সৌপ্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়: তিনি প্রথম মহিলা ডাক্তার, তাঁর সম্মান পাওয়া উচিৎ ছিল অনেক বেশি। কিন্তু সমাজ মেনে নেয়নি সহজে। পদে পদে এসেছিল বাধা। পেতে হয়েছে বারবনিতা’র গঞ্জনা। ডাক্তারি ডিগ্রি পেতেও মিলেছে বাধা। বারবার ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে অকৃতকার্য করে দেওয়া হয়েছে। শেষে বিদেশে গিয়ে মেলে ডিগ্রি।
সেই সময় ডাক্তার হবার জন্য দরকার পড়ত ‘ব্যাচেলর অব মেডিসিন’ ডিগ্রি। আজ যেমন এমবিবিএস। তখন সেটা ছিল এমবি। এই পরীক্ষায় তাঁকে পাশ করানো হয়নি কাদম্বিনী গাঙ্গুলিকে। সেই সময় চিকিৎসক চন্দ্র মেডিসিন পড়াতেন। মৌখিক পরীক্ষায় তিনি এক নম্বর কম দিয়ে অকৃতকার্য করিয়ে দেন। জেএম কোটস তাঁকে সাহায্য করেন। তাঁর সাহায্যে কাদম্বিনীক পান ‘লাইসেনসিয়েট ইন মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি’। দু’বছর এলএমএস লাইসেনসিয়েট ইন মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি’ পড়েন। এরপর ফের ফাইনাল পরীক্ষা দেন। এবারও সেই একই ঘটনা ঘটে। এবার চিকিৎসক রাজেন্দ্র চন্দ্রের বিষয়ে তাঁকে অকৃতকার্য করে দেওয়া হয়।
এবারও ত্রাতা হন কোটস। কাদম্বিনীকে তিনি নিজে ‘গ্র্যাজুয়েট অফ দ্য মেডিক্যাল কলেজ অব বেঙ্গল’ উপাধি দেন। মেলে ডাক্তার হয়ে প্র্যাকটিসের ছাড়পত্র। ইডেন হাসপাতালে কাজের সুযোগ মেলে। ব্যবস্থা করে দেন জে. এম কোটস।
কিন্তু নেই এমবি ডিগ্রি। তাই নার্স বলে চালানো হত। ডাক্তারদের যে কাজ তা কিছুই করতে দেওয়া হত না। ডিগ্রির জন্য বিদেশ যাত্রা করেন। এডিনবড়ার স্কটিশ কলেজ থেকে এলআরসিপি, এলআরসিএস এবং এলএফপিসি নামক তিনটি ডিপ্লোমা সম্পূর্ণ করেন। ডাফরিন হাসপাতালে চাকরি করতেন। বেতন ছিল তিনশো টাকা। এরপর শুরু করে দেন প্রাইভেট প্র্যাকটিস। পসার জমতে বেশি সময় লাগেনি।।
সূচ কাঁচি নিয়ে যেমন শল্যচিকিৎসায় নিজেকে পারদর্শী করেছিলেন তেমনই সূচিশিল্পেও তাঁর দারুণ হাত ছিল। বিখ্যাত আমেরিকান ইতিহাসবিদ ডেভিড কফ তাঁর সম্বন্ধে লিখেছেন, “গাঙ্গুলির স্ত্রী কাদম্বিনী ছিলেন তাঁর সময়ের সবচেয়ে সফল এবং স্বাধীন ব্রাহ্ম নারী। তৎকালীন বাঙালি সমাজের অন্যান্য ব্রাহ্ম এবং খ্রিস্টান নারীদের চেয়েও তিনি অগ্রবর্তী ছিলেন। সকল বাধার ঊর্ধ্বে উঠে মানুষ হিসেবে নিজেকে জানার তাঁর এই ক্ষমতা তাঁকে সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজে নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলা জনগোষ্ঠীর কাছে অনুপ্রেরণার উৎসে পরিণত করে।”
লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'!
'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের।
কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.