অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু এড়াতে যোগী রাজ্যের গ্রামে করোনার চিকিৎসা চলছে গাছের নীচে

রবিবার খুব বড়াই করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়েছিলেন যে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যথেষ্ট ভালো আছে এবং কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। যদিও উত্তরপ্রদেশের করোনায় জর্জরিত গ্রামের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর চিত্র অন্য কথাই বলছে। যেখানে গাছের নীচেই চলছে করোনা রোগীদের চিকিৎসা।

গাছের নীচে চলছে চিকিৎসা

গাছের নীচে খাটিয়াতে শুয়ে রয়েছেন অসুস্থ ব্যক্তি, গাছের ডাল থেকে ঝুলছে গ্লুকোজ। গরু ঘাস খাচ্ছে চারপাশে, অন্যদিকে সিরিঞ্জ ও ফাঁকা ওষুধের প্যাকেটগুলি মাঠের মধ্যেই ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এই চিত্র দেখা গিয়েছে দিল্লি থেকে ৯০ মিনিটের দুরত্বে উত্তরপ্রদেশের মেওলা গোপালগড়ে। যেখানে না আছে চিকিৎসক আর না আছে কোনও স্বাস্থ্য সুবিধা। সরকারি হাসপাতাল নিকটস্থ হলেও সেখানে কোনও বেড খালি নেই এবং গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন যে তাঁদের বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার মতো সামর্থ্য নেই।

নিম গাছের নীচে রোগীরা শুয়ে

এর পরিবর্তে, বিকল্প হিসাবে গ্রামের চিকিৎসকরা খোলা আকাশের নীচেই ক্লিনিক খুলে কোভিড-১৯ উপসর্গ রয়েছে রোগীদের গ্লুকোজ ও অন্য ওষুধপত্র দিচ্ছেন। অনেক গ্রামবাসীর বিশ্বাস, নিম গাছের নীচে শুয়ে থাকলে এই গাছের ঔষধি গুণে অক্সিজেন স্তর বাড়তে পারে। তবে এই বিশ্বাসের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। গ্রামের এক বাসিন্দা সঞ্জয় সিং, যাঁর ৭৪ বছরের বাবার জ্বরের কারণে মৃত্যু হয়েছে কিছুদিন আগেই, তিনি জানিয়েছেন তাঁর বাবার করোনা টেস্ট হয়নি এবং ২দিনের মধ্যে মারা গিয়েছেন। সঞ্জয় বলেন, ‘‌যখনই মানুষের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তাঁরা অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ানোর জন্য গাছের নীচে গিয়ে বসে পড়ছেন।'‌ তিনি এও বলেন, ‘‌মানুষ মরছে এবং এখানে কেউ আমাদের দেখার নেই।'

দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে

ভারতের বিধ্বংসী দ্বিতীয় ওয়েভের সংক্রমণে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল খুব বেহাল। দিল্লির মতো বড় বড় শহরগুলিতেও হাসপাতালে বেড, ওষুধ, অক্সিজেনের অভাব দেখা গিয়েছে। আর গ্রামীণ ভারতের স্বাস্থ পরিকাঠামো তো আরও জঘন্য। দ্বিতীয় ওয়েভের প্রস্তুতি সারতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। গত সপ্তাহে মোদী তাঁর শেষ ভাষণে জানিয়েছিলেন যে মহামারি খুব দ্রুত গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে এবং মানুষের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন যে উপসর্গগুলি যাতে এড়িয়ে না যান কেউ।

মেওলা গোপালগড়ে কোভিড টেস্টের ব্যবস্থা

কিন্তু এই গ্রামে মানুষ তাঁদের সাধ্য অনুযায়ী কাজ করছেন। কিন্তু এই গ্রামে কোভিড-টেস্টের কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই বাধ্য হয়েই গাছের নীচেই চলছে চিকিৎসা।

দেশে একদিনে করোনা বলি ৫০ চিকিৎসক, ভয়া ধরাচ্ছে আইএমএ-র পরিসংখ্যান দেশে একদিনে করোনা বলি ৫০ চিকিৎসক, ভয়া ধরাচ্ছে আইএমএ-র পরিসংখ্যান

More UTTAR PRADESH News  

Read more about:
English summary
No doctors, lack of covid test, corona treatment in Uttar Pradesh villages under open sky