মাথাভাঙা থানার আইসিকে দফায় দফায় জেরা! গুলি চালানোর কারণ খুঁজতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জনকে তলব সিআইডির

ক্ষমতার মসনে বসেই কত্যহা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। উল্লেখ্য, চতুর্থ দফায় ১০ এপ্রিল ভোট ছিল শীতলকুচিতে। সেখানকার জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথে সকালে ব্যাপক গণ্ডগোল হয়। সেই সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালায়। আর তাতে চার জনের মৃত্যু হয়।

এই ঘটনার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিআইডি তদন্ত করা হবে বলে আশ্বাস দেন। ঘটনার প্রকৃত সত্য সামনে তুলে আনা হবে বলে আশ্বাস দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার পরেই শীতলকুচির ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি।

মাথাভাঙার আইসিকে জিজ্ঞাসাবাদ সিআইডির

শীতলকুচি গুলিকাণ্ডে আজ সোমবারই মাথাভাঙার আইসিকে তলব করে সিআইডি। এর পাশাপাশি ভবানী ভবনে তলব করা হয় মাথাভাঙা থানার দুই এএসআই সুব্রত মণ্ডল ও রাফা বর্মনকে। এর মধ্যে সুব্রত মণ্ডল নির্বাচনের দিন ক্যুইক রেসপন্স টিমের দায়িত্বে ছিলেন। ওই পুলিশ অফিসারই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাস্তা চিনিয়ে শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে নিয়ে যান। কার নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিয়ে যাওয়া হয়, কী পরিস্থিতিতে শীতলকুচির ওই বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালায়, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে মাথাভাঙা থানার ওই পুলিশ অফিসারকে। অন্যদিকে এএসআই রাফা বর্মন ভোটের দিন সেক্টর অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। কেন বাহিনী গুলি চালায় সেটাই খুঁজে বার করাটা মূল চ্যালেঞ্জ সিআইডির কাছে।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জনকে তলব করল সিআইডি

শুধু রাজ্য পুলিশই নয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও জেরা করবে তদন্তকারী আধিকারিকরা। ২ অফিসার-সহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জনকে তলব করল সিআইডি। কাল মঙ্গলবারই ভবানী ভবনে তাঁদের হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভার্চুয়ালি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু বাহিনীর সেই আবেদন নাকচ করে দেয় সিআইডি। কী কারণে গুলি চালানো হয়েছিল, তা জানতেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিআইডি। পরিস্থিতি কি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়? এমনই কিছু বাহিনীকে প্রশ্ন সিআইডি করতে পারে বলে খবর।

সিট গঠন করে সিআইডি

ইতিমধ্যে শীতলকুচির ঘটনায় সিট গঠন করেছে সিআইডি। ডিআইজি সিআইডি-র নেতৃত্বে চার সদস্যের সিট গঠন করেছে সিআইডি। আর এই স্পেশাল টিম অর্থাৎ সিট শীতলকুচির ঘটনার তদন্ত করবে। গত বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত তদন্তের জন্যে স্পেশাল টিম তৈরি করে। এরপরেই মাথাভাঙা থানার তদন্তকারী অফিসার মলয় বোসকে তলব করে সিআইডি নেতৃত্বাধীন সিট। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, কেনই বা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গুলি চালাতে হল সমস্ত বিষয়ে তদন্তকারীরা অফিসারের কাছ থেকে সিট জানার চেষ্টা করে বলে জানা যাচ্ছে।

দুটি এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত করবে সিআইডি

ঘটনার পরেই মাথাভাঙা থানায় দুটি মামলা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে একটি মামলা দায়ের করা হয়। বুথের বাইরে জড়ো হওয়ার কারণে গুলি চালাতে বাধ্য হয় বাহিনী। এই সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের হয়। পালটা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও গ্রামবাসীরা একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেখানে বাহিনীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। আপাতত দুটি মামলাকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে সিআইডি। জানা যাচ্ছে, প্রয়োজনে সেই সময় বাহিনীর কর্তব্যরত জওয়ানদেরও তলব করা হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।

বাহিনীকে ভয় দেখানোর অভিযোগ

বাহিনীকে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে এদিন অভিযোগ করেছেন দিলীপ ঘোষ। আর এভাবে ভয় দেখানো হলে বাহিনী আগামিদিনে বাংলায় কাজ করতে আসবে না বলে এদিন অভিযোগ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। অন্যদিকে, শীতলকুচির ঘটনাকে আজ সোমবার ফের গণহত্যা বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, কিছু ফেক ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে, যারা সরকারের জয়টাকে মেনে নিতে পারছে না। বলছে কোথায় জেনোসাইড হল দেখতেই পেলাম না, আর জেনোসাইড তো হয়েছে শীতলকুচিতে। আর তো কোথাও হয়নি। তাহলে কেন নোংরা প্রচার করা হচ্ছে? প্রশ্ন তোলেন এদিন মমতা।