জমা জলে কলকাতার রাস্তায় ভয়ঙ্কর ছবি! রাজভবনের সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত ১

দুপুরেই আঁধার নামল শহরে! চারপাশ জুড়ে অন্ধকার। দুপুরেই জ্বলে উঠল গাড়ির আলো। মঙ্গলবার সকালেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল আলিপুর হাওয়া অফিসের তরফে। সেই মতো কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি শুরু হয়। একেবারে মুষলধারে শুরু হয় বৃষ্টি।

সঙ্গে বয়ে যায় দমকা হাওয়াও। প্রায় ঘন্টা দুয়েক লাগাতার বৃষ্টি চলে কলকাতা এবং শহরতলিতে। যার জেরে জলমগ্ন গোটা কলকাতা। কোথায় কোথায় হাঁটু জল। এই অবস্থায় উঠে এল ভয়ঙ্কর ছবি।

রাজভবনের সামনে ভাসছে দেহ

অফিস থেকে ফেরার সময় রাজভবনের সামনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত হল এক ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় উঠে এল ভয়ঙ্কর এক ছবি। দীর্ঘক্ষণ ওই মৃত ব্যক্তির দেহ জমা জলেই ভাসতে দেখ গেল। ঘটনার দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। দুপুর থেকে টানা বৃষ্টি। সেই জল ঠেলেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে অফিস ফেরত যাত্রীদের। মৃত ওই ব্যক্তিকেও ফিরতে হচ্ছিল সে ভাবেই। পুলিশের অনুমান, রাজভবনের সামনে থাকা ল্যাম্পপোস্ট ছুঁতেই বিপত্তি ঘটে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রাস্তায় পড়ে যান ওই ব্যক্তি। সেখানেই মৃত্যু হয় বলে দাবি। দীর্ঘক্ষণ ওই জমা জলেই পড়ে থাকে নিথর দেহ। খোদ রাজভবনের সামনে এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে বিদ্যুৎ বিভাগ।

প্রবল বৃষ্টিতে জলগ্ন শহর

প্রবল বৃষ্টির জেরে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় জল জমে গিয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, ঠনঠনিয়াতে বৃষ্টিপাতের পরিমান ৮৭.৯ মিমি, চিংড়িঘাটায় ৬৭.৫ মিমি,বীরপাড়াতে ৬০.৮ মিমি,পালমার ব্রিজে ৬৩.৬ মিমি,ধাপাতে ৮৬ মিমি, দত্তাবাগানে ৮২ মিমি, তপসিয়াতে ৫৫ মিমি, উল্টোডাঙাতে ১০৬ মিমি, মানিকতলাতে ৭৭ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।। প্রবল এই বৃষ্টিপাতের কারণে শহরের একাধিক জায়গাতে জল জমে যায়। কোথাও হাঁটু সমান জল জমে। তো আবার কোথাও কোমর সমান। যদিও এই অবস্থায় সব পাম্পিং স্টেশন খুলে দেওয়া হয়েছে। জল নামতে তিন-চার ঘন্টা লাগবে। এমনটাই মনে করছে পুরসভা।

মাঠে বাজ পড়ে মৃত এক

মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার পুঠিমারী মাঠে বাজ পড়ে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মৃতের নাম নাজির হোসেন (৩৫)। ঘটনার খবর পেয়েই মৃতের বাড়ি যান সামশেরগঞ্জের বিডিও কৃষ্ণচন্দ্র মুন্ডা এবং বিদায়ী বিধায়ক আমিরুল ইসলাম। ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

আরও ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস

মঙ্গলবার সকালে দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘন্টায় উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলারই কোথাও না কোথাও বজ্রবিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে। ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।তবে দিন কয়েক দিনের তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না। উত্তরবগের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের জন্যে মঙ্গলবার সকালে দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে আগামী ২৪ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদে ঘন্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। অন্য জেলাগুলিতে শুধুমাত্র ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সেই মতো দুপুরেই পর থেকেই ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়