গুয়াহাটিঃ সব জল্পনায় ইতি টেনে অবশেষে অসমের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন হেমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। রবিবার দলীয় বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সাথে আজ সার্বানন্দ সনোয়াল অসমের রাজ্যপাল জগদীশ মুখীর কাছে পদত্যাগ জমা দিয়েছেন। অসমের জনপ্রিয় মুখ হেমন্ত বিশ্বশর্মা দীর্ঘদিন ধরেই এই পদটির দাবিদার ছিলেন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে কংগ্রেস থেকে উঠে আসা শর্মাকে দল মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বলে জানা যায়। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল সোমবারই শপথ নিতে পারেন তিনি।

একুশে বাংলা সহ অসম, কেরল, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরিতে মিটেছে বিধানসভা ভোট পর্ব। ঘোষিত হয়েছে নির্বাচনের ফলাফলও। এবার একে একে শপথ গ্রহণের পালা। সেই মত প্রায় বাকি সব রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী চূড়ান্ত হলেও, ফলাফল ঘোষণার সাত দিন পরেও মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি অসম। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ফের ক্ষমতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রী হবেন এমনটাই দস্তুর। কিন্তু অসমের ক্ষেত্রে সেই রীতিতে বদল ঘটার সম্ভবনা ছিল প্রবল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে এগিয়ে আছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল (Sarbananda Sonowal) এবং হেমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। গতকালও তাঁদের দুজনকেই দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

বিশেষজ্ঞ মহলের তখনই আন্দাজ করেছিল, তাঁদের পরস্পরকে মুখোমুখি বসিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। ঠিক সেটাই হল। অসমের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী (Assam CM) হিসেবে চুড়ান্ত করা হল রাজ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মার নামই। অন্যদিকে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালকে কেন্দ্রে কোনও পদ দিতে পারে বিজেপি। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত বিজেপি সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে। আজ দুপুরেই দলীয় বিধায়কদের মাধ্যমে সিলমোহর পড়ে তাতে।

গতকাল দিল্লিতে অমিত শাহ – জেপি নাড্ডার সাথে এই দুই হেভিওয়েট মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ম্যারাথন বৈঠকের হয়। সেখানেই সনোয়ালকে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ব্যাপারে রাজি করিয়ে ফেলেন নাড্ডা-শাহরা। সেই মত আজ রবিবার গুয়াহাটির লাইব্রেরি অডিটোরিয়ামে বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠক। সেই বৈঠকে বিজেপি বিধায়করা নিজেদের নেতা হিসেবে হেমন্তকেই নির্বাচন করবেন বলে আগেই সুত্র মারফত খবর ছিল। সুতরাং অসমের (Assam) বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী সনোয়াল, যিনি নির্বাচনী বৈতরণী উতরে দিলেন, সেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসলেন না। জানিয়ে দি, হেমন্ত বিশ্বশর্মার জনপ্রিয়তাও কম নয়। গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের NDA-কে একজোট করার পিছনে অন্যতম ব্যক্তিত্ব তিনি। তাঁকে সনোয়ালের থেকেও প্রভাবশালী বলে মনে করা হয় সেখানে। তাই বিশ্বশর্মাও মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে শুরু থেকেই অনেকটা এগিয়ে ছিল।

হেমন্ত বিশ্বশর্মা ও সর্বানন্দ সনোয়ালের মধ্যেকার ঠান্ডা যুদ্ধের কথা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছে অজানা নয়। ভোটের প্রাক্কালে বিশ্বশর্মাকে একাধিকবার বলতে শোনা গিয়েছে যে, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অর্থাৎ সেখানে কোনও মুখ্যমন্ত্রীর পদপ্রার্থী ছাড়াই ভোট যুদ্ধ হয়েছে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে। এমন টানাপোড়েনের মধ্যে শনিবার দিল্লিতে ডাকা হয়েছিল এই দুই হেভিওয়েট মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীকে। একদিকে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ না থাকা এবং অন্যদিকে হেমন্ত বিশ্বশর্মা বিজেপির গোটা উত্তরপূর্ব ভারত একজোট করার অন্যতম কারিগর হয়ে ওঠা। ফলত তাঁদের দুজনই মুখ্যমন্ত্রীর আসনের দাবিদার ছিল! কিন্তু সেই টানাপড়েন অবসান ঘটল আজই। নতুন মুখ্যমন্ত্রী পেল অসম।

প্রসঙ্গত, ১২৬ বিধানসভা আসন বিশিষ্ট অসমে শরিকদলকে নিয়ে বিজেপি জিতেছে ৭৫টি সিট এবং AIIUDF, কংগ্রেস এবং বাম শিবির একত্রে জিতেছে ৫০টি সিট। অন্যদিকে মাত্র একটি সিট জিতেছে অখিল গগৈ। যিনি এখন জেল বন্দী।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.