শুরুটা হয়েছিল ২০১৯-এর শুরুতে
রাজ্যে দলবদলের পালে হাওয়া লেগেছিল ২০১৯-এর শুরুতে। সেই সময় মুকুল রায়ের হাত ধরে উত্তরে নিশীথ প্রামাণিক থেকে শুরু করে দক্ষিণে অর্জুন সিং, অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। সেই সময় তাঁদের সঙ্গে থাকা মাঝারি-ছোট নেতারাও যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে একাধিক পুরসভা, জেলা পরিষদ রাতারাতি বিজেপির দখলে চলে আসে। এর বেশিরভাগটা তৃণমূল পুনরুদ্ধার করলেও কোথাও একটা প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়েছিল। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০১৯-এর মে-জুন মাসের পর থেকে বিজেপির পালে হাওয়া লাগে। যা প্রবল হয় ২০২০-র ডিসেম্বর থেকে। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অনেকেই বিজেপিতে যোগ দেন।
একের পর এক বিজেপি প্রার্থীর হার
নির্বাচনের মাসগুলিতে দলবদলের কথা শোনা যায়নি। আর ফল বেরনোর পরে দেখা গেল, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া একের পর এক প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল উত্তর ২৪ পরগনা। কেননা এই জেলাই হল মুকুল রায়ে এবং অর্জুন সিং-এর। হেরে যাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, বীজপুর থেকে মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়, নোয়াপাড়া থেকে অর্জুন সিং-এর আত্মীয় সুনীল সিং, খড়দহে শীলভদ্র দত্ত। পরাজিতদের তালিকায় রয়েছেন কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া পারিনাহাটির প্রার্থী সন্বয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এবার দলবদলের হাওয়া উল্টোদিকে
নির্বাচনের ফল বেরনোর পরে সন্ত্রাস একটু কমতেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া অনেকেই তৃণমূলে ফেরার চেষ্টা করছেন বলে জানা গিয়েছে। হেরে যাওয়া একাধিক বিজেপি প্রার্থী দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। অনেকে আবার স্থানীয়ভাবে নিজেদের গা থেকে বিজেপির নামাবলীও সরিয়ে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই।
হতাশ বিজেপি প্রার্থী
এবারের নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়ে হেরে হতাশ সুনীল সিং। সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি বলেছেন, নিজের ভুল সিদ্ধান্তের কথা। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, দলবদল করলেও, সবার সঙ্গেই তাঁর ভাল সম্পর্ক। তিনি জানেন, এখন ফিরতে চাইলেও, তা চট করে হওয়ার মতো নয়। কেননা সেখানে তৃণমূলের নেতৃত্বের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ব্যাপার রয়েছে।
ফেরানোর বিরুদ্ধে অনেকেই
তবে বিভিন্ন এলাকার নিচুতলার তৃণমূল কর্মীরা বিজেপিনেতাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে সব থেকে বেশি সরব হয়েছেন। তাঁরা বলছেন, ভোটের আগে দলকে খারাপ অবস্থায় ফেলে যাঁরা চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের এই মুহূর্তে শিক্ষা দেওয়া সময়। আর নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের মতো তৃণমূল নেতারা বলছেন, তাঁর সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন, বিষয়টি তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাবেন। দলের নিচুতলার কর্মীদের কথাও তিনি সেখানে তুলে ধরবেন।