সংক্রমণ রুখতে ভ্যাকসিনে জোর রাজ্যের
বিয়ামুল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ধীরে ধীরে ভ্যাকসিন আসতেও শুরু করছে বাংলায়। এই অবস্থায় ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘সুপার স্প্রেডার'দের অগ্রাধিকার দিতে শুরু করল রাজ্য সরকার। আগামী দিনে ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে কারা কারা অগ্রাধিকার পাবেন সেই সংক্রান্ত একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। নবান্নের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যাদের সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা বেশি, অর্থাৎ যারা নিজেদের কাজের সূত্রে সরাসরি বেশি বেশি মানুষের সংস্পর্শে আসেন তাঁরাই প্রথম করোনা ভ্যাকসিন পাবেন।
কাদের কাদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে
জানা যাচ্ছে যে সমস্ত সরকারি কর্মীরা লকডাউনের সময়ও কাজ করছেন তাঁদের প্রথমেই এই তালিকায় রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষকরা ভোটের সময় টিকা পাননি তাঁরাও এবারে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন পাবেন। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন রেশন ডিলার, রেশনের দোকানের কর্মী, রান্নার গ্যাসের ডিলার এবং তাঁদের কর্মচারি। পেট্রল পাম্পের কর্মীরাও ভ্যাকসিন পাবেন আগে। কারন অনেক সময়ে তেল দেওয়ার ক্ষেত্রে একে অন্যের কাছাকাছি আসছেন। পরিবহণ কর্মী, ট্যাক্সি চালক, অটোচালক, টোটোচালক, রিক্সাচালকদেরও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রাপকদের তালিকায় রাখা হয়েছে। যদিও পরিবহন কর্মীদের ইতিমধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। সাংবাদিকদের ইতিমধ্যেই করোনা যোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তারাও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা পাবেন। বিভিন্ন জায়গাতে সাগবাদিকদেরও দেওয়া হচ্ছে করোনার ভ্যাকসিন। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হবে যৌনকর্মী এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদেরও। হকার এবং সংবাদপত্র বিক্রেতাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে। মাছ, মাংস, সবজি ব্যাবসায়ী, মুদি বা অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানদারদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া হবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে। কোভিড ভলান্টিয়ার এবং সংশোধনাগার ও হোমের আবাসিকদেরও টিকা দেওয়া হবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে।
মোট আক্রান্তের নিরিখে পরিসংখ্যান
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোট আক্রান্ত ১১ লক্ষ ১৪ হাজার ৩১৩ জনের মধ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা রোগী ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৪৮ জন। এদিন ১৫৬ জন বাড়ল সক্রিয়ের সংখ্যা। দৈনিক আক্রান্ত ১৯৫১১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা মুক্ত হয়েছেন ১৯২১১ জন। মোট করোনা মুক্ত হলেন ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ২২৮ জন। সুস্থতার রেট হয়েছে ৮৬.৯৮ শতাংশ।
কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় করোনা
শনিবার বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজারের সামান্য নিচে। বাংলায় ১৯৫১১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এদিন। কলকাতায় এদিন করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৯৫১। উত্তর ২৪ পরগনায় ৪২৭৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতায় ও উত্তর ২৪ পরগনায় করোনা গ্রাফ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। করোনায় শুধু কলকাতায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৮৯৬ জন। আর উত্তর ২৪ পরগনায় মৃতের সংখ্যা ৩২৫৩।