২৪ ঘন্টায় বাংলায় রেকর্ড মৃত্যু, ফের ১৮ হাজার ছাড়াল বাংলায় করোনার সংক্রমণ
গোটা দেশে ভয়াবহ হচ্ছে করোনার সংক্রমণ। প্রত্যেকদিনই দেশজুড়ে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও। দেশের পাশাপাশি রাজ্যেও করোনার চোখ রাঙানি। একদিকে ভয়ঙ্কর করোনার সংক্রমণ।

অন্যদিকে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা দেখে আতঙ্ক বাড়ছে চিকিৎসকদের। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, প্রত্যেকদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখনই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে তৃতীয় ওয়েভ আসলে কি পরিস্থিতি হবে সেটা নিয়েই চিন্তার ভাঁজ পড়ছে কপালে।

রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু
রোজই দৈনিক আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা ভাঙছে। বৃহস্পতিবার নতুন করে রাজ্যে ১১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা সর্বকালীন রেকর্ড। সরকারি হিসেবে একদিনে এতগুলি মৃত্যু আগে কখই হয়নি রাজ্যে। বাংলায় মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজারের কাছাকাছি। মোট মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ৯৬৪।

ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যাও
স্বাস্থ্য দফতরে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ হাজার ৪৩১। গত ২৪ ঘন্টায় রেকর্ড সগক্রমণ আক্রামণ। এই মুহূর্তে অ্যাকটিভ করোনা রোগী ১ লক্ষ ২২ হাজার ৭৭৪ জন। করোনার দাপট সবচেয়ে বেশি উত্তর ২৪ পরগনায়। একদিনে এখানে সংক্রমিত হয়েছে ৩৯২২জন, মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জন। তারপরই রয়েছে কলকাতা। শহরে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৮৮৭ জন। কলকাতায় একদিনে ৩৩ জন এবং উত্তর ২৪ পরগনার ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা আক্রান্ত হয়ে। এই সংখ্যা রীতিমত ভয় ধরাচ্ছে।

স্বস্তি দিচ্ছে সংক্রমণের হার
করোনা আক্রান্তের মধ্যেও স্বস্তির খবর। একদিকে রেকর্ড সংখ্যায় মানুষ করোনা আক্রান্ত হলেও সুস্থও হচ্ছেন অনেকে। সুস্থ হয়ে একদিনে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ হাজার ৪১২ জন মানুষ। বুলেটিন বলছে নিয়ে সুস্থতার হার ৮৫.৫৯ শতাংশ। সংক্রমণ বৃদ্ধির মাঝে অবশ্য একটাই সুখবর। সুস্থতার হারও বাড়ল। এনিয়ে রাজ্যে মোট সুস্থতার সংখ্যা ৮ লক্ষ ৩২৮ জন। যা কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে চিকিৎসকদের।

১৫ দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে
আজ বৃহস্পতিবার নবান্নে করোনা মোকাবিলা নিয়ে ফের বৈঠক করেন। আধিকারিকদের নিয়ে এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী ১৫ দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। ভয় দেখাচ্ছি না, সবাইকে সতর্ক করছি।' রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তাঁর আর্জি, 'বাসে দয়া করে ভিড় করবেন না। একটু হয়তো বাড়তি অপেক্ষা করতে হবে। লোকাল ট্রেন বাতিলের ফলে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়বেন জানি, তাই রাজ্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।

ঢেলে সাজানো হচ্ছে পরিকাঠামো
প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন ডাক্তার থেকে স্বাস্থ্য কর্মীরা। এর ফলে বহু স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই কর্মী সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যে সমস্ত ডাক্তারি পড়ুয়ারা ইন্টার্নশিলপ করছেন তাঁদের কোভিডের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হবে। এমনটাই সিদ্ধান্ত। মমতা বলেন, তাঁরা এর জন্য একটা সরকারি সুবিধা পাবেন। শুধু তাই নয়, এই সিদ্ধান্তে রাজ্যে কর্মী সঙ্কটও মিটবে বলে আশা। মমতা বলেন, এর ফলে ২০০০ ডাক্তার-নার্স বেশি পাব। পাশাপাশি ১.৭০ লক্ষ স্থানীয় ডাক্তারকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা কর্মী নাম দিয়ে জেলাস্তরে কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।