বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দলীয় বৈঠকে সরব হলেন তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া তিন নেতা। শুভেন্দু অধিকারী, সৌমিত্র খান, অর্জুন সিংরা বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়ে আবেদন জানান কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবার কিছু করুক। সদ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তরুণ চুঘের সামনেই তাঁরা অভিযোগ করেন।
১
তৃণমূল থেকে আসা তিন নেতা এভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সরব হওয়া বিজেপির রাজ্য নেতারা মনক্ষুন্ন হয়েছে। প্রকাশ্য কিছু না বললেও বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্ব তৃণমূল থেকে আসা তিন নেতার উপর ক্ষুব্ধ। ভোটের ফলের প্রভাবেই বিজেপিত ফাটল তৈরি হয়েছে। বিজেপিতে আদি-নব্য দ্বন্দ্ব ছিলই, তারপর এখন বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও মুখ খুলছেন তৃণমূলত্যাগীরা।
২
ভোট পরবর্তী সময়ে জেলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তিন জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক ডাকেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। বিজেপি সূত্রের খবর, সেই বৈঠকই কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি করে বসেন শুভেন্দু-সৌমিত্র-অর্জুনরা।
৩
তিন জনের মধ্যে সবথেকে বেশি সরব হন অর্জুন সিং। তিনি প্রথমেই প্রশ্ন তোলেন প্রার্থী তালিকা নিয়ে। বেশ কিছু কেন্দ্র তাঁর প্রার্থী পছন্দ হয়নি বলেও জানিয়ে দেন তিনি। তিনি জানান নোয়াপাড়া ও জগদ্দলে তাঁর প্রার্থী পছন্দ হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে ভোট মিয়ে গেলে পরাজিত প্রার্থীরা কর্মীদের খোঁজখবর পর্যন্ত নিচ্ছেন না বলে তাঁর অভিযোগ।
৪
সম্প্রতি বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মনোনীত হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর গলায় অর্জুনের মতো সুর চড়া না হলেও, তিনি কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ দাবি করেন। আর সৌমিত্র খান বলেন, এলাকার সমস্যা এলাকার নেতাদেরই মেটাতে হবে। তা না হলে মুখোমুখি সংঘাত তৈরি হব। ২০০ কিলোমিটার দূরের নেতারা কেন এলাকার গণ্ডগোল মেটাতে যাবেন।
৫
শুভেন্দু-অর্জুন-সৌমিত্ররা তিন জনেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা। স্বভাবতই তাঁদের এই সরব হওয়া বিজেপি নেতৃত্বকে ভাবাচ্ছে। আবার সমালোচনাও হচ্ছে। বিজেপি কর্মীরা এমন কথাও বলছেন, যাঁরা এতদিন বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার করে গিয়েছেন, তাঁরাই এখন বেশি সরব হচ্ছে অত্যাচার নিয়ে।
৬
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আসলে এতদিন তাঁরা শাসকদলে থেকে রাজনীতি করেছেন। শাসক দল থেকে তাঁরা বিরোধী হয়ছেন। সেই জ্বালা টের পেতে শুরু করেছেন তাঁরা। পরিবর্তনের সরকার গড়ার নশায় দল ছেড়েছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। তাঁদের বিরোধী হয়েই থাকতে হয়েছে। তাই শাসক নেতারা বিরোধী হয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন।