ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে বাংলায় করোনা সংক্রমণ! এবার আক্রান্ত ব্রাত্য বসু, রয়েছেন হোম আইসোলেশনে

বাংলায় ক্রমশ চোখ রাঙাচ্ছে মারণ করোনা। দৈণিক করোনা সংক্রমণ প্রায় ১৯ হাজার। প্রত্যেকদিনই কার্যত ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্করতম হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, বাংলায় করোনার সংক্রমণ গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটে গিয়েছে। আর ভোটের বাংলাতেই তা ঘটেছে বলে আশঙ্কা। যদিও এখনও সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি এই বিষয়ে।

তবে সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু তাতেও সংক্রমণ হার কমেনি।

করোনা আক্রান্ত ব্রাত্য বসু

ভোট বাংলায় একাধিক রাজনীতিবিদ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তৃণমূল তো বটেই, সমস্ত রাজনৈতিক দলেরই নেতারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এবার করোনায় আক্রান্ত হলেন তৃণমূলের বিধায়ক ব্রাত্য বসু। গত এক মাস ভোট নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। লাগাতার প্রচার সেরেছেন। বিপুল ভোটে জয়ও পেয়েছেন। কিন্তু গত সোমবার থেকে হঠাত করেই অসুস্থ বোধ করেন তিনি। সর্দি, মাথাধরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। ওই দিনই কোভিড পরীক্ষা করান তিনি। মঙ্গলবার রিপোর্ট এলে দেখা যায় সংক্রমিত তিনি। পর থেকেই হোম আইসোলেনশনে রয়েছেন তিনি।

আশঙ্কার কিছু নেই

আক্রান্ত বিধায়ক। খবর সামনে আসার পর থেকেই চিন্তিত ব্রাত্য বসুর অনুগামীরা। তবে চিন্তার কিছু নেই বলে জানা গিয়েছে। বাড়িতই রয়েছেন। সুস্থ আছেন। ইতিমধ্যে ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়েছেন ব্রাত্য বসু। সেই মতো ওষুধও খাচ্ছেন। সুস্থ আছেন বলেই জানা গিয়েছে। উদ্বেগের কিছু নেই বলেই খবর।

শপথ পরে হবে ব্রাত্য বসুর

দমদম থেকে তৃতীয় বারের জন্য বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন ব্রাত্য বসু। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার ৩৩টি আসনে বিজয়ীদের শপথগ্রহ ছিল বিধানসভায়। বাকি ৩২ জন শপথ নিলেও, কোভিড পজিটিভ হওয়ায় ওই দিন শপথ নিতে পারেননি ব্রাত্য। সুস্থ হয়েই তিনি শপথ নেবেন বলে জানিয়েছে তৃণমূল পরিষদীয় দল। এবারও মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন ব্রাত্য বসু। সোমবার নয়া মন্ত্রিসভা গঠন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রে জানা যাচ্ছে এবার হয়তো ফের একবার শিক্ষাদফতরে ব্রাত্য বসুকে ফেরাতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও দীর্ঘদিন তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং পর্যটনের মতো দফতর সামলেছেন তবে এবার অন্য দফতরের দায়িত্ব মমতা তাঁকে দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর।

১৫ দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে

এদিন নবান্নে করোনা মোকাবিলা নিয়ে ফের বৈঠক করেন। আধিকারিকদের নিয়ে এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী ১৫ দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। ভয় দেখাচ্ছি না, সবাইকে সতর্ক করছি।' রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তাঁর আর্জি, 'বাসে দয়া করে ভিড় করবেন না। একটু হয়তো বাড়তি অপেক্ষা করতে হবে। লোকাল ট্রেন বাতিলের ফলে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়বেন জানি, তাই রাজ্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।

করোনা রুখতে একগুচ্ছ ব্যবস্থা মমতার

প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন ডাক্তার থেকে স্বাস্থ্য কর্মীরা। এর ফলে বহু স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই কর্মী সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যে সমস্ত ডাক্তারি পড়ুয়ারা ইন্টার্নশিলপ করছেন তাঁদের কোভিডের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হবে। এমনটাই সিদ্ধান্ত। মমতা বলেন, তাঁরা এর জন্য একটা সরকারি সুবিধা পাবেন। শুধু তাই নয়, এই সিদ্ধান্তে রাজ্যে কর্মী সঙ্কটও মিটবে বলে আশা। মমতা বলেন, এর ফলে ২০০০ ডাক্তার-নার্স বেশি পাব। পাশাপাশি ১.৭০ লক্ষ স্থানীয় ডাক্তারকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা কর্মী নাম দিয়ে জেলাস্তরে কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।