রাঁচি: আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার সঙ্গীতা সোরেন(Sangeeta Soren)। স্বপ্ন ছিল ফুটবলকে আঁকড়েই বাঁচবেন, ফুটবলকেই করবেন পেশা। কিন্তু অতিমারী বদলে দিয়েছে সবকিছু। লকডাউন(Lockdown) পরবর্তী সময় পেটের দায়ে সঙ্গীতা এখন ইঁট ভাটার কর্মী। ধানবাদ-নিবাসী ২০ বছরের সঙ্গীতা গত বছর মহিলা জাতীয় সিনিয়র দলে ডাক পেয়েছিলেন। কিন্তু কোভিডের(Covid) কারণে সারা দেশে বিভিন্ন স্পোর্টিং ইভেন্ট স্থগিত হয়ে যাওয়ায় থমকে যায় সঙ্গীতার স্বাভাবিক জীবনও। ফলত কঠিন সময়ে পরিবারের খরচ চালাতে তাঁকে কাজ করতে হচ্ছে ধানবাদের বাঁশমুড়ি গ্রামের(Bansmuri Village) একটি ইঁট ভাটায়।
গত বছর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভাইরাল ভিডিওয় সঙ্গীতাকে সাহায্য চাইতে দেখা গিয়েছিল। ওই ভিডিও দেখার পর ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন(Hemant Soren) তাঁকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে আশ্বাস পেয়ে সঙ্গীতা বেশ কিছুটা সময় সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু বাস্তবে সেই সাহায্য না আসায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ইঁট ভাটায় কাজে যোগ দেন সঙ্গীতা।
সঙ্গীতার বাবা সরকারি সাহায্য প্রসঙ্গে বলেন, তিনি আশা করেছিলেন সরকারের তরফ থেকে তাঁর মেয়েকে সাহায্য করা হবে, কিন্তু তা হয়নি। এমনকি স্থানীয় প্রশাসনের তরফেও তাঁদের দিকে কোনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়নি।
এর আগে সঙ্গীতার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন সঠিক পথেই এগোচ্ছিল। ২০১৮ সালে ভুটানে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৮ জাতীয় দল(U-18 National Team) এবং তারপর থাইল্যান্ডে অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের(U-19 National Team) হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। এরপর নিজেকে প্রমাণ করে গত বছর জাতীয় সিনিয়র দলে ডাক পান সঙ্গীতা। মনে হয়েছিল এত বছরের পরিশ্রমের ফল বুঝি মিলতে চলেছে অবশেষে। ঠিক সেই সময় কোভিড সঙ্গীতার স্বপ্ন সত্যি হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
সঙ্গীতার পিতা দুবে সোরেন(Dube Soren) বয়সজনিত কারণে আংশিক দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। সঙ্গীতার বড় দাদাও লকডাউনে একপ্রকার কর্মহীন। তাই পরিবারের সমগ্র দায়ভার এসে পড়েছে সঙ্গীতার কাঁধে। সঙ্গীতা একা নন, ইঁট ভাটায় কাজ যোগ দিয়েছেন সঙ্গীতার মা-ও। যদিও সঙ্গীতার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন কিন্তু ফিকে হয়নি এতটুকু। জাতীয় দলের স্ট্রাইকার হিসেবে খেলা সঙ্গীতা তাঁর গ্রামের মাঠে রোজ সকালে নিয়ম করে অন্যান্য মেয়েদের সঙ্গে চুটিয়ে অনুশীলন করেন।
সঙ্গীতা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের(State Govt.) তরফ থেকে যথাযথ স্বীকৃতি না পেয়ে ঝাড়খণ্ডের বহু প্লেয়ার অন্য রাজ্যে খেলতে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ভালো খাবার, ভালো প্রস্তুতি প্রত্যেক প্লেয়ারের প্রয়োজন। কিন্তু এ রাজ্যে সরকার অ্যাথলিটদের সেভাবে গুরুত্ব দেয় না। সে কারণেই আমার মতো প্লেয়াররা দিনমজুর হিসেবে কাজ করছে।’
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.