ভ্যাকসিন কর্মসূচি তীব্র হয়ে ওঠে এপ্রিলে
যদিও এপ্রিল মাস থেকে দেশবাসী কোভিড কেস বৃদ্ধির সাক্ষী হতে শুরু করে এবং এই সময় ভারতের জনসংখ্যার দ্রুত টিকাকরণের প্রয়োজনীয়তা কোভ্যাক্স কর্মসূচিকে তীব্রতর করে তোলে। এখন আফ্রিকার দেশগুলি ২০২১ সালের মধ্যে ৩০-৩৫ শতাংশ জনসংখ্যাকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এখন এই মতামত প্রকাশ করেছেন যে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রপ্তানির জন্য আরও অনেক পরিকল্পনা করা উচিত ছিল কেন্দ্রের। নির্মাতাদের সঙ্গে অগ্রিম ক্রয়ের চুক্তি করা হয়নি এবং তরলতা উৎপাদন বৃদ্ধির অনুমতি না দেওয়ায় জাতীয় জনসংখ্যাকে টিকাকরণ করাতে ভ্যাকসিনের ঘাটতির বিষয়গুলি আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ভাইরোলজিস্ট শাহিদ জামিলের মতে, রপ্তানি ও গার্হস্থ্য চাহিদা উভয়ই টিকিয়ে রাখতে আরও চিন্তা করা উচিত ছিল।
কেন্দ্র আগাম অর্ডার দিতে দেরি করে
২০২০ সালের ডিসেম্বরে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া ইতিমধ্যেই আভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য ১০ কোটি শট অত্যন্ত কম দামে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। অন্যদিকে ২০২১ সালের জুলাইয়ের মধ্যে কেন্দ্রের লক্ষ্য অনুযায়ী দুর্বল জনগোষ্ঠীর ৩০ কোটিকে টিকাকরণ করার লক্ষ্য পূরণ করতে হবে কিন্তু সরকার আগাম ক্রয়ের অর্ডার দিতে ব্যর্থ হয়। অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে এই দেরি হোয়ার কারণে ডিসেম্বরে ৫ কোটি থেকে মার্চে ১০ কোটি উৎপাদন ও ভ্যাকসিন মজুতের পরিকল্পনাও পিছিয়ে যায় সিরামের।
রপ্তানি হয়েছে বেশি দেশের বাইরে
জনস্বাস্থ্য উপদেষ্টা প্রাইভি জানিয়েছে যে ৩০ কোটি মানুষকে টিকাকরণ করাতে হলে ৬৫ কোটি ভ্যাকসিন ডোজের প্রয়োজন রয়েছে এবং ১৫ কোটি আসছে ভারত বায়োটেক থেকে এসআইআইযের প্রতি মাসে প্রয়োজনীয় ডোজ সরবরাহে লড়াইয়ের সম্মুখীন হতে হয়, আর তাই রপ্তানির কোনও সুযোগ হয়নি। তবুও মার্চ পর্যন্ত ভারত নিজের দেশের মানুষের চেয়ে বিদেশে ভ্যাকসিন রপ্তানি বেশি করেছে। ১৬ জানুয়ারি টিকাকরণ শুরু হওয়ার পর কেন্দ্রের কৌশল অনুযায়ী, ভারত ৩৯ লক্ষ ফ্রন্টলাইন কর্মীদের প্রথম ২ সপ্তাহে টিকা দিয়েছে, জানুয়ারির শেষের দিককে ১.৬ কোটি ভ্যাকসিন রপ্তানি হয়েছে। ১ এপ্রিল, যেদিন থেকে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে নাগরিকদের টিকাকরণ শুরু হয় সেই সময় ভারত ৬.৫ কোটি শট রপ্তানি করেছে।
ভ্যাকসিন ঘাটতির জন্য কমেছে টিকাকরণ
২০২১ সালের জুলাই আসতে তিনমাসেরও কম সময় রয়েছে হাতে আর ভারত মাত্র ২৫ শতাংশের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে। ভ্যাকসিন ঘাটতির জন্য এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে দৈনিক ৩৫ লক্ষ থেকে কমে তা এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে দৈনিক ২১ লক্ষে এসে নেমেছে। মে মাসেও তা আরও কমে দৈনিক ১৬ লক্ষ ডোজ ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ভ্যাকসিন মজুতে সময় লাগবে
ভ্যাকসিন মজুত করার জন্য হয়ত সময় লাগতে পারে। কোভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই তাদের উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে এবং এপ্রিলের মধ্যে ২ কোটি ডোজ তৈরি করে ফেলেছে এবং জুনের মধ্যে সাড়ে তিন কোটি ডোজ উৎপাদনের আশা রাখছে। জুলাইয়ের মধ্যে কোভিশিল্ডও ১০ কোটি শট তৈরি করার আশা দিয়েছে। এরই মধ্যে রাশিয়ার একক ডোজের ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভারতে চলে আসলেও, তা জুনের আগে উপলব্ধ নয়।