সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় : তিনি স্বাধীন। সবসময়েই উড়তে চেয়েছেন। না হলে। কবি গান থেকে কখনও অধ্যাপক তো কখনও ডেপুটি কালেক্টর। যখন যা মনে হয়েছে করেছেন স্বাধীন ভাবে। মাঝে লিখেছেন কবিতা। তিনি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়।

স্বাধীনচেতা বলেই তাঁর হাত থেকে বেরিয়েছে, ‘স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়, দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হায়, কে পরিবে পায়’র মতো লেখা।

১৮২৭ সালে জন্ম তাঁর। জন্ম ভিটে বাকুলিয়া নামক গ্রামে। পরিবারের আদি নিবাস হুগলীর গুপ্তিপাড়ায়। সেখানে রামেশ্বরপুরে থাকত তাঁর পরিবার। বাবার রামনারায়ণ এবং মা হরসুন্দরী দেবী। অল্প বয়সেই বাবাকে হারান। মামার বাড়িতে বড় হয়ে ওঠা রঙ্গলালের।

স্থানীয় পাঠশালা ও মিশনারী স্কুলে প্রাথমিক ও হাই স্কুল শিক্ষা গ্রহন করেন। কিছুদিন পড়াশোনা করেছিলেন মহসিন কলেজে। সেই সময়েই জ্ঞান অর্জন করেন ইংরেজি, সংস্কৃত এবং ওরিয়া কাব্য ও সাহিত্যে। জানা যায় কবি প্রথম জীবনে ছিলেন কবিগান গাইতেন। কবিগান লিখতেন। দলও তৈরি করেছিলেন। পরে প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক হন। অধ্যাপনা ছেড়েও দেন। চলে যান ওড়িশায়। সেখানে স্পেশাল ডেপুটি কালেক্টর হয়ে যান। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেছিলেন। ইংরেজদের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয়। কালেক্টরের চাকরি ছেড়ে দেন। লিখতে শুরু করেন।

তিনি মূলত স্বদেশপ্রেমিক কবি ছিলেন। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ মধ্যে পদ্মিনী উপাখ্যান, কর্মদেবী এবং শূরসুন্দরী। অ্যানাল্স অফ রাজস্থান থেকে কিছু অংশ তিনি পদ্মিনী উপাখ্যান লিখেছিলেন।

কালিদাসের সংস্কৃত কুমারসম্ভব পদ্যানুবাদ করেছিলেন। ঋতুসংহারের পদ্যানুবাদ করেন। সেটা ১৯৭২ সাল। এরপরে প্রকাশিত হয় নীতিকুসুমাঞ্জলি। এটি নীতি ও তত্ত্বমূলক কবিতার অনুবাদ ছিল। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে লেখেন কাঞ্চী কাবেরী। সেটি প্রাচীন ওড়িয়া কাব্যের অনুকরনে লেখা হয়েছিল।

‘উৎকল দর্পণ’ নামে ওড়িয়া সংবাদপত্র প্রকাশ করে উৎকল দর্পণ নামে সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এতে সেখানকার পুরাতত্ব ও ভাষা সম্পর্কে প্রবন্ধ লিখেছিলেন। বাংলায় প্রথম কলকাতার ইতিহাসের বই সম্ভবত তাঁর লেখা কলিকাতা কল্পলতা বইটি।

১৮৮২ সালে রঙ্গলাল সম্পাদনা করে প্রকাশ করেছিলেনন মুকুন্দরামের “কবিকঙ্কন চন্ডী”। ভেক-মূষিকের যুদ্ধ(১৮৫৮), হোমারের কাব্যের অনুবাদ তাঁর অন্যতম সেরা সৃষ্টি।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.