কোভিডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, দেশজুড়ে ঘাটতি অ্যান্টিফাঙ্গাস ওষুধের

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ওয়েভে দেশজুড়ে শুধুই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের বেড থেকে শুরু করে রেমডেসিভির, অ্যাম্বুলেন্স সবকিছুরই ঘাটতি দিল্লি–এনসিআরে এপ্রিলে মহামারি শুরুর সময় থেকে। এবার ঘাটতি দেখা দিল অ্যাম্ফোটেরিসিন বি অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ, যা হাসপাতালগুলি সুস্থ কোভিড রোগীর ব্ল্যাক ফাঙ্গাল সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহার করছে।

চাহিদা বেড়েছে প্রবলভাবে

অ্যান্টিফাঙ্গাস ওষুধটির চাহিদা গত কয়েক সপ্তাহে প্রবলভাবে বেড়ে গিয়েছে। আর তাই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। দিল্লি-এনসিআর জুড়ে এই ইঞ্জেকশনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ফিড ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসওএস কলের জোয়ার। এই সপ্তাহের শুরুতেই গুরুগ্রামের একটি হাসপাতালে এই ওষুধটির ঘাটতি দেখা দেয়, যার ফলে হরিয়ানা সরকার ইঞ্জেকশন সংগ্রহের জন্য প্যানেল গঠন করেন। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসার জন্য নয়ডা হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা এই অ্যাম্ফোটেরিলিন বি ইঞ্জেকশনের জন্য থমকে রয়েছে, কারণ এই জেলায় যোগান নেই এই ওষুধের। মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ দীপক ওহরি জানিয়েছেন লখনউ থেকে সরবরাহের অপেক্ষায় রয়েছি। ওষুধের দোকান এই ইঞ্জেকশন সংগ্রহ করতে পারবে না।

বাজারে নেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ

ড্রাগ ইনস্পেক্টর বৈভব ব্বর জানিয়েছেন যে অ্যাম্ফোটেরিসিন বি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। বব্বর বলেন, ‘‌এই ওষুধের শিশি যদি আমরা একবার পাই তবে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী আমরা তা হাসপাতালে বিতরণ করে দেব। এটি রাজ্যকে কেন্দ্র দেবে এবং সেখান থেকে জেলায় যাবে।'‌ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহারাষ্ট্রের এক ওষুধ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন আগে এজাতীয় ওষুধের খোঁজ করতেন দিনে ৩-৪ জন। এখন সেখানে নিত্যদিনই এজাতীয় ওষুধ চাইছেন ৫-৭ জন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ওষুধের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে এই ওষুধের চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দামও। ওষুধটির দাম ৪৫০০ থেকে ১২ হাজার টাকা।

বেঙ্গালুরুতে কালো ছত্রাক

গত সপ্তাহে বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত প্রায় ৭৫ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। মহীশূর ও বেলগাভি এলাকাতেও এই রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। কর্ণাটক সরকার জরুরি ভিত্তিতে এই রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি ওষুধ ও ইঞ্জেকশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মহারাষ্ট্রে প্রকোপ বেশি

কালো ছত্রাকের সব থেকে বেশি প্রকোপ দেখা গেছে মহারাষ্ট্রে। এই রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রায় ৫ হাজার ইঞ্জেকশন বিতরণ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার আরও বেশি ইনঞ্জেকশন সংগ্রহ করছে বলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে। গুজরাতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বিশেষ ওয়ার্ড চালু করেছে সরকার। ব্যক্তিগতভাবে এই রোগর ওষুধ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তিন রাজ্য ইতিমধ্যে ১ লক্ষেরও বেশি এই রোগের ওষুধের অর্ডার দিয়েছে।

যোগান নেই উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানাতেও

অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের ওষুধ ব্যবসারী জানিয়েছেন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ ও ইনঞ্জেকশনের চাহিদা গত দু সপ্তাহ ধরে প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু চাহিদা মত যোগানে অমিল দেখা দিয়েছে। তবে উত্তর প্রদেশের সরকারি নথি এখনও পর্যন্ত এই রোগের কথা উল্লেখ করা হয়নি। হরিয়ানা, দিল্লি, মধ্য প্রদেশ-এই তিন রাজ্যেও কালো ছত্রাক রোগের প্রকোপ বেড়েছে। দিল্লিতে ইতিমধ্যেই ১০০ জনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ সরকারও এই রোগের চিকিৎসার জন্য বিশেষ ওয়ার্ড তৈরির নির্দেশ দিয়েছে পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে। কেন্দ্রীয় সরকারই জানিয়েছে দ্রুততার সঙ্গে এই রোগের চিকিৎসার জন্য যাবতীয় ওষুধের সংগ্রহ বাড়িয়ে তোলা হবে।

More BLACK FUNGUS News  

Read more about:
English summary
now soss for injection to treat black fungus