মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে ধরনায় বসতে পারেন? সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা, নারদ মামলায় শুনানিতে সওয়ালে সিবিআই

রিকল মামলা শুনতে গেলে আপনাদের সেদিনের পরিস্থিতি বিবেচনা করতেই হবে। ওই পরিস্থিতি 'এক্সট্রা অর্ডিনারি' ছিল। বিচারপতিকে জানালেন সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহতা।

বললেন, দল বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী আরও লোকজন নিয়ে সিবিআইয়ের দফতরে ঢুকে যান। বলেন আমাকে গ্রেফতার করুন। এমনকি ধর্নাতেও বসে যান। এটা নজিরবিহীন, বললেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। পালটা বক্তব্যে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী মনু সিংভি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিন অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন। ভয় দেখাতে নয়। কার্জত সহমর্মিতা দেখাতে সেখানে গিয়েছিলেন। সিবিআই অপব্যাখ্যা করছেন বলে দাবি অভিযুক্তদের আইনজীবী।

উল্লেখ্য বুধবার দুপুরে নারদ মামলায় জেলবন্দি চার নেতার জামিনের শুনানি করা হবে কলকাতা হাইকোর্টে। এমনটাই ঠিক ছিল। যদিও তার আগেই নারদ মামলায় নতুন মোড়। এদিন সিবিআই-এর তরফে নারদ স্থানান্তর মামলায় পার্টি করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এছাড়াও রাজ্যের একমন্ত্রী এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই মামলায় পার্টি করা হয়েছে সিবিআই-এর তরফে।

জামিনের শুনানিতে এদিন সিবিআইয়ের তরফে একের পর এক অভিযোগ তোলা হয়েছে। শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের আইনজীবী অভিযোগ করে বলেন যে, দল বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী আরও লোকজন নিয়ে সিবিআই দফতরে ঢুকে যান। তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি জানান। ধর্নাতেও বসে যান। এটা নজিরবিহীন, বলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তাঁর কথায় এটা সাধারণ মামলা নয়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ধর্নায় বসছেন। এটা কি হতে পারে? এরপর থেকে সাধারণ গ্রেফতারেও তো এটা ট্রেন্ড হয়ে যাবে। তুষার বলেন, অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে তদন্তের সুযোগ দেওয়া হোক।

সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহতা আরও বলেন, সেদিনের বিশৃঙ্খলা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সিবিআইয়ের। সওয়ালে সিবিআই বলেন, নিজামে প্রচুর মানুষ এসে ভিড় করেছিলেন। অফিসারদের পক্ষে তাই বাইরে আসা সম্ভব হয়নি। বেআইনি ভাবে ভিড় করে বিক্ষোভ দেখানো উন্মত্ত জনতাকে সামলানোও সম্ভব হয়নি। বাধ্য হয়েই অভিযুক্তদের ওখানে রাখা হয়। পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেখানে পৌঁছে যান। বলেন, ''আমাকেও গ্রেফতার করুন।'' এরপর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। তুষারের কথায়, ''সিবিআইয়ের বিচারককে এই পরিস্থিতিতে জামিনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।''

পালটা ফিরহাদ, সুব্রতদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, এরকম অনেক মামলায় বিক্ষোভ হয়। জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে জড়িত ঘটনায় মানুষের ক্ষোভ থাকেই। এটা ঠিকই এ ধরনের বিক্ষোভ দেখানো উচিত নয়। তবে এই বিক্ষোভকে যে ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে তা-ও ঠিক নয় বলে মনে করেন তিনি।

প্রায় ঘন্টাদুয়েক হয়ে গিয়েছে মামলার সওয়াল জবাব চলছে। কেউ কাউকে একচুল জায়গা ছাড়তে নারাজ। নারদ-কাণ্ডে চারজনকেই প্রভাবশালী বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ দুজনেরই বক্তব্য শুনছেন। কিছুক্ষণ পর হয়তো এই মামলার রায় শোনাতে পারে আদালত।

More NARADA STING OPERATION News  

Read more about:
English summary
narada scam kolkata high court hearing of four politician starts