করোনার থাবায় আইপিএলে শেষের কয়েক ঘণ্টার অভিজ্ঞতা জানালেন ক্রিস মরিস

জৈব সুরক্ষা বলয় ভেদ করে কীভাবে করোনা থাবা বসাল আইপিএলের চারটি দলে, তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই। আইপিএল স্থগিত হয়ে গিয়েছে। ভারতে আর আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। টি ২০ বিশ্বকাপের আগে বা পরে বাকি ম্যাচগুলি হতে পারে। যদিও দেশে ফিরে স্বস্তিতে বিদেশি ক্রিকেটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররাও দেশে ফিরে নিভৃতবাসে রয়েছেন। তারই মধ্যে আইপিএলের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার ক্রিস মরিস জানিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা।

অ্যালার্ম বেল বেজেছিল

প্রথমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বরুণ চক্রবর্তী ও সন্দীপ ওয়ারিয়র। তারপর চেন্নাই সুপার কিংসের লক্ষীপতি বালাজি, এক বাসকর্মী ও পরে মাইক হাসি। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঋদ্ধিমান সাহা। দিল্লি ক্যাপিটালসের অমিত মিশ্র। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই এতজন ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরেই আইপিএলে অ্যালার্ম বেজে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন ক্রিস মরিস। দেশে ফিরে স্বস্তিতে রয়েছেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, বলতে দ্বিধা নেই এই খবরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। কেকেআরে যখনই ক্রিকেটারদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাই, তখনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল কীভাবে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকেও আক্রান্ত হচ্ছেন ক্রিকেটাররা?

(ছবি- বিসিসিআই/আইপিএল)

যখন অনিশ্চয়তায় আইপিএল

মরিস জানান, ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর যখন সোমবারের কেকেআর ও আরসিবি ম্যাচ স্থগিত রাখা হলো, তখনই বুঝে যাই টুর্নামেন্ট চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। এরপর দলের চিকিৎসক ও হেড কোচ কুমার সাঙ্গাকারার সঙ্গে কথা বলেই নিশ্চিত হয়ে যাই আর কোনও ম্যাচ হচ্ছে না। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের মধ্যেই প্যানিক বেশি ছড়িয়েছিল বলেও জানান মরিস। বছর কুড়ির জেরাল্ড কোয়েটজি, যিনি অ্যান্ড্রু টাইয়ের পরিবর্ত হিসেবে আগের সপ্তাহেই ভারতে পৌঁছান, তিনিও পরিস্থিতি দেখে একটু ভয় পেয়েছিলেন। তবে তাঁকেও আশ্বস্ত করেন মরিস।

(ছবি- বিসিসিআই/আইপিএল)

আইপিএলের অভিজ্ঞতা

ক্রিস মরিস স্বীকার করে নিয়েছেন এমন অভিজ্ঞতার সাক্ষী তিনি আগে কখনও হননি। তাঁর কথায়, নিঃসন্দেহে দুই বিপরীতধর্মী অভিজ্ঞতা হলো। একদিকে আমরা জৈব সুরক্ষা বলয়ে ভালোই ছিলাম, সকলের মুখেই হাসি ছিল। রাজস্থান রয়্যালস কর্তৃপক্ষ আমাদের জন্য ভালো বন্দোবস্ত করেছিলেন। তবে একদিকে যখন আমরা খেলছি, নিজেদের মধ্যে মজা করছি, তখন বাইরে বহু মানুষের করোনা পরিস্থিতিতে যন্ত্রণা, দুর্ভোগের বিষয়টাও আমাদের ছুঁয়ে গিয়েছে। আমরা দলগতভাবে যেভাবে খেলেছি তা প্রত্যাশিত না হলেও এটাও ঠিক, আমাদের খেলা দেখতে মানুষ ঘরে থেকেছেন। ক্রিকেট উপভোগ করেছেন। ভারতের করোনা পরিস্থিতিতে ওই সময়টুকুর জন্য তাঁরা ক্রিকেট দেখে কিছুটা আনন্দ করার সুযোগ পেয়েছেন।

(ছবি- বিসিসিআই/আইপিএল)

ব্যবস্থাপনায় খুশি স্মিথ

দক্ষিণ আফ্রিকার ডিরেক্টর অব ক্রিকেট তথা প্রাক্তন প্রোটিয়া অধিনায়ক গ্রেম স্মিথ জানিয়েছেন, আমাদের দেশের ক্রিকেটাররা আইপিএলের জৈব সুরক্ষা বলয় নিয়ে সন্তুষ্ট। এই ব্যবস্থা সব সময় ফুল প্রুফ হয় না ঠিকই, তবু বিসিসিআই যে ব্যবস্থা করেছিল এবং বিশেষ করে আইপিএল শেষের পর যেভাবে ক্রিকেটারদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন তা দৃষ্টান্তমূলক। আমাদের দেশে ফেরার বিমান চলাচল করায় এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ না হওয়ায় সুবিধা হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রতি ক্ষোভ উগড়ে স্মিথ বলেন, ভারতের মতো এমন সংক্রমণ না থাকলেও আমরা ১৫-১৬টি জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করেছিলাম। তা সত্ত্বেও আমাদের দেশে অস্ট্রেলিয়া আসেনি। অথচ ভারতে এমন পরিস্থিতিতেও আইপিএল খেলতে গিয়ে ক্রিকেটাররা চুপ করে বসে আছেন। এতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার দ্বিচারিতাই প্রমাণিত।

(ছবি- বিসিসিআই/আইপিএল)