শপথ নিলেন নবনির্বাচিত বিধায়করা, মানুষের জন্যে কাজই হবে প্রধান লক্ষ্য বলে দাবি হিরন-অশোকের

বুধবারই তৃতীয়বারের জন্যে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড পরিস্থিতিতে খুব ছোট করেই অনুষ্ঠান করা হয়। আগেই ঠিক ছিল যে দুদিন বিধানসভা খোলা হবে। সেখানে বিধায়কদের শপথ বাক্য পাঠ করাও হবে। সেই মতো বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সাজো সাজো রব বিধানসভায়। সাজিয়ে তোলা হয়েছে বিধানসভা চত্বর। সকাল থেকেই একের পর এক নব নির্বাচিত বিধায়করা আসতে শুরু করেন। তাঁদের শপথ বাক্য পাঠ করান প্রোটেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায় ।

বিধায়ক পদে শপথ নিলেন ১২ তারকা

বাংলায় সবুজ ঝড় বয়ে গিয়েছে। ২৯২টা আসনের মধ্যে ২১৩টাই পেয়েছে তৃণমূল। অর্থাৎ বাংলা বুঝিয়ে দিয়েছে যে সে তার নিজের মেয়েকেই চায়। বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন তৃণমূলের রাজ চক্রবর্তী, লাভলি মৈত্র, অদিতি মুন্সি, কাঞ্চন মল্লিক, সোহম চক্রবর্তী, জুন মালিয়া, বীরবাহা হাঁসদা, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, মনোজ তিওয়ারি ও বিদেশ বসু। এঁদের মধ্যে চিরঞ্জিত ছাড়া বাকি সবাই প্রথম বারের জন্য বিধায়ক পদে শপথ নিলেন। অন্য দিকে বিজেপি-র ২ তারকা হিরণ চট্টোপাধ্যায় ও অশোক ডিন্ডাও এদিন শপথ নিয়েছেন। সবাইকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন প্রোটেম স্পিকার সুব্রত মুখোপাধ্যায়।

তারকারা ছাড়া ও শপথ নিয়েছেন বর্ষীয়ান বিধায়করাও

আজ মোট ১৪০ জনের শপথগ্রহণ ছিল। তার মধ্যে প্রথমার্ধে (বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা) কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৭৪ জন শপথ নেন। দ্বিতীয়ার্ধে (দুপুর ২টো থেকে ৪টে) হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের ৬৯ জন শপথ নিয়েছেন। নবীন-প্রবীন মিশিয়ে এবারের বিধানসভা। একদিকে রয়েছেন তারকারা অন্যদিকে রয়েছেন বর্ষীয়ান বিধায়করাও। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অতীন ঘোষ, শশী পাঁজা, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্র-সহ একাধিক হেভিওয়েট। তবে এবার অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন মদন মিত্র। তিনি জানিয়েছেন, আবার বিধায়ক হিসাবে ফিরে আসা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ফেসভ্যালু আছে বলেই মানুষ জিতেয়েছে। মানুষের জন্যে কাজ করব। অন্যদিকে বিধায়কদেরও প্রথম লক্ষ্য কোভিড মোকাবিলা। ফল ঘোষণার পরই কাঞ্চন মল্লিক, লাভলি মৈত্র, অদিতি মুন্সি জানিয়েছিলেন, এখন প্রধান কাজ, মানুষের পাশে থেকে, সকলের মাঝে মিশে মারণ ভাইরাসকে পরাস্ত করা। এমনকি খোদ মমতাও দায়িত্ব নেওয়ার পরেই কোভিড নিয়ে বৈঠক করেছেন। একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

শুক্রবারও হবে শপথ গ্রহণ

শুক্রবার প্রথমার্ধে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও নদিয়ার ৭৪ জন এবং দ্বিতীয়ার্ধে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ ও মালদহের ৭৪ জন শপথ নেবেন।

শনিবার থেকে বসছে নতুন বিধানসভা

শনিবার থেকে বসছে নতুন বিধানসভা। ব্যতিক্রমিভাবেই শনিবার থেকে বিধানসভা শুরু হচ্ছে। কারণ শনিবার ছুটি থাকে। কিন্তু অষ্টাদশ বিধানসভার প্রথম অধিবেশন বসবে শনিবারই। সরকারের তরফে সব বিধায়কদের হাজির থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপিরও বিধায়করাও অধিবেশনে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, একুশের নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারীর জয় নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিরোধী দলনেতা হিসাবে তাঁকেই প্রজেক্ট করতে চাইছে বিজেপি। এই নিয়ে বিজেপির রাজ্য দফতরে জোর আলোচনা চলছে। বিধানসভায় একমাত্র বিরোধী দল তারাই। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলের নেতা কে হবেন?‌ তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল বঙ্গ-বিজেপির অন্দরে। সেখানে মোটামুটিভাবে শুভেন্দুর নামটিই আপাতত চূড়ান্ত হয়েছে বলে খবর। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও খুব একটা আপত্তি করেনি বলেই সূত্রের খবর।

বাংলায় হারের কারণ অনুসন্ধান অমিত শাহের, উঠে আসছে যেসব কারণ

শপথ নেন মমতা

একদিকে তৃণমূলের ল্যান্ডস্লাইড ভিকট্রি। অন্যদিকে বেসামাল করোনা পরিস্থিতি। এ দু'য়ের মাঝেই বুধবার তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবনের থ্রোনরুমে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তবে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়েছেন অনাড়ম্বর ও সংক্ষিপ্ত। খুব অল্প কয়েকজনকে নিয়েই হয় এই অনুষ্ঠান। বুধবার একাই শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকিরা নেবেন রবিবার। রবীন্দ্রসদনে হবে মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ।