নারদ মামলায় চার হেভিওয়েট নেতাকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ। জেল হেফাজত থেকে মুক্ত হয়ে তাঁদের গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
চার নেতার শারিরীক অবস্থার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্তর্বর্তী জামিন নিয়ে দুই বিচারপতির মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়। প্রথমে এক বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করলেও ভার প্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেস বিন্দাল তার বিরোধিতা করেন।
তাতে মাঝামাঝি একটি পথ বেছে নেওয়া হয়। জেল হেফাজত থেকে মুক্ত করা হলেও তাঁরা জামিন পাননি।
গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেডিকেল গ্রাউন্ডকে মাথায় রেখেই তাঁদের গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যাচ্ছে এই নির্দেশ পাওয়ার পরেই প্রেসিডেন্সী জেলে ছুটে যান দুই আইনজীবী। জানা যায়, দীর্ঘক্ষণ নির্দেশ নিয়ে কথা হয়। তবে এখনও হাইকোর্টের লিখিত নির্দেশ হাতে পাননি ফিরহাদের আইনজীবীরা।
আর তা পাওয়ার পরেই সেই নির্দেশ নামার প্রতিলিপি জেলে দেওয়া হবে। আর জেলমুক্তি হবে রাজ্যের মন্ত্রীর। আর এই খবর পাওয়ার পরেই প্রেসিডেন্সী জেলের বাইরে ভিড় বাড়ছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। একই সঙ্গে পুলিশের তরফেও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে হাইকোর্টে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলেও আজই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না শোভন, মদন এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়। গ্রেফতার হওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনজনই। প্রত্যেকদিনই তিনজনের শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।
পরীক্ষা করে ডাক্তারদের মত, তিনজনের শারীরিক অবস্থা যা তাতে এখনই তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়া সম্ভব নয়। পরীক্ষা করে ধরা পড়েছে, সিরোসিস অফ লিভারে আক্রান্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়।
অন্য দিকে দিকে কোভিড সারলেও ক্ষত থেকে গিয়েছে মদন মিত্রের ফুসফুসে। পরীক্ষার পর শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
গত কাল ইউএসজি করে দেখা গিয়েছে শোভন লিভারের সিরোসিসে আক্রান্ত। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এটা দীর্ঘদিনের রোগ। সেই সমস্যাই আবার বেড়েছে। তার জুন্য শুরু হয়েছে চিকিৎসা। অন্য দিকে, মদন মিত্রের বুকে রয়েছে সংক্রমণ। সদ্য কোভিড সারিয়ে উঠেছেন তিনি।
করোনা আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন আগে এই এসএসকেএমেই ভর্তি ছিলেন মদন মিত্র। কিন্তু করোনা সেরে গেলেও অনেক সময় ক্ষত থেকে যায়।
কামারহাটির বিধায়কের ক্ষেত্রেও এটাই হয়েছে। পরীক্ষা করে দিয়ে দেখা গিয়েছে তাঁর ফুসফুসে রয়েছে কোভিডের প্যাচ। তিন নেতারই সিওপিডি রয়েছে। তাই প্রতিনিয়ত তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ড সব পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে।
শ্বাসকষ্ট কমাতে মদনকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। সিওপিডি-র সমস্যা কমাতে সুব্রত ও শোভনকে দেওয়া হচ্ছে নেবুলাইজার।
ফলে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী আজ শুক্রবার সম্ভবত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না তিনজনই। মেডিক্যাল বোর্ডের মতে, আরও বেশ কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে পারলে তাঁদের পক্ষেই ভালো বলে খবর।