বর্ধমান: ভোটের ফল ঘোষণা পরবর্তী তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে পূর্ব বর্ধমানের সন্ত্রাস কবলিত জামালপুর পরিদর্শন করলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। স্থানীয় বিধায়কের অভিযোগ, রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট এই প্রতিনিধি দল।

ভোটের ফল ঘোষণার পরেই পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর বিধানসভার নবগ্রামে রাজনৈতিক সংঘর্ষ ছড়ায়। এই কেন্দ্র বামেদের হাত থেকে টিএমসির দখলে যায়। রাজনৈতিক সংঘর্ষে মারা যান কাকলী ক্ষেত্রপাল। সিপিআইএম তাকে নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করেছে। অপর দিকে বিজেপির দাবি মৃত কাকলী ক্ষেত্রপাল তাদের সমর্থক। সংঘর্ষে টিএমসির সমর্থক মারা যান।

জামালপুরের তৃণমূল বিধায়ক অলোক মাঝি বলেন, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলটি জাতীয় তপশীলি জাতি কমিশনের। তাঁদের রাজনীতি বিচার করা উচিত নয়। তাঁরা নবগ্রামে গেলেও মৃত তৃণমূল সমর্থক বিভাস বাগ, রায়নার সমসপুরের গণেশ মাঝির সম্পর্কে কোনও খোঁজখবরই নেননি। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ঘুরছে। এটা অত্যন্ত লজ্জার।

জাতীয় তপশীলি জাতি কমিশনের ৫ সদস্যের দলে ছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয় সাপলা, ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার, ডিরেক্টর অজিতকুমার সাহু। তাঁরা প্রথমেই যান জামালপুরের নবগ্রামে। সেখানে তপশীলি জাতি সম্প্রদায়ভুক্ত নিহত কাকলী ক্ষেত্রপালের বাড়িতে যান।

কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, কোনও রাজনীতির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক নেই। বাংলা থেকে ভোট পরবর্তী দলিত সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচারের ১৬০০ অভিযোগ জমা পড়েছে কেন্দ্রের কাছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা বাংলায় এসেছেন। কিছু ঘটনাস্থলও তাঁরা ঘুরে দেখছেন। নবগ্রামে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে খোঁজখবর না নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, নবগ্রামে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামে কথা বলার মত কোনও লোকই নেই। এব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন।

মৃত কাকলী ক্ষেত্রপালের স্বামী অনিল ক্ষেত্রপাল অসুস্থ অবস্থায় বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে নার্সিংহোমে দেখা করেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের।

বিজেপির অভিযোগ, ভোটের পর দলীয় সমর্থকদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাটের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের কাছে বাড়ি ছাড়াদের ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে এসে শান্তি স্থাপনের আবেদন জানিয়েছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। অভিযোগ পেয়ে বর্ধমান ১নন্বর ব্লকের মিলিকপাড়ায় সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান জেলাশাসক প্রিয়াংকা সিংলা, জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।

জেলার অপর রাজনৈতিক সন্ত্রাস কবলিত এলাকা মিলিকপাড়ায় গিয়ে সেখানের অত্যাচারিতদের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। তারা জানিয়েছেন, মিলিকপাড়ায় কেবলমাত্র দলিতদেরই অত্যাচার করা হয়েছে।

বর্ধমান জেলা পুলিশ জানিয়েছে, জামালপুরের নবগ্রামে রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত কাকলী ক্ষেত্রপাল এবং বিভাগ বাগের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় আবেদন জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের কাছে।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.