ভিক্টোরিয়াতে মমতাকে জয় শ্রী রাম বলাটা ব্যাকফায়ার করেছে! একের পর এক বোমা ফাটালেন প্রবীণ বিজেপি নেতা

বাংলার ভোটে মুখে থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। একের পর এক তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতার হার হয়েছে। যেখানে ১৯ এ হাঁফ ২১ এ সাফ এই স্লোগানে বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে সেখানে কার্যত ১০০টি আসন পেতে ঘাম ছুটে যান বঙ্গ বিজেপির।

তাতেও ৭৭টি আসন পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বঙ্গ বিজেপিকে। আর এই ফলাফলের পরেই দলের মধ্যেই কার্যত বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। মুখ খুলেছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথাগত রায়। তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

শুধু তাই নয়, নায়িকাদের প্রার্থী করা নিয়েও একের পর এক তোপ দেগেছেন তিনি।

এবার কার্যত দলে বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন বঙ্গ বিজেপির আদি নেতারা। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, বাংলা বা বাঙালির আবেগ না বুঝে যেভাবে রণনীতি করেছিলেন, এবং যেভাবে উগ্র হিন্দুত্বে শান দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলা। এমনটাই মত বিজেপির প্রবীন নেতাদের।

এবার সে পতে হেঁটেই দলের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি তথা আদি নেতাদের মধ্যে অন্যতম রাজকমল পাঠকের। কার্যত তথাগত রায়ের পথে হেঁটেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আক্রমন তাঁর।

রাজকমল পাঠকের মতে, বাঙালি সেন্টিমেন্ট বুঝতেই চায়নি কেন্দ্রীয় নেতারা। আর সেটাই বুমেরাং হয়েছে।

অন্যদিকে, মমতাকে জয় শ্রী রাম বলাও মানুষের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে বলে দাবি রাজকমল পাঠকের। শুধু তাই নয়, দলের বিরুদ্ধে কার্যত একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন তিনি। প্রবীণ এই বিজেপি নেতা বলেন, "মানুষ ভাবতে শুরু করে দিয়েছিল যে বিজেপি দলটা বাকিদের থেকে আলাদা।

কিন্তু যারা এ রাজ্যের দায়িত্বে ছিল, তাঁরা এই রাজ্যের ইতিহাস, ভূগোল বা রসায়ন কিছুই বোঝনি। তাঁরা এ রাজ্যে তৃণমূল নেতাদের দলে আনল। এতে মানুষের ধারণাটাই বদলে গেল।"

অভিমানের সুরে তিনি আরও জানান, "আমাদের মতো পুরনো নেতাদের ফোনও পর্যবেক্ষরা তুলতেন না। আসন বণ্টন নিয়েও কোনও আলোচনা হয়নি। বিস্ফোরক অভিযোগ তাঁর। বিজেপি নেতার মতে, পরিষ্কার মানুষদের প্রার্থী করলে কিন্তু ২০০-র উপর আসন আসত। বাংলার ভোট প্রচারে একাধিকবার বাংলায় এসেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। যতবার তাঁরা এসেছেন হিন্দিতে কথা বলেছেন।

অন্যদিকে, বিজেপি নেতাদের একাধিকবার 'বহিরাগত' তত্ত্ব খাড়া করেছিল তৃণমূল। এই নেতার মুখেও শোনা গিয়েছে একই সুর। তিনিও আঙুল তুলেছেন বাইরের নেতাদের অতিরিত্ত মাতব্বরির দিকে।

রাজকমল বলেন, "এ বারের ভোটে বাইরের লোকেরা এসে এমন ভাব করল যেন বাঙালিরা কিছু নয়। বাঙালি কোনও নেতৃত্বের মুখকে সামনে আনা হল না। রাজস্থান, গুজরাটের লোকেরা ভোট পরিচালনা করল। তাঁরা এসে কীভাবে আমাদের জিততে শেখাবে?"

তৃণমূল সুপ্রিমোকে অনেক সময়ই 'জয় শ্রী রাম' শ্লোগানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন বিজেপির শীর্ষ নেতা থেকে কর্মীরাও। গত জানুয়ারি মাসে নেতাজির জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতেও এই ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু তাতে লাভ তো হয়নি, উল্টে সেটা 'বুমেরাং' হয়ে গিয়েছে বলে তিনি জানাচ্ছেন।

"বাঙালি সংস্কৃতি সবসময় আলাদা, এটা হিন্দি বলয় নয়। এখানে জয় শ্রী রাম বললে সবাই একত্রিত হয় না। বাঙালি অনেক উদার মানসিকতার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখার সময় এরা কিছু লোক নিয়ে গিয়ে জয় শ্রী রাম ধ্বনি দিচ্ছে। সেটাও আমাদের জন্য ব্যাকফায়ার করেছে", পষ্টাপষ্টি ভঙ্গিতে জানান রাজকমল।

More DILIP GHOSH News  

Read more about:
English summary
old bjp leaders of west bengal revolt against central bjp leaders