সরকারি ‘বিধি এবং রীতি’ ভেঙে একতরফা সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের
এদিন চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন যে, সরকারি ‘বিধি এবং রীতি' ভেঙে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে শীতলখুচি-সহ কোচবিহারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল। শুধু তাই নয়, রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের ১৯৯০ সালের ‘ম্যানুয়্যাল অফ প্রোটোকল অ্যান্ড সেরিমনিয়্যালসে'র পরিপন্থী। ধনখড়কে মনে করান মমতা। একই সঙ্গে তাঁর দাবি,‘সরকারি নীতি এবং রীতি' অনুযায়ী এ বিষয়ে রাজ্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের কমিশনার ও জেলা শাসককে বিষয়টি জানানো প্রয়োজন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি বলেও অভিযোগ মমতার। সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়াতে বিষয়টি জানিয়েছেন রাজ্যপাল। যা প্রোটোকলের পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন মমতা।
কয়েক দশকের প্রোটোকল ভাঙা হয়েছে
চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ১৩ মে রাজ্যপাল যে কোচবিহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে কয়েক দশকের প্রোটোকল ভাঙা হয়েছে। মমতার চিঠি অনুযায়ী, 'রাজ্যপাল যদি কোনও জেলা সফর করতে চান, সেই বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপালের সচিব। সফরের আগে রাজ্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন সচিব। কিন্তু শীতলকুচি সফরের ক্ষেত্রে সে্ প্রোটোকল ভাঙা হয়েছে বলেই অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর দাবি, প্রোটোকল মেনেই সফর করতে হবে রাজ্যপালকে। এভাবে কখনই রাজ্যপাল সফর করতে পারেন না বলে অভিযোগ।
কোচবিহার যাচ্ছেন রাজ্যপাল
কোচবিহারের শীতলকুচি যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বৃহস্পতিবার শীতলকুচি যাবেন তিনি। এই বিষয়ে ট্যুইট করে বিস্তারিত জানিয়েছেন রাজ্যপাল ধনখড়। টুইটে তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৩ মে বিএসএফের হেলিকপ্টারে হিংসা কবলিত অঞ্চলগুলি পরিদর্শনে যাবেন। শীতলকুচি সহ কোচবিহারের বিভিন্ন হিংসাবিধ্বস্ত অঞ্চলেও যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। ট্যুইটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করেছেন রাজ্যপাল। যদিও এখনও প্রশাসনের তরফে কিছু জানানো হয়নি। উল্লেখ্য, ১০ তারিখ থেকে শিরোনামে শীতলকুচি। ভোট চলাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় চারজনের। এরপর থেকেই সংবাদ শিরোনামে সেই এলাকা। কিন্তু এই চিঠির পর রাজ্যপাল কোচবিহার যাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
প্রথম থেকেই সংঘাত!
রাজ্যপালের এই সফর ঘিরে প্রথম থেকেই তৈরি হয়েছিল জটিলতা। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস কবলিত এলাকাগুলিতে নিজেই যাবেন বলে জানিয়ে ছিলেন রাজ্যপাল। সেজন্যে রাজ্যের কাছে হেলিকপ্টার চান তিনি। কিন্তু এই বিষয়ে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে রাজ্যের বিরুদ্ধে। এরপরেই সেনার কাছে হেলিকপ্টার চান তিনি। আর সেই কপ্টারেই সত্রাস কবলিত এলাকায় যাওয়ার কথা রয়েছে।
মন্ত্রিসভার শপথের দিনেই ‘হিংসা’ খোঁচা রাজ্যপালের
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা এবং ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছে রাজ্যপাল। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান জগদীপ ধনখড়। পরে দফতর বণ্টন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠান শেষেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল। উদ্বেগের সুরে তিনি বলেছেন, ‘হিংসাদীর্ণ এলাকা পরিদর্শনে যাবেন।‘ রাজ্যপালের অভিযোগ, ‘ভোট পরবর্তী হিংসা থামাতে মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্যদের বললেও কোনও পদক্ষেপ হয়নি। রিপোর্ট পাঠায়নি ডিজি-স্বরাষ্ট্র সচিব।‘ তাঁর আক্ষেপ, ‘ভোটদানের অধিকার অক্ষুন্ন রেখে প্রাণ দিতে হচ্ছে রাজ্যবাসীকে।‘তাঁর মন্তব্য, ‘আপনাদের ভোট যদি মৃত্যু, সম্পত্তিহানি এবং নৈরাজ্যের কারণ হয়, তাহলে বুঝতে হবে গণতন্ত্র শেষের দিকে।‘