ভারতের পিছিয়ে আসাতে টান কোভ্যাক্স ভাঁড়ারে
নতুন কোভিড স্ট্রেনগুলির বেনজির আক্রমণের জেরে দেশীয় নাগরিকদের টিকাকরণের দিকেই নজর দিতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। স্বভাবতই কোভ্যাক্স থেকে পিছিয়ে এসেছে ভারত। জুনে প্রায় ৫ কোটি ডোজ কম পড়বে ভারতের পিছিয়ে আসার কারণে, মত ইউনিসেফের পরিচালন অধিকর্তা হেনরিয়েটটা ফোরের। কোভ্যাক্স-র ভাঁড়ারে টান পড়ার কারণ যে সিরাম ইনস্টিটিউট, তা স্পষ্টই জানান হয়েছে ইউনিসেফের বিবৃতিতে। এমতাবস্থায় বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনের ঘাটতি যে ক্রমশ বাড়ছে, তা সাফ জানিয়েছেন হু বিশেষজ্ঞরা।
জি৭ বৈঠকের উপর নির্ভরশীল কোভ্যাক্স ফেসিলিটি?
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝেই আগামী মাসে ব্রিটেনে আয়োজিত হতে চলেছে জি৭ বৈঠক। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ১৯ কোটি ভ্যাকসিন ডোজের ঘাটতির বিষয়ে সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা হবে সেই বৈঠকে। টিকার বিষয়ে জাতীয়তাবাদী চিন্তা ভাবনা এবং ভ্যাকসিনের উৎপাদন-বণ্টনে খামতির কারণে বাড়ছে সঙ্কট, জানাচ্ছেন হু গবেষকরা। এহেন সমস্যার বিষয়ে ইতিপূর্বে আগাম সতর্কতা জারি করা সত্ত্বেও কোভ্যাক্স ফেসিলিটির যে এই অবস্থা, তার জন্য করোনা ছাড়া আর কোনোকিছুকেই দায়ী করতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা।
সতর্কতায় তোয়াক্কা না করার কী ফল হয় তার নজির ভারত, মত বিশেষজ্ঞদের
ইতিমধ্যেই আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের পাশাপাশি এশিয়ার নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা দাবানল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে করোনা মহামারী রুখতে দরকার টিকার বিশ্বব্যাপী সমবণ্টন, সব দেশে চিকিৎসকদের সম্পূর্ণ প্রয়াস। যদিও এই কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখছি যে কোভ্যাক্স-র ভাঁড়ারের অবস্থা করুণ। সিরাম ইনস্টিটিউট প্রধান আদার পুনাওয়ালার মতে, "রাতারাতি টিকা উৎপাদন বাড়ানো একেবারেই সম্ভব না। যদিও ভারত সরকারের বরাতের ২৬ কোটি ডোজের মধ্যে ১৫ কোটি সরবরাহ করেছি আমরা।"
প্রশ্নের মুখে হু-র কোভ্যাক্স ফেসিলিটি!
ইতিমধ্যেই ভারতে ভ্যাকসিন উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। অন্যদিকে ফোরের মতে, জি৭ দেশগুলি সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা মিলিতভাবে তাদের জুন, জুলাই ও আগস্টের ভ্যাকসিনের ২০% দান করলেও প্রায় ১৯.৩ কোটি ডোজ আসবে কোভ্যাক্স-র ঝুলিতে। ফাইজার, মডার্নার মত সংস্থারা কোভ্যাক্সে ভ্যাকসিন দানের অঙ্গীকার করলেও তার অধিকাংশই এই বছরের দ্বিতীয় ভাগে। স্বভাবতই এহেন অবস্থায় সিরাম ইনস্টিটিউট তথা ভারতের উপর টিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক চাপ যে ক্রমবর্ধমান, তা বলাই বাহুল্য।