টিকার লক্ষ্মণরেখা ভাঙছে ভারতীয় স্ট্রেন? নতুন আশঙ্কার কথা শোনাচ্ছে হু

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে ক্রমশ উন্নততর করে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে কোভিড। লাগাতার অভিযোজনের ফলে আগের থেকেও ভয়াবহ করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলি। আর এর জেরেই যে ভারতের এই দুর্দশা, তা স্পষ্ট জানালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গবেষক সৌম্যা স্বামীনাথন। গত ২৪ ঘন্টায় সকল রেকর্ড ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ৪,০০০ ভারতীয় নাগরিকের। যদিও স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এই হিসাব যে আসল পরিসংখ্যানের তুলনায় কম, সে আশঙ্কার কথা জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিকমহল।

করোনা মোকাবিলায় সমস্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামে শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি, ফের মোদীকে চিঠি মমতার

ভ্যাকসিনের বেড়াজাল পেরোচ্ছে বি.১.৬১৭ স্ট্রেন?

গত অক্টোবরে ভারতে প্রথমবার আবিষ্কৃত হয় করোনার বি.১.৬১৭ স্ট্রেন। বর্তমানে সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী করার পিছনে যে এই স্ট্রেন ও এর অভিযোজিত রূপগুলিরই অবদান রয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হু। যদিও উক্ত ভ্যারিয়েন্টের কিছু রূপবদল যে ভারতে আরও বেশি সংক্রামক হয়ে প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে, সে বিষয়ে আশঙ্কা বাড়ছে গবেষকমহলে। নতুন স্ট্রেনের আক্রমণ যে ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা বলয়ও ভাঙতে পারে, তা আগাম জানিয়েছেন হু বিজ্ঞানীরা।

নব স্ট্রেনের বিরুদ্ধে অচল টিকায় জন্ম নেওয়া অ্যান্টিবডি?

ইতিমধ্যেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ও গ্রেট ব্রিটেনের মত দেশে বি.১.৬১৭ স্ট্রেনকে ভয়াবহতার তালিকায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। হু-ও হাঁটছে একই পথে। হু-র প্রধান গবেষক সৌম্যা স্বামীনাথনের মতে, "বি.১.৬১৭-র বিশেষ অভিযোজনগুলি সংক্রমণের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি টিকাজনিত অ্যান্টিবডিকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম।" যদিও শুধু স্ট্রেনের বাড়াবাড়ি নয়, মানুষের অসচেতনতা ও কোভিড বিধি না মানার জেরেই যে ভারত খাদের কিনারায়, সে কথা জানান সৌম্যা।

সংক্রমণের কারণ কী? নিশানায় মোদীর ভোটপ্রচার!

করোনার প্রথম ঢেউয়ের পর শিকেয় ওঠে কোভিড বিধি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি অন্যান্য রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের লাগাতার ভোটপ্রচারে বাড়ে জমায়েত, ছড়ায় করোনা, মত হু-এর। বর্তমানে যখন বহুগুণে বাড়ছে করোনার প্রকোপ, এমতাবস্থায় শুধুমাত্র টিকাকরণের গতি বাড়িয়ে যে মুশকিল আসান হবে না, সে কথা জানিয়েছেন স্বয়ং ডঃ সৌম্যা। বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন উৎপাদক দেশে এখনও পর্যন্ত টিকাকরণ হয়েছে মাত্র ২%-র, এ বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছে হু!

করোনা বিস্ফোরণে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টরা

ইতিপূর্বে ব্রিটেন, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্টের উপর দোষ দিলেও বর্তমানে দেশে সংক্রমণের কারণ যে দেশীয় স্ট্রেন, তা স্বীকার করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সৌম্যার মতে, "দেশের ১৩৩ কোটি জনসংখ্যার ৭০-৮০% মানুষকে টিকা দিতে হয়তো বছর পার হয়ে যাবে। কিন্তু ততদিনে লাগাতার অভিযোজনে টিকা প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে ভাইরাস। সেই পরিস্থিতি শুধু ভারত না, সমগ্র বিশ্বের জন্যই ভয়াবহ।" ভারতে এহেন জেটগতির সংক্রমণের পিছনে যে দায়ী নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের সমাহার, সে বিষয়ে কেন্দ্রকে সতর্ক করেছেন হু-র প্রধান গবেষক।