শঙ্কর দাস, বালুরঘাট: আপনি আমাদের গর্ব। আপনি আমাদের প্রবীণ সহ নাগরিক। আপনার অসহায় মুহূর্তে পাশে রয়েছি আমরা। আপনার প্রয়োজন ও বিপদ আপদ সবেতেই আমাদের ফোন করবেন ছুটে আসব আমরা। লকডাউনের জেরে ঘরবন্দি অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের বাড়িতে গিয়ে এই অভয় বাণীই শোনালেন দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার।

লকডাউনে বালুরঘাটে একাকী থাকা বয়স্ক মানুষদের কাছে বিপদের বন্ধু হয়ে উঠেছে পুলিশ। বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা অসহায় মুহূর্তে নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করলেই পাচ্ছেন সাহায্য। এমনকি তাঁরা ফোনে সাহায্য না চাইলেও গত বছর লকডাউনের সময় থেকেই পুলিশ তাঁদের বাড়ি পৌঁছে খোঁজ খবর রাখছে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধে এবছর ফের লকডাউন ঘোষিত হওয়ায় পুলিশকে একই ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে। জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে’র নেতৃত্বে পুলিশ বালুরঘাট শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে একাকী বসবাসকারী প্রবীণ নাগরিকদের কাছে গিয়ে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ-খবর নিল। শুধু খোঁজখবর নেওয়াই নয়। প্রবীণ হিসেবে তাঁরা বর্তমান প্রজন্ম তথা সমাজের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও গর্বের সেই কথাও শুনিয়েছেন।

লক ডাউনে বন্ধ শহরের যান চলাচল। নির্দিষ্ট সময়ের পর বন্ধ দোকানপাট ও বাজারও। ফলে বাড়িতে খাবার সামগ্রী এবং ওষুধপত্রের প্রয়োজন রয়েছে কিনা সেই খোঁজও এদিন তিনি নেন। সেই সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে জরুরি পরিষেবার নম্বর যুক্ত “প্রণাম” নামক কার্ড-ও প্রদান করেন শহরের প্রবীণদের। এদিন প্রবীণদের কাছে গিয়ে তাঁদের খোঁজ নিতে পুলিশ সুপারের সাথে ছিলেন বালুরঘাট থানার আইসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়।

বছর দুয়েক আগে দক্ষিণ দিনাজপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম কর্মসূচীর অন্তর্গত বালুরঘাট শহরের একাকী বসবাসকারী প্রবীণ মানুষদের তালিকা তৈরি করে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে “প্রণাম” নামে বিশেষ কর্মসূচী চালু করেছিলেন। শুরুর দিন থেকেই অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছিল অসহায় বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের ক্ষেত্রে। প্রণাম কর্মসূচী শুধুমাত্র বালুরঘাট শহরেরই নয়। পিতামাতাকে বালুরঘাটের রেখে কর্মসূত্রে দূরে থাকা সন্তান সন্ততিরাও নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন। তাঁরা বিশ্বাসেই নিশ্চিত থাকেন যে বালুরঘাটে তাঁদের বৃদ্ধ পিতা-মাতার সুরক্ষায় রয়েছে মানবিক পুলিশ।

বালুরঘাটের কংগ্রেসপাড়ার প্রবীণ নাগরিক নির্মল কুন্ডু-র জানিয়েছেন স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি বাড়িতে একা থাকেন। সন্তান কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। বাড়িতে রান্নার গ্যাসের সমস্যা ছিল। থানা থেকে পুলিশ কর্মীরা এসে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দিয়ে গেছে। সেইসঙ্গে বলে গিয়েছে যেকোন সমস্যায় নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করতে। তিনি এও জানিয়েছেন যে যতবারই সাহায্য চেয়ে ফোন করেছেন। ততবারই পুলিশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রণাম নামক কর্মসূচি চালু করার জন্য এদিন তিনি বালুরঘাট থানার পুলিশকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ সুপার রাহুল দে জানিয়েছেন বালুরঘাটে লকডাউন সফল ভাবেই সাধারণ মানুষ মানছেন। লকডাউনের সময় অনেকেরই অসুবিধা হয়। জেলা পুলিশের প্রচেষ্টা রয়েছে যাঁরা অসুস্থ বা বিভিন্ন সমস্যায় রয়েছেন তাঁদের সহায়তা করা। পুলিশ সুপার একথাও বলেন এরকম যেন না হয় যে কেউ বাইরে বের হতে না পারার কারণে অভুক্ত থাকবেন।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.