করোনা পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের চাহিদা কিছুটা মেটাতে উদ্যোগী হলেন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই বেহালার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে তিনি ২টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর প্রদান করেছেন। শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ৫০টি অক্সিজেন কনসেন্ট্রটর সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের মানবিক উদ্যোগেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন সৌরভ। পাটুলিতে পরমব্রত যে অক্সিজেন পার্লারের বন্দোবস্ত করেছেন সেখানে দুটি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর প্রদান করেছেন মহারাজ। রাজারহাটে একটি অক্সিজেন পার্লারেও অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর দিয়েছেন বিসিসিআই সভাপতি।
এর আগে আটটি জেলায় অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেন সৌরভ। আগামীকাল থেকেই সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশনের তরফে দেওয়া অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের মাধ্যমে প্রাণবায়ু সংগ্রহ করতে পারবেন বিভিন্ন জেলার মুমূর্ষু রোগীরা। আজ বিকেলেই শুভ সূচনা হবে কোভিড কেয়ার কর্মসূচির। অন্যতম উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত আগেই ওয়ানইন্ডিয়া বাংলাকে জানিয়েছিলেন, সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন, পার্থ জিন্দালের জেএসডব্লিউ গ্রুপ এবং আমি, সম্মিলিতভাবে সীমিত সাধ্য অনুযায়ী কোভিড কেয়ারের এই প্রকল্প নিয়েছি। আপাতত ৩৫ দিন ধরে চলবে এই প্রকল্প। এই প্রকল্পকে অল্প সময়ের মধ্যে দিনের আলো দেখানোর জন্য শতদ্রু দত্তর সঙ্গে জেএসডব্লিউ গ্রুপের জোনাল হেড সূর্যয়ন মুখোপাধ্যায়ও রাত-দিন এক করে কাজ করছেন। দেশ তথা বিদেশ থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অনেক অনুগামীও সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
আপাতত আটটি জেলায় কাল, রবিবার থেকেই চালু হয়ে যাচ্ছে এই প্রকল্প। জেলাগুলি হলো দুই মেদিনীপুর, দুই চব্বিশ পরগনা, হুগলি, বর্ধমান, হাওড়া ও কলকাতা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শালবনীতে ৩০ শয্যার একটি সেফ হোম করা হচ্ছে। বাসে অক্সিজেন পার্লারের যে ব্যবস্থা হচ্ছে তাতে একসঙ্গে ৪০ জনকে অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াবে বেশ কিছু অ্যাম্বুল্যান্স ও গাড়ি। এতেও যেমন অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকবে, তেমনই করোনা আক্রান্তদের বাড়িতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হবে। রক্তদান শিবিরেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষজনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। দুঃস্থ, অসহায়, ভবঘুরেদের জন্য অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা করেছিলেন। ভারত সেবাশ্রম সংঘ, রামকৃষ্ণ মিশন, ইস্কন-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুঃস্থ ও সঙ্কটাপন্নদের মধ্যে চাল বিলি করেছিলেন মহারাজ। ইস্কনের মাধ্যমে লকডাউনে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর আত্মীয়দের জন্যও খাবার বিলির ব্যবস্থা করেছিলেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ফাউন্ডেশন কোভিড-যোদ্ধাদের পাশেও নানাভাবে দাঁড়িয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের জন্য পিপিই কিটের বন্দোবস্তও করেছিলেন। শুধু তাই নয়, আমফান বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে তাঁর টিমের মাধ্যমে নীরবে ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছিলেন সৌরভ। যদিও তিনি নিজে সব সময়ই প্রচারবিমুখই থেকেছেন এইসব মানবিক উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে।