ভোট শেষ হতেই রাজ্য পুলিশে রদবদল, ডিজির দায়িত্বে ফের বীরেন্দ্র, আইনশৃঙ্খলায় জাভেদ শামিম

রাজ্যে ভোট চলায় ৩ মাস আমার হাতে ক্ষমতা ছিল না। সকলকে বলব, শান্তি, শৃঙ্খলা এবং সংহতি বজায় রাখুন। ভোটের পর কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে। আজ থেকে আইনশৃঙ্খলা আমার হাতে। কঠোর হাতে এই অশান্তির মোকাবিলা করব। ফিরে গিয়ে যেখানে যেখানে যাদের পোস্টিং করার করব। রাজভবনে রাজ্যপাল ধনকড়কে এমনটাই কথা দিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নবান্নে ফিরতেই রাখলেন সে কথা। বিধানসভা ভোট শেষ হতেই রাজ্য পুলিশে বড়সড় রদবদল করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরানো পদে পুলিশ আধিকারিকদের ফেরালেন তিনি।

ডিজির দায়িত্বে এলেন বীরেন্দ্র

ফের রাজ্যের ডিজির দায়িত্বে এলেন বীরেন্দ্র। নবান্নে বৈঠক শেষে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, আট দফায় ভোট চলাকালীন একাধিকবার রাজ্য পুলিশে রদবদল করেছে নির্বাচন কমিশন। একাধিক জেলার এসপি, ওসি, আইসিকে বদল করে কমিশন। সেই মতো কলকাতার ভোটের আগে রাজ্যে পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে সরায় নির্বাচন কমশন। তাঁর জায়গায় দায়িত্বভার হাতে নেন নীরজনয়ন। নির্বাচনের কোনও দায়িত্বে থাকতে পারবেন না বীরেন্দ্র। এমন মর্মে নির্দেশিকাও জারি করে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে প্রকাশ্যে ক্ষোভও প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের সঙ্গে কথা না বলেই কমিশন যা ইচ্ছা করছে বলেও সে সময় অভিযোগ করা হয় তৃণমূলের তরফে।

এডিজি, আইনশৃঙ্খলাতে ফিরলেন জাভেদ শামিম

এডিজি, আইনশৃঙ্খলাতে ফিরলেন জাভেদ শামিমও। নবান্নে বৈঠক শেষে এমনটাই ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট শুরু হতেই এডিজি- আইনশৃঙ্খলা পদ থেকে জাভেদ শামিমকে সরায় নির্বাচন কমিশন। তাঁর জায়গায় ওই পদে দায়িত্ব দেওয়া হয় দমকলের ডিজি জগমোহনকে। দমকলের ডিজি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় জাভেদ শামিমকে। ভোট শেষ হতেই জাভেদকে তাঁর পুরানো পদেই তাঁকে ফেরালেন মুখ্যমন্ত্রী।

পুলিশ সুপারদের আরও কড়া হওয়ার নির্দেশ

রাজ্যের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা নিয়েও কড়া বার্তা দিলেন মমতা। আর এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি দুষলেন নির্বাচন কমিশনকে। পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন, আর কোনওরকম অশান্তি মেনে নেওয়া হবে না। এজন্য জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের আরও কড়া হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "প্রত্যেক এসপি এবং জেলাশাসককে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, কোনও রকম অশান্তির ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। যে জায়গাগুলিতে বিজেপি জিতেছে, সেই জায়গাগুলিতেই অত্যাচার করা হচ্ছে। গত তিনমাস ধরে এইধরনের ঘটনা ঘটে আসছিল। আর এতদিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই সময় সমস্ত কিছু নির্বাচন কমিশনের হাতে ছিল। তবে কিছু কিছু মিথ্যেও খবরও ছড়ানো হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। আগের ঘটনা এখনকার বলে চালিয়ে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। এগুলিতে একদম বিশ্বাস করবেন না। তবে কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনাও ঘটেছে এই সময়। প্রত্যেকটি দলের কাছে আবেদন করব এবার এগুলো বন্ধ করুন। নির্বাচনেও অনেক অত্যাচার করেছেন আপনারা। এবার এই অত্যাচার করা বন্ধ করুন। আইন কিন্তু আইনের পথে চলবে। বাংলায় হিংসার কোনও জায়গা নেই। বাংলা সংহতি, সম্প্রীতি, সংস্কৃতির জায়গা।"

আরও কয়েকটি পদে রদবদলের সম্ভাবনা

আরও বেশ কয়েকট পদে রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। নবান্নে সূত্রের খবর, যে পদে যেখানে যিনি ছিলেন তাদের সেখানেই ফিরিয়ে দেওয়া হবে। বেশ কয়েকজন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। ভোটের পর থেকে পুলিশ প্রশাসনের একাংশ বিজেপির হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ তোলেন। সরাসরি কোচবিহারের এসপির বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনেন। এমনকি পড়ে দেখে নেবেন বলেও জানান। ফলে পুলিশ প্রশাসনে একগুচ্ছ আরও ব্যবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিতে পারে বলে জল্পনা।