শীতলকুচির ঘটনাকে ফের গণহত্যা বললেন মমতা! বাহিনীকে তলব করার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন কৈলাশের

ক্ষমতার মসনদে বসেই কথা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। উল্লেখ্য, চতুর্থ দফায় ১০ এপ্রিল ভোট ছিল শীতলকুচিতে। সেখানকার জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথে সকালে ব্যাপক গণ্ডগোল হয়। সেই সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালায়। আর তাতে চার জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিআইডি তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দেন।

ঘটনার প্রকৃত সত্য সামনে তুলে আনা হবে বলে আশ্বাস দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পরেই শীতলকুচির ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি। তদন্তে কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তলব করা নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিজেপি।

বাহিনীকে তলব করার অধিকার নিয়ে প্রশ্ন কৈলাশের

কেন গুলি চালাতে হয়েছিল? পরিস্থিতি কি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে গুলি চালানোর প্রয়োজন হয়েছিল? এমনই একগুচ্ছ প্রশ্নের তালিকা নিয়ে তৈরি সিআইডি। শীতলকুচির তদন্তে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তলব করেছে সিআইডি। বাহিনীর ছয়জনকে তলব করা হয়েছে। আর এই পদক্ষেপ ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এভাবে তলব করা যায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এদিন তিনি এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই বাহিনীর জওয়ানদের তলব করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কৈলাশের দাবি, এভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের তলব করার অধিকার নেই। বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের নজরে আনার কথা জানিয়েছেন এই বিজেপি নেতা

মুখ খুলেছেন দিলীপ ঘোষ

কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ভয় দেখানো হচ্ছে। বাহিনীকে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে এমনটাই অভিযোগ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তিনি এদিন বলেন, ইছাকৃত ভাবে তাঁদের হেনস্তা করা হচ্ছে। এভাবে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তবে এভাবে চলতে থাকলে আগামিদিনে বাহিনী বাংলায় এসে কাজ করতে ভয় পাবে বলে মনে করেন দিলীপ ঘোষ। ফলে এই বিষয়ে অবশ্যই আইন-নিয়ম মেনে কাজ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

গণহত্যা বলে ফের দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী

শীতলকুচির ঘটনাকে আজ সোমবার ফের গণহত্যা বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, কিছু ফেক ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে, যারা সরকারের জয়টাকে মেনে নিতে পারছে না। নাম না করে এভাবেই ফের একবার বিজেপিকে আক্রমণ করেন তিনি। মমতা বলেন, বলছে কোথায় জেনোসাইড হল দেখতেই পেলাম না, আর জেনোসাইড তো হয়েছি শীতলকুচিতে। আর তো কোথাও হয়নি। দাবি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের। উল্লেখ্য, শীতলকুচির ঘটনার পরেই এই ঘটনার জন্যে সরাসরি অমিত শাহকে দায়ী করেন মমতা। একই সঙ্গে গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাঁদের কাউকে ছাড়া হবে না হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জনকে তলব করল সিআইডি

শুধু রাজ্য পুলিশই নয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও জেরা করবে তদন্তকারী আধিকারিকরা। ২ অফিসার-সহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জনকে তলব করল সিআইডি। কাল মঙ্গলবারই ভবানী ভবনে তাঁদের হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভার্চুয়ালি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু বাহিনীর সেই আবেদন নাকচ করে দেয় সিআইডি। কী কারণে গুলি চালানো হয়েছিল, তা জানতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিআইডি। পরিস্থিতি কি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়? এমনই কিছু বাহিনীকে প্রশ্ন সিআইডি করতে পারে বলে খবর।

মাথাভাঙার আইসিকে জিজ্ঞাসাবাদ সিআইডির

শীতলকুচি গুলিকাণ্ডে আজ সোমবারই মাথাভাঙার আইসিকে তলব করে সিআইডি। এর পাশাপাশি ভবানী ভবনে তলব করা হয় মাথাভাঙা থানার দুই এএসআই সুব্রত মণ্ডল ও রাফা বর্মনকে। এর মধ্যে সুব্রত মণ্ডল নির্বাচনের দিন ক্যুইক রেসপন্স টিমের দায়িত্বে ছিলেন। ওই পুলিশ অফিসারই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাস্তা চিনিয়ে শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে নিয়ে যান। কার নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে যাওয়া হয়, কী পরিস্থিতিতে শীতলকুচির ওই বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালায়, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে মাথাভাঙা থানার ওই পুলিশ অফিসারকে। অন্যদিকে এএসআই রাফা বর্মন ভোটের দিন সেক্টর অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। কেন বাহিনী গুলি চালায় সেটাই খুঁজে বার করাটা মূল চ্যালেঞ্জ সিআইডির কাছে।