কলকতা: কোভিড রোগীদের জন্য বিনামূল্যে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য কলকাতার সাধারণ নাগরিকরা গড়ে তুললেন ‘অক্সিজোন’।
দেশজুড়ে করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, রোগীদের স্বাসকষ্টের সাথে বেড়ে চলেছে মেডিক্যাল অক্সিজেন এর জন্য হাহাকার। শরীরে অক্সিজেন কমে যাওয়া, ও প্রবল শ্বাসকষ্ট এর সময়ে জীবন ও মৃত্যুর মাঝে সঙ্কটমোচন হল এই প্রাণবায়ু অক্সিজেন। বহুল উপসর্গের সাথে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও বহু ক্ষেত্রেই বাড়িতে রেখেই চিকিৎসাও করা যায়, সে ক্ষেত্রে বাড়িতে অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখা জরুরি। প্রচুর চাহিদার কারণে অনেক জায়গাতেই কালোবাজারি চক্র গড়ে উঠেছে এই অক্সিজেন এর জোগানকে ঘিরে, এমনকি বেশি টাকা দিয়ে কিনতে চাইলেও অক্সিজেন সিলিন্ডার, কন্সেন্ট্রেটর এবং সহযোগী যন্ত্র সব প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না।
এমন অবস্থায় যখন মেডিক্যাল অক্সিজেন এর আকাল ও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে , তখন সাধারণ নাগরিক পরিচালিত অলাভজনক সংস্থা প্রামেয়া ফাউন্ডেশন কলকাতার শ্বাসকষ্টে ভোগা কোভিড রোগীদের জন্য গড়ে তুললো “অক্সিজোন” যেখানে বিনামূল্যে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনটি ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন বিনামূল্যে রোগীদের অক্সিজেন দেওয়ার জন্য কলকাতায় পাঁচটি কেন্দ্র গড়ে তুলেছে যা সম্পূর্ণরূপেই সাধারণ মানুষের এবং এনআরআইদের দানের অর্থে পরিচালিত। অক্সিজোন কেন্দ্রগুলি গড়ে তোলা হয়েছে সল্টলেক, যাদবপুর, সোদপুর এ একটি করে এবং খিদিরপুরে দুটি।
পরবর্তী কেন্দ্রটি শীঘ্রই কার্যকরী হয়ে উঠবে ভবানীপুরে। প্রামেয়া ফাউন্ডেশন এর ট্রাস্টি এবং অক্সিজোনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে একজন গার্গী ভট্ট্যাচার্য্য জানান – ” প্রতিটি কেন্দ্রে কমপক্ষে ১০জন রোগীকে একসাথে সেবা করা যাবে, অক্সিজোনগুলিতে বিছানা, মেডিক্যাল সরঞ্জাম, অক্সিজেন সহ সব ব্যবস্থা করতে কেন্দ্র পিছু এক থেকে দুই লক্ষ টাকা করে খরচ হয়েছে, সব টাকাই আসছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দান হিসেবে, সোশ্যাল মাধ্যমে ‘Oxyzone পেজ-এ বহু মানুষ আমাদের এই চেষ্টা সফল করার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রয়োজনের এই চরম সময়ে কেন্দ্রগুলি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন প্রামেয়া ফাউন্ডেশনের ম্যানেজিং ট্রাস্টি মুকুট বিশ্বাস।”
পাঁচটি অক্সিজোন কেন্দ্রই বহু রোগীর সেবা করে চলেছে, এ প্রসঙ্গে বেহালা নিবাসী পিনাক সরকার বলেন, ‘রাত্রি একটার সময়ে যখন আমার মার প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তখন এই অক্সিজোন সেন্টার আমার মার জীবন বাঁচিয়ে তুলেছে।’ এই লকডাউনের মধ্যেও অন্যের সেবায় বহু মানুষ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এগিয়ে এসেছেন – এদের মধ্যে কেউ ছাত্র ,চাকুরীজীবি, ডাক্তার, নার্স। আড়াইশোর ও বেশি লোক আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যান্য সহযোগী সংস্থাও যারা প্রামেয়া ফাউন্ডেশন এর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হল দেশ ও প্রাণ , ইকোশ প্রজেক্ট , চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ , হেল্প ফর হিন্দ , এস্পায়ার এন্ড গ্লি , অমরজ্যোতি , ইন্ডিয়ান বেঙ্গলি এসোসিয়েশন অফ মন্ট্রিয়েল এবং প্রবাসী বাঙালি আড্ডা। শ্রীমতি ভট্ট্যাচার্য্য আশা রাখেন এমন আরও অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন যাতে আমাদের প্রিয় এই শহরবাসীর শ্বাস সচল থাকে।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.