশজোড়া টিকা উদ্বেগের মাঝেই চাঞ্চল্যকর বিবৃতি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের

কোভিড-যুদ্ধে বর্তমানে কেন্দ্রের কাছে একমাত্র ব্রহ্মাস্ত্র করোনা ভ্যাকসিন। যদিও টিকা প্রস্তুতি ও টিকা সরবরাহের মধ্যে যে সময়ের বিস্তর ফারাক রয়ে যাচ্ছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন উঠছিল নানা মহল থেকেই। সোমবার কেন্দ্রের তরফে মিলল কড়া প্রতিক্রিয়া। "টিকা উৎপাদনের পরেই তা পাঠিয়ে দেওয়া যায় না, গোটা পদ্ধতির জন্য কিছুটা সময়ের দরকার হয়", কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্মকর্তা লভ আগরওয়াল জানালেন এমনটাই। লভ আরও জানান, "টিকা তৈরির পর একসপ্তাহ লাগে তার গুণাগুণ যাচাইয়ে। তারপর হিমাচলপ্রদেশের কসাউলিতে সেই টিকা ব্যাচ টেস্টিংয়ের জন্য প্রেরণ করা হয়। সর্বশেষ পরীক্ষার পর সারা দেশে সরবরাহ হয় ডোজ।"

শীঘ্র চিকিৎসার জন্য বাড়াতে হবে ওষুধের যোগান, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরাশীঘ্র চিকিৎসার জন্য বাড়াতে হবে ওষুধের যোগান, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা

রাজ্যের উপর দায়ভার চাপাল কেন্দ্র

ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও প্রায় ৮-১০ দিন লাগে সর্বশেষ সিলমোহর পেতে। যদিও টিকা সরবরাহের ক্ষেত্রে বিলম্বের জন্য যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রাজ্যের দুর্বল পরিকাঠামোই দায়ী, তা ঘুরিয়ে বর্ণনা করেছেন লাভ। "প্রত্যেকদিন সরবরাহের হিসাব আমরা রাজ্যকে দিয়ে দিই। যদিও রাজ্যের সকল কোণায় টিকা পৌঁছাচ্ছে কি না, তা দেখার দায়ভার রাজ্যের উপরই বর্তায়", মত লভের। অন্যদিকে টিকা উৎপাদন দ্রুত করার লক্ষ্যে নিয়মবিধি কড়া করেছে কেন্দ্র, যদিও বেশ কিছু রাজ্যে টিকাকরণ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ায় সমস্যায় জনসাধারণ।

কো-উইনের তথ্যের সঙ্গে মিলছে না কেন্দ্রের হিসাব

প্রতি মাসে সিরাম ইনস্টিটিউট ৬.৫ কোটি ও ভারত বায়োটেক ২ কোটি ডোজ উৎপাদনের প্রতিশ্রুতি রেখেছে, সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা নথিতে কেন্দ্রের তরফে জানান হয়েছে এমনটাই। যদিও হিসাবের ৮.৫ কোটির জায়গায় মে মাসের প্রথম তিনসপ্তাহে যে মাত্র ৩.৪ কোটি ডোজ সরবরাহ হয়েছে, তা স্পষ্ট জানাচ্ছে কো-উইন পোর্টাল। সম্প্রতি দেশের বাইরে ডোজ রপ্তানির কথা অস্বীকার করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট, স্বভাবতই টিকার হিসাবে কেন্দ্রের এহেন গলদে শুরু হয়েছে জলঘোলা।

ভারতে রাশিয়ার টিকার ৩ লক্ষ ডোজ

"কোভ্যাক্সের জন্য পাঠানো হচ্ছে না কোনো টিকা। মাসে উৎপাদিত মোট ৬.৫ কোটি ডোজের অর্ধেক কেন্দ্রকে এবং বাকি অর্ধেক রাজ্য ও বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে", বিবৃতি মারফত এমনটাই জানিয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। অন্যদিকে রাশিয়া থেকে প্রায় ৩ লক্ষ স্পুটনিক টিকা দেশে এলেও এ বছরের জুলাইয়ের আগে যে দেশে রাশিয়ার টিকার উৎপাদন শুরু সম্ভব না, তা স্পষ্ট জানিয়েছে স্পুটনিকের ভারতীয় অংশীদার ডঃ রেড্ডি'স ল্যাবরোটেরিস। যদিও ইতিমধ্যেই টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যে রাশিয়ার বিদেশি বিনিয়োগ মন্ত্রকের (আরডিআইএফ) তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে প্যানাসিয়া বায়োটেকের সঙ্গে! উৎপাদিত টিকার মান পরীক্ষা হবে মস্কোর গামালেয়া ইনস্টিটিউটে।

বছরে ১০ কোটি স্পুটনিক তৈরি প্যানাসিয়া বায়োটেকে

ইতিপূর্বে এপ্রিল মাসে প্যানাসিয়া বায়োটেকের মাধ্যমে বার্ষিক ১০ কোটি স্পুটনিক ডোজ উৎপাদনের আভাস দেয় আরডিআইএফ। যদিও টিকা উৎপাদন নিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতার মাঝেও অব্যাহত টিকা-তর্জা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর কটাক্ষ, "মহামারী রোখার চাবিকাঠি যে ভ্যাকসিন, সে বিষয়ে কোনো হেলদোল নেই কেন্দ্রের।" অন্যদিকে এআইএমআইএম সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসির বিস্ফোরক মন্তব্য, "প্রতিদিন প্রায় ১০ লক্ষ ডোজ 'হারিয়ে' যাচ্ছে, কারণ মোদী সেগুলি আগে থেকেই সরিয়ে রাখার বন্দোবস্ত করেছেন!"

More POSITIVE NEWS News  

Read more about:
English summary
Union Ministry of Health reacted strongly to the distribution of the corona vaccine