সংগঠন আর মানুষের সেবা, দুয়ের যুগলবন্দীতেই অসমের মসনদে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা
সংগঠন আর মানুষের সেবা, এই দুয়ের যুগলবন্দীতে হিমন্ত বিশ্বশর্মার গগণচুম্বী খ্যাতির ধারেকাছে আর কোনও শিবিরেই কোনও নেতা নেই বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে দলীয় কূটনীতি, ক্ষুরধার বুদ্ধি, সঙ্গে দলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতাই তাঁর মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়কে যে আরও সহজ করে দিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও রবিবারের পরিষদীয় বৈঠকের আগে গতকালই দিল্লিতে ডাক পড়েছিল বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল ও হিমন্ত বিশ্বশর্মার।
কোন রসানে প্রশস্ত হল মুখ্যমন্ত্রীত্বের দরজা ?
সূত্রের খবর, সেখানেও কার্যত কথার ভাঁজেই নাড্ডা-শাহের মন জয় করেন ৫২ বছরের হিমন্ত। আর তখন থেকেই ছিল পাল্লা ভারী। অবশেষে তাতে চূড়ান্ত সিলোমহর পড়ে রবিরারে বৈঠকে। সহজ কথায় সর্বজনমান্যতার জোরেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এদিকে ছাত্রাবস্থাতেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি তাঁর। সেই থেকেই রাজনীতিই যেন তাঁর প্রাত্যহিক জীবনের অন্যতম প্রধান সঙ্গী।
নব্বইয়ের দশকে প্রথম মূল ধারার রাজনীতিতে প্রবেশ
প্রায় গোটা আশির দশক অল অসম স্টুডেন্ট ইউনিয়নের দায়িত্ব সামলেছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। শুরু থেকে কংগ্রেসী রাজনীতির প্রতি একটা ঝোঁকও তৈরি হয় তাঁর। অন্যদিকে নব্বই দশকের মাঝামাঝি মূল ধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। যদিও প্রথম নির্বাচনেই বড়সড় পরাজয়ের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। ১৯৯৬ সালে জালুকবাড়ি কেন্দ্রে হেরে যান এই বরিষ্ঠ রাজনীতিবিদ।
জালুকবাড়ি আসন থেকেই পাঁচবার লড়াই
তবে ২০০১ সাল থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। পর পর তিনবার ঘরের ছেলে হিমন্তকে বরণ করে নেয় জালুকবাড়ি। হ্যাট্রিক করেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। অসমের মন্ত্রিসভায় একাধিক মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। ২০২১ ধরলে হিমন্ত বিশ্বশর্মা জালুকবাড়ি আসন থেকেই লড়াই করেছেন মোট পাঁচ বার। জয়ের স্বাদও পেয়েছেন একাধিকবার।
ছোট থেকেই মেধাবী ছাত্র হিসাবে পরিচিতি ছিল হিমন্তর
অন্যদিকে ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছাত্র হিসাবেই পরিচিতি ছিল তাঁর। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সেরেছেন। আইন নিয়ে পড়েছেন গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়েই। করেন গবেষণাও। অন্যদিকে নতুন শতকের গোড়ায় প্রথমবার জয়ের স্বাদ পেতেই ২০০২ সালে কৃষিমন্ত্রকের দায়িত্ব পান তিনি। ২০০৬ সাল থেকে টানা দুবার সামলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ২০১১ সালে এরই সঙ্গে তাঁকে শিক্ষা ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়। যদিও ২০১৪ সালে তরুণ গগৈয়ের মন্ত্রীসভা ছেড়ে শিবির বদলান তিনি। যোগ দেন বিজেপিতে। এবার সেই বিজেপির হাত ধরেই অসমের মসনদে বসতে চলেছেন এই বর্ষীয়ান নেতা।