স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা : রাজ্য সরকার আগেই জানিয়েছিল ভুয়ো পোস্ট নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠিক সেটাই হল। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো পোস্ট করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল ২ জনকে। দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতেরা দুই অভিযুক্ত অর্ঘ্য সাহা ও আকাশ মণ্ডল। অর্ঘ্য সাহার বাড়ি সোনারপুরে। সেখানকার নতুনপল্লীর বাসিন্দা সে। অবাক করার মতো ঘটনা এই যে, অর্ঘ্য নামের এই যুবক নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র। সেখানে সে আইটিআই বিভাগে পড়াশোনা করত। পাশাপাশি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সঙ্গেও যুক্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। অপর জন অর্থাৎ আকাশ মন্ডল দেগঙ্গার বাসিন্দা। সে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্র।

বুধবার শপথ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর তিনি নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে নানা নানা বক্তব্যের মাঝে গুরুত্ব পেয়েছিল ভোট পরবর্তী হিংসার বিষয়টি। তিনি সমস্ত রাজনৈতিক দলকেই শান্তিরক্ষার আহ্বান জানান। তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের দায়িত্ব নিয়ে এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  বলেছিলেন, ‘কয়েকটা ঘটনা ঘটেছে। সব সত্য নয়। ভুয়ো ঘটনা দেখাচ্ছে বিজেপি। বিজেপির ভুয়ো ঘটনায় বিশ্বাস করবেন না’। এসপি ও ডিএমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের কোনও ঘটনা সহ্য করব না। দেখতে পাচ্ছি, বিজেপি যেখানে জিতেছে সেখানে বেশি অত্যাচার হচ্ছে’। তারপর আজ থেমে গ্রেফতার করা হল দু’জনকে। মামলাও রুজু করা হয়েছে এদের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি, সাংবাদিককে শীতলকুচির মৃত দলীয় কর্মী বলে চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্বে। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখা তাদের ফেসবুক ও টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে। সেখানে ইন্ডিয়া টুডে’র সাংবাদিক অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিকে শীতলকুচিতে নিহত পার্টি কর্মী মানিক মৈত্রের বলে দাবি করে।

বিজেপির অভিযোগ ছিল ভোটের ফলাফলের পর মানিক মৈত্র নামে এক কর্মীকে হত্যা করেছে তৃণমূল। ঘটনা তিন তারিখের। তাঁর নাম নিয়ে ওই সাংবাদিকের ছবি দিয়ে ভিডিও পোস্ট করে বিজেপি। সেই ভিডিও দেখেন অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। তিনি তাঁর সোশাল মাধ্যমে পোস্ট করে জানান, ‘আমি মানিক মৈত্র নয়, এই ভিডিওর ক্যাপশনে সেটা বলা হয়েছে। আমি জীবিত এবং সুস্থ আছি।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমি শীতলকুচি থেকে ১,৩০০ কিলোমিটার দূরে বহাল তবিয়তে আছি। বিজেপির আইটি সেল এখন দাবি করছে যে আমি মানিক মৈত্র এবং আমি শীতলকুচিতে মারা গিয়েছি। দয়া করে এই ভুয়ো পোস্টগুলিকে বিশ্বাস করবেন না আর দুশ্চিন্তাও করবেন না। আমি আবার বলছি, আমি এখনও জীবিত।” ঘটনা হল গতকাল সকাল বেলা উঠে ওই সাংবাদিক দেখেন যে তাঁর কাছে ১০০টি’র বেশি ফোন এসেছে। রাতে সে ঘুমানোর জন্য সে ফোন ধরতে পারেনি। এত মিস কল দেখে সে চমকে যায়। এরপর তার আরও এক সহকর্মী তাকে ফের ফোন করে বিষয়টি জানান। তারপরেই ভিডিও নিয়ে ওই পোস্টটি করেন সাংবাদিক।

লাল-নীল-গেরুয়া...! 'রঙ' ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা 'খাচ্ছে'? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম 'সংবাদ'! 'ব্রেকিং' আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে 'রঙ' লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে 'ফেক' তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই 'ফ্রি' নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।.