হায়দরাবাদঃ দেশজুড়ে মারণ ভাইরাসের (Corona) তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড পরিস্থিতি। দিনে দিনে রেকর্ড হারে মানুষজন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। থেমে নেই মৃতের সংখ্যাও। এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাঁধ সেধেছে দেশের বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। হাসপাতালে নেই শয্যা, মিলছে না পর্যাপ্ত অক্সিজেনও। এমন এক সময়ে যখন দেশে প্রচুর সংখ্যক করোনা রোগীকে বাঁচানোর জন্য ওষুধ থেকে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর সব কিছুই আমদানি করা হচ্ছে, ঠিক তখনই তেলঙ্গানার এক বেকার-স্নাতক যুবক একটি আকর্ষণীয় মাস্ক নিয়ে হাজির। যা বর্তমানে ‘বৈদ্যুতিন নেবুলাইজার মাস্ক’ নামে পরিচিত।
এই অনন্য মাস্কের (Electric Nebulizer Mask) কিছু আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং চলাফেরার সময়ও এটি পরা যেতে পারে। ২৪ বছর বয়সী কে.শিব নাগারাজু (K.Shiva Nagaraju) রাজধানী হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে তেলঙ্গানার যাদাদ্রি জেলার দেশমুখী গ্রামের বাসিন্দা। “নিয়মিত মাস্কগুলি যদিও খুব দরকারী, তবে কিছু সমস্যাও রয়েছে। আপনি যদি এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য পরেন তবে শ্বাস নিতে কিছুটা অস্বস্তি হতে পারে। তারপরে ঘামের সমস্যা তো আছেই। তবে এই ‘বৈদ্যুতিক নেবুলাইজার মাস্ক’ এ রয়েছে একটি আইভি পাইপ এবং ফিল্টার। যা ধূলিকণা এবং শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ করে এবং শ্বাস ছাড়াই কিছুটা আরামদায়ক হবে’। এমনটাই জানালেন মাস্কটির উদ্ভাবক কে.শিব।
শিব ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিলেন, তবে বি-কম (কম্পিউটার) গ্র্যাজুয়েট হওয়ায় নানান কারনে তাঁকে মুখোমুখি হতে হয়েছে আর্থিক অনটনের। তবে, এই সমস্ত সমস্যা শিবকে সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে নিজেরই পণ্য তৈরি করতে বাধা দেয়নি। আর ‘ইলেকট্রিক নেবুলাইজার মাস্ক’ তাঁর সর্বশেষ প্রচেষ্টা।
মুখোশের একটি ডিসি মোটর, সার্কিট (রিচার্জ মডিউলটির), এয়ার ফিল্টার রয়েছে এবং ব্যাটারি ব্যাক আপ চার্জ করা গেলে তিন ঘন্টা অবধি চলতে পারে। এটির সাথে সংযুক্ত বর্তমান কাপড়ের মাস্কটি ছাড়াও, নেবুলাইজারটি ৪০০ গ্রাম ওজনের হয় এবং দৈর্ঘ্যে ১০ সেন্টিমিটার ও চওড়া ৪ সেন্টিমিটার।
‘বৈদ্যুতিন নেবুলাইজার মাস্ক’ তৈরির এটির একটি আকর্ষণীয় পটভূমি রয়েছে। শিবের এক বন্ধু পি নবীন কুমার এবং তাঁর বাবা-মা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখনই শিবের মাথায় এই মাস্ক তৈরি করার ধারণা জন্মায়। শিবের বন্ধু জানায়, “দু’মাস আগে আমার বাবা-মা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারা সবসময় মাস্ক পরে খুব অস্বস্তি বোধ করছিলেন। কিন্তু শিব যখন এই ধারণাটি নিয়ে আসে, তখন আমার বোন দুর্গা ভবানী এই মাস্কটি ডিজাইন করতে শিবকে সহায়তা করেছিল। তারপর মাস্কটি শিব বানিয়ে ফেললে আমার বাবা-মাই প্রথম এই “বৈদ্যুতিক নেবুলাইজার মাস্ক”-র পরীক্ষামূলক ব্যবহার করেছিলেন। আমরা সবাই-ই মাস্কটি ব্যবহার করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিলাম”
এমন একটি কার্যক্ষম মডেল নিয়ে আসা শিবের পক্ষে সহজ কাজ ছিল না। একটি “বৈদ্যুতিক নেবুলাইজার মাস্ক” তৈরি করতে ৬৩০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। কারণ পুরো পরিমাণটি নেবুলাইজার, আইভি পাইপ এবং ফিল্টারগুলিতে ব্যয় হয়। তবে শিব জানায়, “এই প্রকল্পে কাজ শুরু করার জন্য আমার কাছে কোনও টাকাও ছিল না। তবে, আমার বন্ধুরা কিরণ কুমার এবং আনুশা আমাকে সাহায্য করেছিল’।
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.