নথি না নিয়েই ধনখড়ের মুখোমুখি মুখ্যসচিব-ডিজি! বৈঠক চলাকালীনই রাজভবনে শুভেন্দুর উপস্থিতি ঘিরে জল্পনা

রাজনৈতিক সংঘর্ষ অব্যাহত। ভোট প্রক্রিয়া মিটে যাওয়ার বেশ কয়েকদিন কেটে গিয়েছে। তৃতীয়বারের জন্যে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেও শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে অশান্তির খবর সামনে আসছে।

এই অবস্থায় রাজ্যের ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিজের চোখে দেখতে বাংলায় এসেছে কেন্দ্রীয় দল। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। অন্যদিকে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল ধনখড়ও।

ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে কার্যত যখন কেন্দ্র রাজ্য সংঘাত সেই সময়ে রাজভবনে গেলেন শুভেন্দু অধিকারী।

শনিবার সাড়ে ছয়টা নাগাদ রাজভবনে যান শুভেন্দু। হঠাত কি কারনে তিনি একা রাজভবনে গেলেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। সন্ত্রাস নিয়ে অভিযোগ জানাতেই কি রাজভবনে গেলেন শুভেন্দু? তা নিয়েও শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।

তবে এদিন যে সময়ে রাজভবনে পৌঁছন শুভেন্দু সেই সময়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক চলছিল রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে। যদিও সেই বৈঠকে শুভেন্দু হাজির ছিলেন কিনা তা জানা যায়নি। তবে এদিন রাজভবনে প্রায় এক ঘন্টা মতো ছিলেন শুভেন্দু।

মনে করা হচ্ছে, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস বাংলা জুড়েই। কিন্তু ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরেই উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম। সেখানে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চলছে। এমনকি মহিলাদের উপরও অত্যাচার চলছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে প্রমান্য নথি কি রাজ্যপালের হাতে এদিন তুলে দিলেন শুভেন্দু!

কারন ইতিমধ্যে রাজ্যপালের কাছে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা, সন্ত্রাস ইস্যুতে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করতেই এদিন রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং মুখাসচিবের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন।

আর সেখানে গিয়েই কি অশান্তি প্রমাণ রাজ্যপালের হাতে তুলে দিয়ে রাজ্যের অস্বস্তি বাড়ালেন? প্রশ্ন রাজনৈতিকমহলে।

অন্যদিকে, রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে শনিবার সেসব রিপোর্ট নিয়ে সন্ধেবেলা রাজভবনে দেখা করতে বলেন ধনকড়। বাস্তবে দেখা গেল, তাঁর তলব পেয়ে রাজভবনে গিয়েছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। কিন্তু তাঁদের কোনও নথি বা রিপোর্টই নেই!

এতে চূড়ান্ত বিরক্ত রাজ্যপাল। পরে টুইট করে তিনি নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, ডিজি এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে কথা হয়েছে দু'পক্ষের মধ্যে। কিন্তু তাতে রাজ্যের সামগ্রিক অশান্তির চিত্র তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়নি বলেই পরবর্তী সময়ে টুইট করে জানিয়েছেন তিনি।

পাশাপাশি নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পৌঁছে গেলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধি দল। শনিবারই বিকেলেই নন্দীগ্রামে পৌঁছেছেন তাঁরা। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের হরিপুর হেলিপ্যাড ময়দানে হেলিকপ্টার থেকে নামেন তাঁরা।

সেখান থেকে নন্দীগ্রামের একাধিক এলাকায় যাবেন তাঁরা। মিলন বাজার, মাধবপুর- সহ নদীর তীর বরাবর গ্রামগুলি ঘুরে দেখবেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। শুভেন্দু অধিকারীর জয়ের পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নন্দীগ্রাম। বিজেপি নেতা-কর্মীদের ঘর বাড়ি ভাঙচুর, মারধরের অভিযোগ নন্দীগ্রামের এক ও দুই নম্বর ওয়ার্ডের একাধিক অঞ্চলে।

সেই সব জায়গাতেই গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা। জানা গিয়েছে, এ দিন তাঁরা নন্দীগ্রামের কেঁদেমারি, বলরামপুর, জলপাই ইত্যাদি গ্রামেও এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। এমনটাই জানা গিয়েছে।