সরকারি স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত, চলে গেলেন বসিরহাটের 'ফিনিক্স'

আজ তাঁর ছাত্র - ছাত্রীরা সারা রাজ্য তথা দেশজুড়ে নাম সুনাম অর্জন করেছে বা করছে। কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, আবার কেউবা প্রফেসার বা স্কুল শিক্ষক। সারা দেশজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তার অনুগামী। ছাত্র-ছাত্রীর কাছে তিনি 'ফিনিক্স' হলেও সরকারি খাতায় তিনি পেলেন না যোগ্য সম্মান। বঞ্চিত থেকেই চলে গেলেন পাঁচ দশক ধরে বসিরহাটে ছাত্র গড়ার কারিগর শিক্ষক সুভাষ কুণ্ডু। বার্ধক্য জনিত কারণে বেশ কিছুদিন অসুস্থ থাকার শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বসিরহাটের শিক্ষা জগৎ।

দেশ স্বাধীন হওয়ার ছ'মাস আগে, ১৯৪৭ সালেই বসিরহাটের বড় কালীবাড়ি পাড়ায় জন্ম সুভাষ কুণ্ডুর। বাবা সুধীরকৃষ্ণ কুণ্ডু ছিলেন ব্যবসায়ী। বসিরহাট হাই স্কুল থেকে পড়া শেষ করে বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় বিএসসি অনার্স এবং রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ থেকে এমএসসি করেন। কর্মজীবন শুরু ১৯৬৮ সালে বসিরহাট কলেজে পদার্থবিদ্যার শিক্ষক হিসাবে।

১৯৭১ সালে নকশাল আন্দোলন করার অপরাধে তাঁকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয় দমদম সেন্ট্রাল জেলে। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে আগের জীবনে ফিরে আসেন তিনি। ১৯৭৭ সাল থেকে বসিরহাট হাইস্কুলের পদার্থ বিদ্যার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ২০০৭ সালে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে বাড়িতেই শিক্ষকতা করতেন তিনি।

ছাত্র ছাত্রীদের জন্য বিয়েও করেননি জীবনে। নিজের খরচে বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন এমন এক আধুনিক ল্যাবরেটরি ও লাইব্রেরি, যার কাছে হার মানবে যে কোনও স্কুল-কলেজ। এই '‌ইনস্টিটিউট অফ ফিজিক্সে'‌ পড়তে কোনও পয়সা লাগে না। এ ভাবেই বসিরহাট হাই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক সুভাষ কুণ্ডু হয়ে উঠেছেন এক প্রতিষ্ঠান। বাড়িতে নেই টিভি বা ফ্রিজ।

করোনা পরীক্ষায় রাজ্য ব্যবহার করছে না কেন্দ্রের পরিকাঠামো, ফল আসতে দেরি হওয়া নিয়ে বিস্ফোরক নাইসেড কর্ত্রী

অবসরের পর যা পেনশন মেলে তার সিংহভাগ চলে যায় ছাত্রদের পড়াশুনায়। একান্ন বছর ধরে বিনা পয়সায় ছাত্র পড়াচ্ছেন সুভাষ কুণ্ডু। বিভিন্ন সংগঠনের তরফ থেকে তাঁকে পুরস্কৃত করা হলেও, আজও মেলেনি কোন সরকারি সাহায্য বা স্বীকৃতি।