নয়াদিল্লি: করোনা চিকিৎসায় এখন নতুন দিশা দেখাচ্ছে আইভারমেক্টিন। কোভিড পজিটিভ হলেই এই অ্যান্টি-প্য়ারাসাইটিক ড্রাগ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। গোয়া সরকার ইতিমধ্য়েই ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যাদের বয়স তাদের লক্ষ্মণ নির্বিশেষে এই ওষুধ খেতে বলেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। American Journal of Therapeutics-এ একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে নিয়মিত এই ওষুধের ব্যবহার করোনার ঝুঁকি কমায়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমাদের কি আইভারমেক্টিন ব্যবহার করা উচিত?

আইভারমেক্টিন কী?
পরজীবী থেকে হওয়া সংক্রমণ এড়াতে ব্যবহৃত হয় আইভারমেক্টিন। ১৯৮০ থেকে এই ড্রাগের ব্যবহার হচ্ছে। মূলত ক্রিম বা লোশন আকারে এই ওষুধ পাওয়া যায়। তবে আইভারমেক্টিনকে ট্যাবলেট হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA)। অন্ত্রের স্ট্রাইলোইডিসিস এবং অঙ্কোসকার্সিয়াসিস (রিভার ব্লাইন্ডনেস) রোগের চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহার হয়। এছাড়া চুলকানি কমাতেও এই ড্রাগ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। তবে করোনা প্রতিরোধের জন্য এই ওষুধকে অনুমোদন দেয়নি FDA।

কী বলছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা?
যাঁদের করোনা উপসর্গ কম বা নেই, ও যাঁরা বাড়িতেই আইসোলেশনে রয়েছেন তাঁদের আইভারমেক্টিন ট্যাবলেট (200 mcg/kg) ব্যবহার করার কথা বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। খালি পেটে দিনে একবার এই ট্যাবলেট খেতে হবে। জ্বর আয়ত্তে না এলে ৩ থেকে ৫ দিন এই ওষুধ খাওয়া যাবে। সাংবাদিক বৈঠকে এইমস ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া বলেছেন, “যাঁদের উপসর্গ কম তাঁদের কোনও ওষুধ প্রয়োজন নেই। গুটিকয়েক তথ্য অনুযায়ী তাঁরা আইভারমেক্টিন বা হাইড্রোক্লোরোকুইন নিতে পারেন। কিন্তু বেশি ওষুধ খাওয়ার দরকার নেই।” এদিকে গোয়া সরকার ১৮ বছরের ঊর্ধ্বদের এই ওষুধ খেতে বলেছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বজিৎ রানে বলেছেন, এই ওষুধ করোনা প্রতিরোধ করতে পারে না। কিন্তু তার প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে। ব্রিটেন, আমেরিকা, জাপান ও জার্মানির মতো দেশে দেখা গিয়েছে এই ওষুধ খাওয়ার ফলে মৃত্যুহার অনেকটাই কমে গিয়েছে। করোনা সংক্রমণও অনেক কম হচ্ছে। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (IMA) ড. বিনায়ক বুভাজি আবার বলেছেন, মাত্র ৫ দিন আইভারমেকটিন খেলে কোনও লাভ হবে না। প্রথম, তৃতীয় ও সপ্তম দিন এই ট্যাবলেট খেতে হবে। তারপর সপ্তাহে একবার করে এর ডোজ নিতে হবে। যাঁদের দেহের ওজন ৬০ কিলোগ্রামের কম তাঁদের ১২ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট ও যাঁদের ওজন ৬০ কিলোগ্রামের বেশি তাঁগের ১৮ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্যা স্বামীনাথন টুইট করে জানিয়েছেন, “কোনও নতুন ওষুধের ক্ষেত্রে সুরক্ষা ও কার্যকরিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ছাড়া আইভারমেক্টিন প্রয়োগে সায় নেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।” একই কথা জার্মান স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান সংস্থা মার্কেরও।

আইভারমেক্টিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
FDA জানিয়েছে এই ওষুধের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ত্বকে ব়্যাশ বের হওয়া, বমি বমি ভাব, বমি হওয়া, ডায়ারিয়া, পেটে ব্যথা, মুখ বা দেহের কোনো অংশে ফোলা ভাব, নিউরোলজিক্যাল সমস্যা- যেমন মাথা ঘোরা, খিঁচুনি ইত্যাদি, রক্তচাপ হ্রাস, পাওয়া ত্বক ফুসকুড়ি ইত্যাদি। এছাড়া লিভারের সমস্য়াও দেখা দিতে পারে। এগুলি বাড়াবাড়ি হলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.